অযত্ন-অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি টাকার সরকারি সম্পদ

নিজস্ব প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ১২, ২০২১, ১০:৫১ পিএম
ছবিঃ আগামী নিউজ

লালমনিরহাটঃ জেলার হাতীবান্ধায় অবস্থিত দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ নির্মাণকাজে ব্যবহৃত যানবাহনসহ নানা যন্ত্রাংশ নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর চাহিদা না থাকায় আর ব্যবহৃত হচ্ছে না। খোলা আকাশের নিচে ব্যারাজের গোডাউনে অযত্ন-অবহেলায় বছরের পর বছর পড়ে আছে কয়েকশ কোটি টাকা সমমূল্যের যন্ত্রাংশ।

জানা গেছে, উত্তরাঞ্চলের লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের দোয়ানী নামক এলাকায় তিস্তা নদীর ওপর ৫৬টি জলকপাট দিয়ে নির্মিত ব্যারাজটি দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প। এ প্রকল্পে নীলফামারী, রংপুর ও দিনাজপুর জেলার ৫ লাখ ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা প্রদান করা হয়।

ব্যারাজটির নির্মাণকাজ ১৯৭৯ সালে শুরু হয়ে ১৯৯০ সালে শেষ হয়। সেচ প্রকল্প ও ব্যারাজটি রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনা করেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পানি উন্নয়ন বোর্ড।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত ব্যরাজের কাজ শেষে দোয়ানী গোডাউনে খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছে ট্রাক, বেকার, ওযাগন, ঢালাই মেশিনসহ কয়েকশ কোটি টাকা দামের দামি যানবাহন ও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ। অযত্ন আর অবহেলায় এসব জিনিস দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকায় ব্যাবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

সূত্রমতে, পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ এসব দামি যানবাহন ও যন্ত্রাংশ মেরামতের উদ্দ্যোগ না নেয়ায় ব্যবহার ও চলাচলযোগ্য যানবাহন, যন্ত্রাংশগুলো রোদ-বৃষ্টিতে পুড়ে-ভিজে নষ্ট হচ্ছে ও চুরি হয়ে যাচ্ছে এর যন্ত্রাংশ। একসময়ের এসব সচল আধুনিক জিনিসগুলো বর্তমানে অচল হয়ে গেছে।

শোনা যাচ্ছে, পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ যে কোনো সময় দামি যানবাহন ও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ব্যবহার অযোগ্য ঘোষণা করতে পারে।

এদিকে গোডাউনে পরে থাকা জিনিসগুলো জং ধরে ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ার কারণে মেয়াদউত্তীর্ণ হয়ে পড়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিস্তা ব্যারাজের একজন কর্মচারী বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রয়োজনে বিদেশ থেকে কোটি কোটি টাকার জিনিস ও যন্ত্রাংশ আমদানি করা হয়, অথচ অর্থের অভাবে গোডাউনে পড়ে থাকা জিনিস ও যন্ত্রাংশসমূহ মেরামত করা হচ্ছে না। এসকল গাড়ি ট্রাক সচল থাকলে দেশের উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করা যেত। এতে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থের ক্ষতি হচ্ছে।

ব্যারাজের গোডাউনের দায়িত্বে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ড তিস্তা ব্যারাজ’র উপ-সহকারী প্রকৌশলী বিলাস চন্দ্র এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি।

তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া’র নির্বাহী প্রকৌশলী আসফুদ্দৌলা বলেন, এ বিষয়ে একটি কমিটি হয়েছে। কমিটি’র রিপোর্ট পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।