কোনো কিছুতেই উচ্ছেদ অভিযান থেমে থাকবে না। শক্তি বা লোকবল দিয়ে অভিযান কিছু সময়ের জন্য থামিয়ে রাখা গেলেও ফাইনালি কেউই উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ রাখতে পারেনি এবং ভবিষ্যতেও পারবে না বলে জানিয়েছেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
আগামীনিউজ ডটকমকে তিনি বলেন, গত এক বছরে আমরা এ রকমের অনেক সমস্যা ফেস করেছি। কোথাও উচ্ছেদ থেমে থাকবে না। আমরা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি। এটা আমাদের শুরু, তবে শেষ করাটা কঠিন। আমরা কঠিন কাজটিই সম্ভব করে দেখাতে চাই। সরকার ও রাষ্ট্রের চেয়ে শক্তিশালী কেউ নয়। আমরা কোনো বাধাকেই বাধা মনে করছি না। অনেকে এ অভিযান পরিচালনা অসম্ভব মনে করলেও আমরা তা মনে করছি না। দেশের পক্ষে কাজ করা অনেকে অসম্ভব মনে করলেও দেশনেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের পক্ষে কাজ করা সম্ভব যা ইতোমধ্যে প্রমাণ হয়েছে।
নদীর তীরে স্থাপন করা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া প্রসঙ্গে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি প্রকল্প নেওয়ার বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করছি। সম্মিলিত উদ্যোগেই এটি সম্ভব হবে। প্রকল্পের মাধ্যমে এটি অবশ্যই সম্ভব হবে। আমরা আন্তরিকভাবে চাইলে হবে। আমরা ধর্মীয় এবং জনগোষ্ঠির বিষয়ে ভালো এবং পজেটিভ চিন্তা-ভাবনা নিয়ে এগুচ্ছি। এখানে আমাদের ব্যক্তি ও রাজনৈতিক কোনো স্বার্থ নাই। স্বার্থ হচ্ছে ঢাকাবাসী, মানুষ এবং দেশের পক্ষে। আমরা চাই কোনো অপরাধী মন নিয়ে কাউকে যাতে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ঢুকতে না হয়।’
বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়, ঢাকার বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, বালু এবং তুরাগ নদীর যে সকল প্রবেশ মুখ দিয়ে বর্জ্য নদীতে ফেলা হচ্ছে তার একটি তালিকা তৈরি করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। তালিকায় ১৪৮টি উৎস্য মুখ দিয়ে সুয়ারেজ বর্জ্য, শিল্প-কারখানার বর্জ্য নদীর পানিতে মিশছে। এর মধ্যে ছয়টি উৎস্য মুখ সিসি ঢালাই দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক আগামীনিউজ ডটকমকে বলেন, ‘ঢাকার বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, বালু এবং তুরাগ নদীর তীর ভূমি থেকে গত ৯ বছরে প্রায় ১৯ হাজার টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এ উচ্ছেদ অভিযানের মাধ্যমে ৭৫৫ একর তীরভূমি উদ্ধার করা হয়েছে। অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ করার কারণে এসময়ে ১ কোটি ২১ লাখ ৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি এ সময়ে উচ্ছেদকৃত মালামাল প্রায় ১৭ কোটি টাকায় নিলামে বিক্রি করা হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘উচ্ছেদ একটি চলমান প্রক্রিয়া। অভিযান কোনো জায়গাতেই বন্ধ হয়নি। এ অভিযান পরিচালনায় সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে। তা নাহলে আমাদের একার পক্ষে এ অভিযান সফল করা সম্ভব হবে না।’
বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়, চার নদীর তীরে অবৈধভাবে ১১৩টি ধর্মীয় স্থাপনা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে মসজিদ, মাদরাসা, এতিমখানা ও মাজার রয়েছে ৭৭টি; কবরস্থান ও মৃত ব্যক্তির গোসলখানা ৫টি; ঈদগাহ একটি; স্কুল ও কলেজ ১৪টি; স্নানঘাট, মন্দির ও শ্মশানঘাট ১৩টি এবং অন্যান্য স্থাপনা তিনটি।
আগামীনিউজ/তরিকুল/মামুন