রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সংরক্ষিত আসনের সাবেক এমপি এ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় খোদ মহানগর আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে একটি আশার সঞ্চার হয়েছে। সিটির ভোটের মাঠে কোন ধরণের প্রচার প্রচারণা কিংবা গণসংযোগ করেননি আওয়ামীলীগের প্রার্থী ডালিয়া।
তবু মহানগর আওয়ামীলীগের যেসব নেতা মাঠে ছিলেন। নান্দনিক প্রচার প্রচারণা ও গণ সংযোগে জমে তুলে ছিলেন ভোটের মাঠ তারা এখন ডালিয়ায় একট্রা। হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় বিভক্ত আওয়ামীলীগে ঐক্যবদ্ধতার একটি আভাস পাওয়া গেছে। অন্যদিকে, জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা এটিকে বিজয়ের প্রথম ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন। তারা বলছেন, এবার রংপুর সিটি নির্বাচনে কোন হ্যাভিওয়েট প্রার্থী থাকলো না। তাই জাপা প্রার্থী মোস্তফা সহজ জয় পাবেন।
কিন্তু তারুণ্যে উদ্বিপ্ত রংপুর মহানগর যুবলীগের সভাপতি সিরাজুম মনির বাশার মনে করেন রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামীলীগ প্রার্থীর বিজয় অর্জন একটি সহজ সম্ভব। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া প্রার্থী হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়ার বিজয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদি।
তিনি জানান, রংপুর মহানগরীকে উন্নয়নে সমৃদ্ধ করেছে আওয়ামীলীগ সরকার। রংপুর বিভাগ, সিটি করপোরেশন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, চারলেনের সড়ক, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওপেন হার্ট সার্জারি বিভাগ, বার্ন ইউনিট স্থাপন, আধুনিক শিল্পকলা একাডেমী ভবন, সেচ ভবন, পুলিশ লাইন্স ভবন, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক, গণপূর্ত, এলজিইডি, নির্বাচন, পাসপোর্ট, সমবায়, ইসলামিত ফাউন্ডেশন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ অফিস, মেট্রোপলিটন পুলিশ গঠন ও শিশু হাসপাতালসহ প্রভূত উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান।
আওয়ামীলীগ সরকার না থাকলে সব বগুড়া কিংবা দিনাজপুরে চলে যেত। এই কৃতজ্ঞতা বোধ থেকে নগরীর জনগণ মেয়র পদে আওয়ামীলীগ প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে প্রস্তুত। নগরীর জনগণ নৌকা প্রতীকে ভোট দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে আছে। তাদের ভোট নৌকায় নিতে প্রয়োজন উন্নয়ন প্রচার, ভোট সমন্বয়, কৌশল, ত্যাগ স্বীকার ও স্থির চিন্তা। রংপুর সিটি উন্নয়নের কারিগর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি রংপুর সিটির মেয়র পদে হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়াকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন। সুতারাং আওয়ামীলীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রার্থী হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া। দলীয় নেতাকর্মীদের উচিত দ্বিধা দ্বন্দ্ব অভিমান ভুলে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ম্যান্ডেডকে স্যালুট জানাতে তাঁর মনোনীত প্রার্থী হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়াকে বিজয়ী করতে ভোট যুদ্ধে কোমড় বেঁধে নেমে পড়া।
সিরাজুম মনির বাশার বলেন, আওয়ামীলীগের একজন দলীয় মনোনয়ন পেলে বাকীরা নিস্কৃয়তার ভুমিকায় থাকে। তাতে ভোটের মাঠে বিরুপ প্রভাব সৃষ্টি হয়। এবার রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামীলীগ নেতাদের গা ঝারা দিয়ে উঠতে হবে। আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের নিয়ে একটি শক্তিশালী নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন, ছয়টি থানা কমিটিকে নিয়ন্ত্রণ কমিটি, মিডিয়া ও প্রচার-প্রচারণা কমিটি, অর্থ কমিটি, পরিকল্পনা কমিটি, আপ্যায়ন কমিটি, ভোট কেন্দ্র মনিটরিং কমিটি কুইক রেসপন্স কমিটি গঠন করে দায়িত্ব বন্ঠন করতে হবে। প্রচারণা শুরুর দিন থেকে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত এক একজন নেতাকে এক একটি করে ওয়ার্ডের দায়িত্ব পালন করতে হবে। ধরুন আমি ১৬ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। আমি ১৬ নং ওয়ার্ডের দায়িত্ব পালন করবো। মিডিয়া ও প্রচার-প্রচারণা কমিটি আমাকে প্রচারণা সামগ্রী দেবে, অর্থ কমিটি অর্থ দেবে, পরিকল্পনা কমিটি নিত্য নতুন পরিকল্পনা দেবে। কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে আমি ভোটারদের কাছে যাব, ভোট সমন্বয় করব। দলীয় প্রার্থী চাপহীন রুটিন দায়িত্ব পালন করবে। আমার ওয়ার্ডের জয় পরাজয় আমার হাতেই থাকবে। আমি কত্তো বড় নেতা তা একটি ওয়ার্ডের ভোট খেললেই স্পষ্ট হবে।
এটিতো রংপুর সিটি দখলের মাষ্টার প্লান? এমন প্রশ্ন করা হলে বাশার বলেন, এ রকম মাষ্টার প্লান ছাড়া রংপুর সিটি উদ্ধার করা সম্ভব নয়। নেত্রী যাকে মনোনয়ন দিয়েছেন তাকেই আমরা সাপোর্ট করবো বলা কিংবা গলা ফাঁটানো বক্তব্য দিয়ে নয় এবার রংপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগ নেতাদের ভোটের মাঠে উন্নয়ন প্রচার, ভোট সমন্বয়, কৌশল, ত্যাগ স্বীকার ও স্থির চিন্তায় নিজ দলীয় প্রার্থীর বিজয় অর্জনের পরীক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। তাহলেই হয়তো পাল্টে যাবে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সহজ ছক।
এসএস