1. প্রচ্ছদ
  2. জাতীয়
  3. সারাবাংলা
  4. রাজনীতি
  5. রাজধানী
  6. আন্তর্জাতিক
  7. আদালত
  8. খেলা
  9. বিনোদন
  10. লাইফস্টাইল
  11. শিক্ষা
  12. স্বাস্থ্য
  13. তথ্য-প্রযুক্তি
  14. চাকরির খবর
  15. ভাবনা ও বিশ্লেষণ
  16. সাহিত্য
  17. মিডিয়া
  18. বিশেষ প্রতিবেদন
  19. ফটো গ্যালারি
  20. ভিডিও গ্যালারি

প্রথম বছরেই জনপ্রিয়তা পেল বঙ্গবন্ধু ব্রি ধান

জেলা প্রতিনিধি, খুলনা প্রকাশিত: জুন ৭, ২০২২, ০৯:৪১ পিএম প্রথম বছরেই জনপ্রিয়তা পেল বঙ্গবন্ধু ব্রি ধান

খুলনাঃ চলতি বোরো মৌসুমে মাঠে প্রথমবারেরমতো সীমিত পরিসরে চাষ হয় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত ব্রি ধান ১০০, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু ধান’। ধানের আকার ছোট যা নাইজারশাইল, জিরাশাইল, দাতখানি বা কাটারির মতো।

খুলনার ডুমুরিয়ায় নিজ পৈত্রিক জমির এক বিঘা জায়গায় এ ধান চাষ করিছেন সৌখিন ধানচাষি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক এস এম আতিয়ার রহমান। 

নানা বিষয়ে অগ্রসর ভাবনার এই কর্মকর্তা একই জমিতে ২০১০ সালে খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত ব্রি ধান ৫০ ‘বাংলামতি’ চাষ করে সারাদেশে সাড়া ফেলেন। গত বছর আমন মৌসুমে পদ্মার এপার প্রথম ব্রি ধান ৯০ এবং লুপ্তপ্রায় বিন্নিধান চাষ করেন।

এবার ব্রি ধান ১০০ বঙ্গবন্ধু ধান চাষ সর্ম্পকে এস এম আতিয়ার রহমান বলেন, নতুন উদ্ভাবিত এ ধান সম্পর্কে জেনে তিনি ব্রি’র সদর দপ্তর গাজীপুরে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকে বীজের ব্যাপারে ব্রি’র গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কেন্দ্রে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিলে তিনি সেখানকার প্রধান ড. মো. জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলে ৫ কেজি বীজ সংগ্রহ করেন। ওই বীজ দিয়েই ডুমুরিয়ার কার্তিকডাঙ্গা বিলে এক বিঘা জমিতে এ ধানের চারা রোপণ করেন।

এবার ঈদুল ফিতরের প্রায় ৮-১০ দিন আগে অর্থাৎ এপ্রিল মাসের শেষে ধান কাটা হয়। কাটা ও মাড়াই শেষে ধান ভাঙিয়ে যে চাল পান তাতে তিনি অবাক। শতকরা ৯৫ শতাংশের বেশি চাল অভাঙা রয়েছে যা সাধারণত ধান কেটে শুকিয়ে এতো তাড়াতাড়ি এ রকম ভালো চাল পাওয়া যায় না।

তিনি এ চালের ভাতের ব্যাপারে জানান, নিঃসন্দেহে ব্রি’র এটা ভালো জাত হিসেবে কৃষকের মধ্যে জনপ্রিয়তা পাবে এবং বাণিজ্যিকভাবে বাজারে আসা শুরু হলে এটা ক্রেতার আগ্রহ অর্জন করবে। যারা আতপ ও সিদ্ধতে একটু চিকন ও ছোট আকারের চাল পছন্দ করেন তাদের জন্য এটা খুবই পছন্দের হবে। ভালো মানের হোটেলগুলোতেও এ চালের ভাত ভোক্তাদের আগ্রহ বাড়াবে।

