কলাপাড়ায় সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু ঘুরিয়ে দিলো লাখো মানুষের ভাগ্যের চাকা

উপজেলা প্রতিনিধি, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) জুলাই ১, ২০২২, ০৩:৫৪ পিএম

পটুয়াখালীঃ আন্ধারমানিক নদীতে বালীয়াতলী পয়েন্টে সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু (৬৬৬ মিটার) পর্যটন নগরী কুয়াকাটার বিকল্প সড়কে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখছে। এ সেতু বদলে দিয়েছে পাঁচটি ইউনিয়নের লাখো মানুষের ভাগ্য। গ্রামীণ এ জনপদে সুচিত হয়েছে যোগাযোগের নতুন দিগন্ত। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর এ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তররের (এলজিইডি) ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করেন। ১৩টি স্প্যানের ওপর ফুটপাথসহ ৯ দশমিক আট মিটার প্রস্থ সেতুটি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আন্ধারমানিক নদীর বালীয়াতলী পয়েন্টের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু পেরিয়ে অতি সহজে, কম সময়ে, কম খরচে কুয়াকাটা যাওয়া সম্ভব। সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু পেরিয়ে কুয়াকাটা যেতে পারছে পর্যটক দর্শনার্থীসহ সাধারন মানুষ। কলাপাড়া থেকে গঙ্গমতি পর্যটন পল্লী হয়ে কুয়াকাটায় যাওয়া যায় সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু পেরিয়ে কুয়াকাটা যাওয়া সম্ভব। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ রক্ষায় আগের চেয়ে অনেক সহজ হয়েছে এলাকাবাসীর। দুরপাল্লার যাত্রীবাহী বাসসহ আন্ত:জেলার বাসগুলো দ্রুত গতিতে চলাচলের অপেক্ষায়। এ এলাকার মানুষদের জীবন যাত্রা পাল্টে যাচ্ছে দ্রুত। ভূ-সম্পতির দাম দ্বিগুন হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষিজাত পন্য সহজে বাজারজাত করা সম্ভব হয়েছে। তৃতীয় সমুদ্র বন্দর পায়রা রাবনা বাঁধ চ্যানেলসহ পর্যটন পল্লী গঙ্গামতির সৌন্দর্য অবলোকন ও এশিয়া মহাদেশে সর্ববৃহৎ দ্বিতীয় বৌদ্ধমন্দির মিশ্রিপাড়া ও আদিবাসী রাখাইনদের হাতে তাঁতে বোনা লুঙ্গি পর্যটকদের দেখতে অনেক সহজ হয়েছে। গঙ্গমতি সৈকত রয়েছে লাল কাঁকড়ার অবাধ বিচরন, রয়েছে ঝাউবনসহ ম্যানগ্রোভ প্রজাতির কেওড়া, ছইলা, গেওয়া, বাইনসহ নানান প্রজাতির সারি সারি বৃক্ষ। লাল কাঁকড়ারসহ
প্রাকৃতিক দৃশ্য ও সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের মতো এমন দৃশ্য উপভোগ করতে প্রতিদিন সমাগম ঘটছে হাজারো পর্যটকের।

বালীয়াতলী বাজারের বিশিষ্ট ঔষধ ব্যবসায়ী নুরুল কবির ঝুনু জানান, আন্ধারমানিক নদীতে সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু বদলে দিয়েছে পাঁচটি ইউনিয়নের লাখো মানুষের ভাগ্য। ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন মালামাল এক গাড়ীতে পৌঁছে দোকানে। কম খরছে ব্যবসায়ীরা মালামালা আনা নেয়া করতে পারবে। আগে এলাকার ধান ব্যবসায়ীরা ট্রলারের মাধ্যমে বিভিন্ন মোকামে ধান চালান দিতো, এখন সরাসরি ট্রাক দোকানে সামনে থেকে ধান সংগ্রহ করে নিয়ে যায় বিভিন্ন জায়গায়।

বালিয়াতলী ইউনিয়নে কামরুল ইসলাম বলেন, আন্ধারমানিক নদীতে সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু হওয়ায় আমাদের এখন রাত ১২-১টা নেই, যেকোনে সময় আমরা কলাপাড়া শহরে যেতে-আসতে পারি। প্রসার ঘটেছে বিভিন্ন ব্যবসার। ব্যবসায়ীদের পণ্যপরিবহন সহজ হয়েছে। সেতু দিয়ে মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও দুরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস চলাচল
করছে। চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে যাওয়া, কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের ক্লাস, চাকরিজীবীদের অফিস, শ্রমিকদের কাজে যাওয়ায়সহ বিভিন্ন জরুরি প্রয়োজনে সেতুটি নির্মাণ হওয়ায় এখন নতুন নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

রাসেল কবির মুরাদ/এমবুইউ