একটি অর্ধগলিত লাশ ও পুলিশের সফল তদন্ত

ডিসেম্বর ১৩, ২০১৯, ১০:২০ পিএম
ফাইল ছবি

কাজলার বাবা মোবারক হোসেন পেশায় ব্যবসায়ী। বয়সটা ৬০ পেরিয়েছে।  নিরীহ, নির্বিবাদী মানুষ তিনি। হঠাৎ করেই গত ২৮ নভেম্বর থেকে নিখোঁজ তিনি। চারিদিকে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও সন্ধান নেই তার। এরপর মেয়ে কাজলা পারভীন নওগাঁ সদর থানায় নিখোঁজ জিডি করেন।  

এরপর গত ৪ ডিসেম্বর দুপুরে আত্রাই নদীতে একটি অর্ধগলিত লাশ ভাসছে বলে জানতে পারে মান্দা থানা পুলিশ। লাশটি উদ্ধারের পর তার পরিচয় জানতে আশপাশের থানাগুলোতে খবর পাঠানো হয়। পরের দিন মেয়ে কাজলা পারভীন লাশের গায়ের জামা, প্যান্ট, বেল্ট দেখে লাশটি তার বাবার বলে সনাক্ত করেন। 

লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মেয়ে কাজলা বাদী হয় মান্দা থানায় হত্যা মামলা করেন। জায়গা-জমি নিয়ে পূর্ববিরোধ রয়েছে এমন কয়েকজনকে সেই হত্যা মামলায় তিনি আসামী হিসেবে উল্লেখ করে এজাহার দেন। 

মামলার পরই তদন্তে নামে পুলিশ। শুরুতে এজাহারনামীয় আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু সার্বিক বিবেচনায় পুলিশের মনে হয় তদন্ত যথাযথ মোটিভে নেই। তখন ভিকটিম মোবারক হোসেনের মোবাইল ফোনের কল রেকর্ডে নজর দেওয়া হয়। 

কল রেকর্ড পর্যালোচনায় জানা যায়, নিখোঁজ হওয়ার আগে মোবারক একটি মোবাইল নম্বরে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করেন। সেই নম্বরের অনুসরণ করে আঙ্গুরি বেগম নামের এক নারীকে গ্রেফতার করা হয়। 

সেই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গত ২৭ নভেম্বর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মোবারক হোসেনের সাথে তার পরিচয় হয়। পরদিন উভয়ের সম্মতির ভিত্তিতে অনৈতিক এক উদ্দেশ্য নিয়ে মোবারক হোসেন মহাদেবপুরে আঙ্গুরি বেগমের বাসায় চলে আসেন। এরপর মোবারক হোসেন যৌন উত্তেজক ঔষুধ সেবন করেন। কিন্তু ওষুধের প্রতিক্রিয়ার ছটফট করে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। আর সেখানেই মারা যান তিনি। অপ্রত্যাশিত এমন ঘটনায় আঙ্গুরি বেগম দিশেহারা হয়ে যান। তখন কয়েকজনের সহায়তায় মোবারক হোসেনের লাশটি আত্রাই নদীতে ফেলে দেন।

লাশ উদ্ধারের পর নওগাঁ জেলা পুলিশের তদন্তে এ মামলার রহস্য উন্মোচিত হয়। এ ঘটনায় গ্রেফতার আঙ্গুরি বেগম ইতিমধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। 

আগামী নিউজ/আরআর/এআর