যশোরে ৩ বছর ধরে অকেজো থাকা ২১০টি সিসি ক্যামেরা ফের চালুর সিদ্ধান্ত

উপজেলা প্রতিনিধি, বেনাপোল (যশোর) জুন ১৪, ২০২৩, ০৪:০৪ পিএম

যশোরঃ যশোর শহরে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ২০১৮ সালে ক্লোজসার্কিট ক্যামেরার (সিসিটিভি) আওতায় আনা হয়েছিল। তখন শহরের প্রধান সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ ৭৬টি পয়েন্টে ২১০টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়। কিন্তু এসব ক্যামেরা গত ৩ বছর ধরে সচল নেই। চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িতদের সনাক্ত ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সেগুলো পুনরায় সচল করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। খোদ জেলা প্রশাসক অকেজো থাকা সিসি ক্যামেরা দ্রুত সচলের তাগিদ দিয়েছেন।

সূত্র মতে, ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে যশোর জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় শহরের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্তের আলোকে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে যশোর পৌরসভার মাধ্যমে শহরের গুরুত্বপূর্ণ ৭৬টি পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা হয়।

যশোর পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) সাইফুজ্জামান তুহিন বলেন, পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০১৮ সালে পর্যায়ক্রমে ২১০টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়। এতে পৌরসভার ব্যয় হয়েছিল ২৮ লাখ টাকা। ২০১৯ সাল পর্যন্ত এ ক্যামেরাগুলো সচল ছিল, তবে ৩ বছর অকেজো হয়ে পড়ে আছে। এগুলো সচল করতে বর্তমানে ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা ব্যয় হতে পারে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরের জজ কোর্ট মোড়, দড়াটানা এলাকা, এমকে রোডে বিদ্যুতের খুঁটির সাথে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা আছে। এগুলোর কোনোটির তার বিচ্ছিন্ন, কোনোটির ক্যামেরা ভাঙ্গা। আবার কোনো কোনো স্থানে তারের সাথে ঝুলছে সিসি ক্যামেরা। এসব সিসি ক্যামেরা অকেজো থাকায় অপরাধী সনাক্ত ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কোনো কাজে আসছে না। তাই চুরি, ছিনতাইসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হলেও অনেক ক্ষেত্রে জড়িতরা পার পেয়ে যাচ্ছে। যশোর শহরে ৮ নং ওয়ার্ডে চুরি ছিনতাই বেড়েছে দাবি করে গত ৯ জুন এলাকাবাসী শহরের নলডাঙ্গা রোডে মতবিনিময় করেন। সভায় এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন স্থানীয়রা। ওই সভায় অংশ নেয়া সাবেক পৌর কাউন্সিলর সন্তোষ দত্ত জানান, প্রতিদিনই ঘটছে ছিনতাই ও চুরি। সিসি ক্যামেরাগুলো চালু থাকলে অপরাধীদের সনাক্ত করা সম্ভব হতো বলে মনে করেন তিনি।
শহরবাসীর এ দাবি উত্থাপিত হয়েছে গত রোববার (১১ জুন) আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায়। আইন-শৃঙ্খলা কমিটির জেলা সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান অকেজো সিসি ক্যামেরা নিয়ে কথা বলেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান বলেন, দ্রুত সিসি ক্যামেরাগুলো সচল করার তাগিদ দিয়েছি। সভায় উপস্থিত পৌরসভার প্রতিনিধি ছিলেন। তাকে বলা হয়েছে। আবার লিখিতভাবেও ব্যবস্থা নিতে বলা হবে।

যশোর পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) সাইফুজ্জামান তুহিন বলেন, যশোর জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অচল সিসি ক্যামেরা সচল করার নির্দেশনা পেয়েছি। এ বিষয়ে দ্রুতই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) বেলাল হোসাইন বলেন, সিসি ক্যামেরা চালু থাকলে অপরাধী সনাক্ত করা ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়। শহরবাসীর সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা সিসি ক্যামেরাগুলো সচল করতে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বলেছি। আশা করি দ্রুত সচল হবে।

মোঃ মনির হোসেন/বুইউ