সীমান্তে হত্যা বন্ধে আমরণ অনশনে জাবি শিক্ষার্থী

নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ২৬, ২০২০, ০৭:৩৭ পিএম

ঢাকা : সীমান্তে হত্যা বন্ধ ও বিচারের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। আরিফুল ইসলাম আদিব নামের এই শিক্ষার্থী পাশপাশি চার দফা দাবিও জানিয়েছেন।

তার দা‌বিগু‌লো হচ্ছে :

১) ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে সকল হত্যার আন্তর্জাতিক আইনে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।

২) ভারতকে সীমান্ত হত্যার জন্য ক্ষমা চেয়ে আর হত্যা না করার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।

৩) সীমান্ত হত্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সকল পরিবারকে তদন্ত সাপেক্ষে দুই দেশের যৌথভাবে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

৪) বাংলাদেশের সংসদে সীমান্তে হত্যার প্রতিবাদ করে নিন্দা জানাতে হবে।

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শনিবার (২৫ জানুয়ারি) থেকে অনশনে বসেন আরিফুল ইসলাম আদিব নামে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী ।

রবিবার (২৬ জানুয়ারি) বি‌কে‌লে আরিফুল ইসলাম আদীব ব‌লেন, ‘সীমান্তে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করছে 'বন্ধু' রাষ্ট্র ভারত। আমি মানুষ শব্দটি উল্লেখ করলাম এই জন্য যে, মানুষ হত্যা করেছে এই অনুভূতিটা এখন আর আমাদের মাঝে নেই। আমরা প্রতিদিন ধর্ষণ করে হত্যা, নির্যাতনে হত্যা, ক্রসফায়ারে হত্যা, বোমা মেরে হত্যা শুনতে শুনতে একেবারে অনুভূতিহীন হয়ে গেছি। এই অনুভূতিটা আবার জেগে ওঠে যখন নিজের বাবা-মা কিংবা ভাই-বোন হয়।’

গত দশ বছরে ২০১০ সাল থেকে ২০১৯ সালে সীমান্তে ভারত ৩০০ মানুষ হত্যা করেছে। ২০১৯ সালে এই সংখ্যাটা ছিল ৪৬। আর ২০২০ সালে মাত্র ২৩ দিনেই হত্যা করেছে ১৫ জন। ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে সীমান্তে হত্যা তিনগুণ। আর এভাবে চলতে থাকলে ২০২০ সালে সংখ্যাটা ৪০০ ও ছাড়াতে পারে। কিছুদিন আগে নিউজে দেখলাম ১১ বছর আগে বাবাকে মেরেছে বিএসএফ এবার মারলো ছেলেকে। যোগ করেন আদীব।

তিনি আরো বলেন, ‘একবার চিন্তা করেছেন এই আমরাই ১৯৫২ সালে ভাষার জন্য সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, ৪ জনের হত্যার প্রতিবাদে পুরো দেশ বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে মায়ের ভাষার জন্য লড়াই করেছি।

আর সেই আমরাই ২০২০ সালে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে এসেও কি রকম চেতনাহীন হয়ে গেছি। বলি কি ভাই, আসুন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা শুধু ১৬ ডিসেম্বর আর ২৬ মার্চ এর জন্য রেখে না দিয়ে হৃদয়ে অনুভব করি। এভাবে চলতে দেয়া যায়না। এভাবে চলতে পারে না। পাশের দেশ নেপালও দেখিয়ে দিয়েছে কিভাবে একজন মানুষকে মারলে তার প্রতিবাদ করতে হয়। এবার জেগে ওঠুন, প্রতিবাদ করুন। কত সময় নানা কাজে ব্যয় করেন। দশটা মিনিট দেশের জন্য প্রতিবাদ করুন। রাস্তায় নেমে আসুন। আর শিক্ষার্থী ভাইদের বলি কত সময় আড্ডায়, ফোনে গেম খেলে নষ্ট করেন। এবার একটু বাস্তব জীবনে খেলুন না। ভাইয়ের জন্য দাঁড়ান, দেশের জন্য দাঁড়ান।  আর কোন হত্যা নয়, এবার হবে প্রতিবাদ।

আগামীনিউজ/আরআর/এস