কাজে আসছে না রাস্তা ছাড়া পাঁচ লাখ টাকার ঘাটলা !

মো. শামীম, নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি মে ২২, ২০২১, ০৪:৩৩ পিএম
ছবিঃ আগামী নিউজ

ঢাকাঃ সরকারের প্রায় পাঁচ লাখ টাকা ব্যয় করে ঢাকা জেলা পরিষদের অর্থায়নে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার বারুয়াখালী ইউনিয়নের কুমারবাড়িল্যা এলাকায় ইছামতী নদীর তীরে নির্মাণ করে একটি ঘাটলা। নির্মাণের প্রায় তিন বছর অতিবাহিত হলেও তা এখনো ব্যবহার করতে পারছে না জনসাধারণেরা। তবে কার স্বার্থে নির্মাণ করা হলো এ ঘাটলা এ প্রশ্ন স্থানীয়দের।

শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শুষ্ক ইছামতী নদীর পাড় ঘেঁষে ঘাটলাটি নির্মান করা রয়েছে। তবে ঘাটলায় ওঠার জন্য কোনো রাস্তা নেই। পাশেই একটি গাছে সাঁটানো হয়েছে সাইনবোর্ড। সাইনবোর্ডে লেখা, ঢাকা জেলা পরিষদের অর্থায়নে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ব্যয়ে কুমারবাড়িল্যা কাজীবাড়ি ঘাটলা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স তাওহীদ এন্টারপ্রাইজ।

স্থানীয়রা জানান, ইছামতী নদীর পানি ব্যবহার করার জন্য কুমারবাড়িল্যা কাজীবাড়ির ঘাটে ঘাটলাটি নির্মাণ করা হলেও রাস্তা না থাকায় লোকজন এটি ব্যবহার করতে পারছেন না। ফলে নির্মাণের পর থেকে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে এটি। স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, এখানে ঘাটলার কোনো দরকারই ছিল না। তারপরও এমন ঘাটলা বানানো হলো যে উঠতে হলে মই দরকার। সরকার লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে এই ঘাটনা নির্মাণ করলো কার স্বার্থে?  

স্থানীয় বাসীন্দা বাদল কাজী বলেন, গোসলসহ বিভিন্ন কাজে ইছামতীর পানি ব্যবহার করে স্থানীয়রা। সেই স্বার্থে ঢাকা জেলা পরিষদের অর্থায়নে এই ঘাটলা নির্মাণ করা হলেও মাটির অভাবে তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। প্রায় তিন বছর যাবত লক্ষ টাকার ঘাটলা অব্যবহারিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ঢাকা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি ঘাটলাটি জনসাধরণে ব্যবহারের উপযোগী করে দেওযায় জন্য।

আমেনা বেগম নামের এক গৃহবধু বলেন, কাপড়চোপড় ধোয়াসহ দৈনিক অনেক কাজকর্ম নদীতে করতে হয়। ঘাটলাটি তৈরি করা হলেও আমরা ব্যবহার করতে পারছি না। শিগগিরই ঘাটলার ওপর মাটি ভরাট করা উচিত।

এবিষয়ে ঢাকা জেলা পরিষদের সদস্য ওয়াহিদুজ্জামান বলেন , ঘাটলাটির প্রকল্প আমি দিয়েছিলাম। ঘাটলার নিচে যে মাটি নেই এ বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এখন শুনলাম অল্পসময়ের মধ্যে আমি মাটি ভরাট করে দেব।

এবিষয়ে জানতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স তাওহীদ এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. কালামের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ধরেননি।

ঢাকা জেলা পরিষদের উপ-প্রকৌশলী মোতালেব খান বলেন, ঘাটলার বরাদ্দ ছিল, তাই ঘাটলা নির্মাণ করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের মাধ্যমে একটি প্রকল্প বানিয়ে মাটি ভরাট করা হবে।

এ বিষয়ে বারুয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান শিকদার বলেন, আমি শুনেছি, আমার ইউনিয়নে এ রকম একটি ঘাটলা নির্মাণ করা হয়েছে। তবে মাটির অভাবে কেউ ঘাটলাটি ব্যবহার করতে পারছে না। তিনি বলেন, ‘শুধু জেলা পরিষদ নয়, যে কেউই কাজ করুক না কেন নিজ নিজ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানিয়ে কাজ করলে ভালো হয়। উভয়ের সমন্বয়ে ভালো কাজ হলে জনগণ উপকৃত হবে।