কুলার আয়েই চলে সংসার

নরসিংদী প্রতিনিধি  জানুয়ারি ১২, ২০২০, ০২:৫৮ পিএম

নরসিংদী : জেলার পলাশ উপজেলার জিনারদী ইউনিয়নের চরপাড়ায় শতাধিক পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস হচ্ছে কুলা তৈরি করা। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া থেকে শুরু করে সংসারের সব খরচের টাকা আসে এই কুলা বিক্রি করে।

এখানকার বেশিরভাগ নারীই সংসারের কাজের ফাঁকে যখনই সময় পাচ্ছেন, তখনই সময় ব্যয় করছেন কুলা তৈরির কাজে। বাড়ির বউ-মেয়ে থেকে শুরু করে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা সময় দিচ্ছেন এ কাজে। গৃহকর্তারা বাজার থেকে বাঁশ সংগ্রহ করে, তা শলাকা করে দিচ্ছেন আর সেই শলাকা দিয়ে নিপুণভাবে গৃহিণীরা তৈরি করে যাচ্ছেন কুলা।

এখানকার গৃহিণীরা জানান, বংশানুক্রমে এই কাজ করেন তারা। এই গ্রামের শতাধিক পরিবার এ পেশায় জড়িত। তারা দিনে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা সময় ব্যয় করে কুলা তৈরির কাজে।

একটি বড় আকারের বাঁশ থেকে ৪০টি কুলা তৈরি করা যায়। আর ৪০টি কুলা তৈরি করতে ৫ থেকে ৬ দিন সময় লাগে। এরপর একসঙ্গে সব জমিয়ে তা বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করা হয়। আবার কোনো কোনো মৌসুমে বাড়ি থেকেই বেপারিরা কুলা কিনে নিয়ে যান। প্রতিটি কুলা বিক্রি হয় ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে। সপ্তাহ শেষে এক-একটি পরিবার প্রায় ৩ হাজার টাকার মতো কুলা বিক্রি করতে পারে। চৈত্র মাসের সময় কুলার বেপারিরা এলাকায় এসে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে এগুলো সংগ্রহ করে নিয়ে যান। তখন একটু বেশি দামও পাওয়া যায়।

এছাড়া বছরের বাকি সময়টাতে হাট-বাজারে গিয়ে কুলা বিক্রি করতে হয়। সরকারি প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহযোগিতা পেলে বাঁশের তৈরি বিভিন্ন দৃষ্টিনন্দন সামগ্রী তৈরি করতে পারবে বলে জানিয়েছেন এ পেশায় জড়িতরা।

এ প্রসঙ্গে জিনারদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম গাজী বলেন, গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী কুলা তৈরির কাজ এ অঞ্চলের শতাধিক পরিবার ধরে রেখেছে।

আগামী নিউজ/এমআর/এনএনআর