৩০০ বছরের ইতিহাসে ২য় বার মুসল্লিশূণ্য সিলেটের শাহী ঈদগাহ

নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ২, ২০২০, ০৪:৩৮ পিএম
বিশ্বব্যাপী অনেক কিছুই বদলে গেছে করোনা মহামারীর কারনে। এই অনিচ্ছাকৃত বদলের কবলে পড়েছে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী শাহী ঈদগাহ। গত ঈদুল ফিতরের পর এবারও ঈদুল আজহায় মুসল্লিশূন্য সিলেটের ঐতিহ্যবাহী এঈ ঈদগাহ।
 
করোনা বিস্তার রোধে এবারের ঈদ উল আযহার জামাত ঈদগাহ ও খোলা মাঠে অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইসলামী ফাউন্ডেশন। সেই প্রেক্ষিতে সিলেটের কোন ঈদগাহে ঈদের জামাত হয়নি। আর খোলা মাঠে বা ঈদগাহে ঈদের জামাত না হওয়ার কারনে ঐতিহ্যবাহী ঈদগাহটির ঐতিহ্যের পরিবর্তন ঘটেছে।
 
 
শাহী ঈদগাহে সিলেটের প্রধান ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হত। তবে গত ঈদ উল ফিতরের মত অনুষ্টিত হয়নি ঈদ উল আযহার জামাত। ফলে এবার সিলেটের ঈদ উল আযহার প্রধান জামাত হজরত শাহজালাল (রহ.) মাজার মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
 
সিলেট শহরের উত্তর সীমায় শাহী ঈদগাহ বা ঈদগাহ মাঠের অবস্থান। বাংলাদেশের প্রাচীনতম ঐতিহাসিক স্থাপনা সমুহের মধ্যে ১৭০০ সালের প্রথম দিকে নির্মিত সিলেটের শাহী ঈদগাহকে গণ্য করা হয়। এরপর থেকেই এ মাঠে দুই ঈদের নামাজ আদায় করছেন মুসল্লিরা। তবে করোনার কারণে ৩০০ বছরের ইতিহাসে মুসল্লিশূণ্য থাকছে এ ঈদগাহ।
 
একটি উচু টিলার উপর সিলেটের ঐতিহ্যবাহী এই শাহী ঈদগাহ অবস্থিত। মুল ভূ-খন্ডে কারুকার্যখচিত ২২টি বৃহৎ সিঁড়ি রয়েছে। সিঁড়ি মাড়িয়ে উপরে উঠলে ১৫টি গম্বুজ সজ্জিত ঈদগাহ দেখা যায়। ঈদগাহের প্রাচীর সীমার চার দিক ঘিরে রয়েছে ছোট বড় ১০ টি গেইট। ঈদগাহের সামনে মুসল্লীদের অজুর জন্য রয়েছে বিশাল পুকুর।
 
সিলেট শহরের এ স্থানটি নানা কারণে মানুষের কাছে আকর্ষণীয় ও স্মরণীয়। ১৭৭২ সালে ইংরেজ বিরোধী ভারত – বাংলা জাতীয়তাবাদীর প্রথম আন্দোলন সৈয়দ হাদী ও মাদী কর্তৃক এই ঈদগাহ মাঠেই শুরু হয়েছিল।
 
অতীতে সিলেটের বড় বড় সমাবেশের স্থান ছিল এটি। এখানে ইংরেজ বিরোধী আন্দোলনের নেতা মহাত্মা গান্ধী, কায়দে আযম, মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ, মাওলানা মোহাম্মদ আলী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হকের মতো নেতারা এসেছেন এবং ইংরেজ বিরোধী গণ আন্দোলের আহবান জানিয়েছেন। যে কারণে এ স্থানটির ঐতিহাসিক গুরুত্বে মহিমান্নিত।
 
 
আগামীনিউজ/এএস