জানা গেছে, হালকা লালচে রংয়ের এ ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। একর প্রতি ৩৬-৪০ মণ পর্যন্ত ফলন পাওয়া গেছে যা প্রচলিত জাত ব্রি ধান ২৮ এর চেয়ে বেশি। ধানের দানা পুষ্ট এবং আকার কিছুটা গোলাকার। ইতোমধ্যে ধান কাটা ও মাড়াই শেষে তা অনেকে আগ্রহভরে চাল বানিয়ে ভাত রান্না করে খেয়ে বলেছেন, এ ধানের চাল বাজার মাতাবে। 

ঝরঝরে ভাত ঠিক কাটারিভোগের চালের মতো ছোট ও চিকন। এ চালে কেবল ঘ্রাণ নেই। তাছাড়া সব বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। বিশেষ করে জিঙ্কের উপস্থিতি প্রচলিত সব জাতের ধানের চেয়ে বেশি। অ্যাইমাইলোজের পরিমাণও বেশি। ভাত সুস্বাদু। আতপ ও সিদ্ধ উভয় চালই আকর্ষণীয় আকারের। তবে যেহেতু চাষ হয়েছে সীমিত জমিতে তাই এ চাল এ বছরই বাজারে আসছে না। বাণিজ্যিকভাবে বাজারে আসতে আরও ৩-৪ বছর সময় লাগবে। 

তবে যারা সৌখিন চাষি বা ক্রেতা তারা চুক্তিভিত্তিতে এ ধান চাষ করে চাল বানিয়ে বাজারে আসার আগেই স্বাদ নিতে পারেন বা পারিবারিকভাবে খেতে পারেন। এ চালের সবচেয়ে বড় উপকার জিঙ্কের বেশি উপস্থিতি। শিশুদের দৈহিক বৃদ্ধি, রোগ-প্রতিরোধ ও খিদে বাড়াতে এ চাল উপকারী।

জানা যায়, এ বছর ব্রি ধান ১০০ তথা বঙ্গবন্ধু ধানের সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে গোপালগঞ্জে এবং এর মধ্যে কোটালিপাড়ায়।

ব্রি’র গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কেন্দ্রের প্রধান ড. মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, এবার তিনি এক হাজার কেজি বীজ কৃষকদের মাঝে দেন। তার মধ্যে অল্পকিছু নড়াইল ও বাগেরহাট এলাকাতেও গেছে। তবে সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায়। তার প্রদত্ত বীজে ৫শ একরেরও বেশি জায়গায় এ ধান চাষ হয়েছে যা সারাদেশে চাষকৃত জমির এক তৃতীয়াংশের বেশি।

গোপালগঞ্জের চাষিরা সাধারণত মোটা ধান চাষ ও মোটা চাল খেতে অভ্যস্ত। কিন্তু বঙ্গবন্ধু ধানের চাষ করে তারা খুশি। কারণ, এ ধানের উৎপাদনও ভালো এবং রোগবালাই কম হয়েছে। বাজারে দু-চারজন ধান বিক্রি করলেও তার দাম পেয়েছেন প্রচলিত ২৮ জাতের চেয়ে বেশি। ফলে এ ধান আগামী মৌসুমে ব্যাপক চাষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ ছাড়া আগামী ৩-৪ বছরের মধ্যে ব্রি ধান ২৮ বা অন্য অনেক ধানের স্থান দখল করে নেবে বঙ্গবন্ধু ধান।

জানা যায়, এ ধানের জীবনকাল ১৪৮ দিন। এ ধানের উচ্চতা ১০১ সে.মি.। প্রতিকেজি চালে জিঙ্কের পরিমাণ ২৫.৭ মিলিগ্রাম। অ্যামাইলোজ ২৬.৮% ও প্রোটিন ৭.৮% ।

এসএস

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে
Small Banner