রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

কাটাগড় হাট ইজারা নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ

সুমন ইসলাম, ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি এপ্রিল ২৭, ২০২১, ০৫:০১ পিএম
ছবি: আগামী নিউজ

ফরিদপুর: জেলার বোয়ালমারী উপজেলার রুপাপাত ইউনিয়নের কাটাগড় হাঁট ইজারা প্রদানকে কেন্দ্র করে অনিয়ম হতে পারে বলে গুঞ্জন উঠেছে। অনিয়ম ঠেকাতে এরই মধ্যে জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে। এদিকে এরই মধ্যে বছর শুরু হলেও ইজারা না দেয়ায় একটি পক্ষ খাজনা তুলে নিয়ে যাচ্ছে, এতে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। 

বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, কাটাগড় হাট ইজারা প্রদানের নিমিত্তে দরপত্র আহ্বান করা হলে দুটি দরপত্র দাখিল হয়। যার মধ্যে একটির মুল্য লাখ টাকার উপরে অপরটির মুল্য ১০ হাজার টাকার নিচে বার্ষিক মূল্য নির্ধারণ করে দরপত্র দাখিল করেন দরদাতারা। চলতি বৈশাখ মাস থেকে ইজারা বর্ষ শুরু হলেও অদ্যবধি ইজারা দেয়ার কাজ সম্পন্ন করতে না পারায় সাময়িকভাবে ইজারা না দেয়া পর্যন্ত রুপাপাত ইউনিয়নের তহশিলদারকে খাজনা উত্তোলন করে সরকারী কোষাগারের জমাদানের দ্বায়িত্ব দিয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে বলেও জানানো হয় ইউএনওর কার্যালয় থেকে।

এদিকে, এক লাখ নয় হাজার টাকা দরদাতা মো. আকরাম হোসেন অভিযোগ করেন, প্রতিপক্ষের দরপত্র প্রদানকারী প্রভাবশালী হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে নামমাত্র মুল্যে হাটটি জবরদখলের পায়তারা চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি জোরপুর্বক খাজনামুক্ত মাইকিং করে ও ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার চালিয়ে সম্পুর্ণ অনিয়মতান্ত্রিকভাবে খাজনা উত্তোলন করছে। এতে সরকারও রাজস্ব হারাচ্ছে। 

তিনি আরো দাবী করেন, তিনি (আকরাম হোসেন) এক কিলোমিটার  দুরের সস্রাইল বাজারও চলতি বছর ২৮ লাখ ৮৫ হাজার টাকায় ইজারা নিয়েছেন। প্রতিপক্ষের লোকজন এই হাটের  ক্ষতি করতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে অদুরের কাটাগড়ে একই দিনে (সপ্তাহের শুক্র ও মঙ্গলবার) হাট বসিয়ে কাটাগড় হাটটি তাদের কব্জায় নেবার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। 

অপরদিকে, কাটাগড় হাটের খাজনা আদায়কারী পক্ষের নেতা ও রুপাপাত ইউপি চেয়ারম্যান মো. আজিজুর রহমান মোল্লা জানান, দীর্ঘ দিন ধরে তিনি তার পরিচিতজনদের নামে কাটাগড় হাট ইজারা নিয়ে খাজনা উত্তোলন করে স্থানীয় মসজিদের কাজে ব্যায় করে আসছিলেন। এবছরও তিনি দরপত্র দাখিল করেছেন এবং হাটটি তার কব্জায় রয়েছে বলেও দাবী করেন তিনি। 

আর রুপাপাত ইউনিয়নের তহশিলদার রাজিমুল আলম মোবাইলে জানান, অদ্যবধি তিনি এধরনের কোনো পত্র পাননি তাই কাটাগড় হাটের খাজনা উত্তোলনের ব্যাপারে কিছুই জানেনা তিনি। তিনি বলেন, চিঠি পেলে নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো। 

যদিও কোনো ধরনের অন্যায় বা অনিয়মকে প্রশ্রয় দেয়া হবেনা জানিয়ে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঝোটন চন্দ বলেন,  আগামী বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) হাট বাজার ব্যাবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে, ওই সভায় কাটাগড় হাট ইজারার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। দরপত্র দাখিলকারী দুইজনেরই ব্যাংক ড্রাফট না দিয়ে করোনার অজুহাতে নগদ টাকা জমা দিয়েছেন যা নিয়ম বহির্ভুত বলেও জানান তিনি। তিনি আরো জানান, হাট বাজার ব্যাবস্থাপনা কমিটির সভায়ই চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, সাধারণত দরপত্র বাতিল না হলে সর্বোচ্চ দরদাতাই ইজারা প্রাপ্ত (নির্বাচিত) হন। 

আগামীনিউজ/নাহিদ