ঈদ মৌসুমে শতকোটি টাকার ক্ষতি 

কুয়াকাটায় লকডাউনে পর্যটন শিল্পে ধস

রাসেল কবির মুরাদ, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি মে ২৪, ২০২১, ০৯:২০ পিএম
ছবি: আগামী নিউজ

পটুয়াখালীঃ বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস সংক্রমন রোধে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অনির্দ্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষনা করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় পযটক শূন্যতায় চলছে সুনশান নিরবতা। পর্যটন নির্ভর কুয়াকাটার বানিজ্যিক কাযর্ক্রম স্থবির হয়ে পড়ায় ক্ষতির মূখে পড়েছে শত কোটি টাকার । কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হোটেল মোটেল ,রেস্ট হাউস, গেস্ট হাউস থেকে শুরু করে খাবার হোটেল,রেস্তোরা, চা দোকান, ফুচকা বিক্রেতা, ঝিনুকের দোকান, শুটকি পল্লী, ফ্রাই পল্লীসহ পযটন নির্ভর সকল দোকানে ঝুলছে তালা। সৈকতজুড়ে ফটোগ্রাফারদের দেখা নেই, ট্যুরিস্ট বোট, স্পিড বোট, ওয়াটার বাইকগুলো পড়ে আছে সমুদ্রের বালিয়াড়িতে।  ছাতা-বেঞ্চীগুলো যেখানে-সেখানে স্তুপ করে রাখা হয়েছে।

কুয়াকাটার পর্যটন ব্যবসায়ী জানিয়েছে, প্রতি বছর ঈদ পরবর্তী সময় লক্ষ পর্যটকের আগমন ঘটে। আমাদের ব্যস্ততাও যায় বেড়ে। বেচা বিক্রির ধুম পড়ে। দম ফালানোর ফুসরত থাকেনা। সৈকত জুড়ে পর্যটকদের হৈ-হুল্লোরে মূখর থাকে। এবারে পযর্টকের আগমনে নিষেধাজ্ঞা থাকায় গোটা সৈকত পর্যটক শূণ্য। স্থানীয় কিছু পযর্টকের আনাগোনা থাকলেও ট্যুরিস্ট পুলিশ ও স্থানীয় পুলিশের বাধার মুখে ফেরত যেতে বাধ্য হয়েছে। 

ব্যবসায়িরা আরো জানায়, লকডাউনের কারনে হোটেল-মোটেল গুলো বন্ধ থাকায় অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে এ পেশার সাথে যুক্ত প্রায় ৫ হাজারো বেশি মানুষের জীবন-জীবিকা। বিকল্প কর্মসংস্থানও খুজে পাচ্ছেনা। গত  ১লা এপ্রিল থেকে বন্ধ রয়েছে পযটন কেন্দ্র কুয়াকাটার সকল ব্যবসা বানিজ্য। উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম অর্থ সংকটে ভূগছে পযটন নির্ভর সকল পেশাজীবীরা। প্রতিবছর ঈদের সময় লাখ পযর্টকের পদচারনায় মূখর থাকে কুয়াকাটার দর্শনীয় স্থানগুলো। এবারে  চিত্র সম্পুর্ন উল্টো ।

কুয়াকাটার আভিজাত আবাসিক হোটেল খাঁন প্যালেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: রাসেল খাঁন জানান, প্রতিবার ঈদে আমাদের হোটেলটি শতভাগ রিজার্ভ থাকে সেখানে গত দুই মাস ধরে হোটেলটি পুরো বন্ধ রয়েছে।  ঈদ মৌসুমে কমপক্ষে ৩০ লক্ষ টাকার ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছি।

কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক মোতালেব শরীফ জানান, প্রথম লকডাইনের ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই দ্বিতীয় ঢেউয়ে আবার ক্ষতির মুখে গোটা পযটন নির্ভর ব্যবসায়ীরা। প্রতিবার ঈদের মৌসুমে লাভের মুখে থাকলেও এবারে যে ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছি তা কবে কাটিয়ে উঠতে পারবো তা জানিনা। এবারে শুধু মাত্র ঈদ মৌসুমেই শত কোটি টাকারও বেশি আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। তারা পযর্টনের নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।