প্রেমের সম্পর্ক গড়ে স্বামী-স্ত্রীর প্রতারণা, গ্রেফতার ৫

জেলা প্রতিনিধি, গাইবান্ধা মার্চ ৫, ২০২৩, ০৭:২৬ পিএম

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় মেহনাজ আক্তার সাথী (২৫) নামের এক নারী ইমুর মাধ্যমে জহুরুল ইসলাম (৩১) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে প্রতারণা করে। একইভাবে তার স্বামী আরিফুল ইসলাম আরিফ (৩০) মোবাইল ফোনে আপেল মাহমুদ (৩০) নামের এক যুবকের সঙ্গে সুসম্পর্ক করে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই দম্পতিসহ এই চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সোমবার (৫ মার্চ) দুপুরে গাইবান্ধা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. কামাল হোসেন।

গ্রেফতাররা হলেন—ঢাকার ধামরাই উপজেলার মুরারচর গ্রামের মৃত আমিরুল ইসলামের ছেলে আরিফুল ইসলাম আরিফ (৩০) ও তার স্ত্রী মেহনাজ আক্তার সাথী (২৫), গাইবান্ধা শহরের ডেভিট কোম্পানিপাড়ার রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে ফাহিম মিয়া (২২), গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তরফমন গ্রামের ময়নুল শেখের ছেলে রুবেল শেখ (২৫) ও বামনকুড়ি (কইপাড়া) গ্রামের জহুরুল আকন্দের ছেলে জুয়েল আকন্দ (২৬)। 

প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মো. কামাল হোসেন বলেন, গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার কচুয়া গ্রামের আজিজার রহমানের ছেলে আপেল মাহমুদের সঙ্গে ১৫ দিন আগে মোবাইল ফোনে রুবেল শেখ ও জুয়েল আকন্দের পরিচয় হয়। সেই সুবাদে আপেলকে গত ৩ মার্চ সন্ধ্যার দিকে গোবিন্দগঞ্জ এলাকায় মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে ডেকে নিয়ে আসে। একপর্যায়ে গোবিন্দগঞ্জ চারমাথা মোড়ের নূর জাহান আবাসিক হোটেলে ২০৯নং রুমে আটক করে রাখে। সেখানে প্রতারণামূলকভাবে তার নগ্ন ছবি ও অশ্লীল ভিডিও তৈরি করার হুমকি দিয়ে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।  দাবি চাঁদার টাকা বিকাশের মাধ্যমে পাঠানোর জন্য আপেলকে দিয়ে তার পরিবারের লোকজনদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে। এই টাকা দিতে দেরি হওয়ায় আপেলকে মারধর করে নগদ ১৮ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। এ সময় আপেল মাহমুদ তার পরিবারের লোকজনদের জানালে তার পরিবার গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশের শরণাপন্ন হয়। পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে আপেল মাহমুদকে নুরজাহান আবাসিক হোটেল থেকে উদ্ধার এবং প্রতারক রুবেল শেখ ও জুয়েল আকন্দকে গ্রেফতার করা হয়। 

অপরদিকে, গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার দক্ষিণ কুঠির গ্রামের এনছার আলীর জহুরুল ইসলামের সঙ্গে প্রায় ১০ দিন আগে ইমুর মাধ্যমে মোছা. মেহনাজ আক্তার সাথীর  পরিচত হয়। এরপর প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। সেই সুবাদে মেনহাজ আক্তার সাথী মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে জহুরুলকে গত ৩ মার্চ গোবিন্দগঞ্জ এলাকার ভাড়া বাসা ডেকে আনে। সেখানে সাথীর স্বামী আরিফ এবং তার সহযোগী ফাহিম মিয়া জিম্মি করে জহুরুলকে ঘরের ভেতর আটক করে রেখে মারধর করে ২ লাখ টাকা দাবি করে এবং নগদ দেড় হাজার  টাকা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। এসময় মোবাইল ফোনে জহুরুল তার পরিবারকে জানালে স্বজনরা গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশের শরণাপন্ন হয়। পরবর্তীতে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে ডায়াবেটিস হাসপাতালের পেছনে প্রতারকদের ভাড়া বাসা থেকে জহুরুল ইসলামকে উদ্ধার করাসহ প্রতারকদের গ্রেফতার করা হয়। 

এসব তথ্য নিশ্চিত করে পুলিশ সুপার মো. কামাল হোসেন বলেন, গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

এসএস