1. প্রচ্ছদ
  2. জাতীয়
  3. সারাবাংলা
  4. রাজনীতি
  5. রাজধানী
  6. আন্তর্জাতিক
  7. আদালত
  8. খেলা
  9. বিনোদন
  10. লাইফস্টাইল
  11. শিক্ষা
  12. স্বাস্থ্য
  13. তথ্য-প্রযুক্তি
  14. চাকরির খবর
  15. ভাবনা ও বিশ্লেষণ
  16. সাহিত্য
  17. মিডিয়া
  18. বিশেষ প্রতিবেদন
  19. ফটো গ্যালারি
  20. ভিডিও গ্যালারি

বান্দরবানে ‌‘রং বিলাস’ আখ চাষের বিপ্লব পাহাড়ির চাষিদের

জেলা প্রতিনিধি, বান্দরবান প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২২, ০৯:০৭ এএম বান্দরবানে ‌‘রং বিলাস’ আখ চাষের বিপ্লব পাহাড়ির চাষিদের

বান্দরবানঃ পার্বত্য জেলা বান্দরবানে তামাক চাষ ছেড়ে পাহাড়ের কিংবা সমতলের বিভিন্ন স্থানে রং বিলাস আখ চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা। বিভিন্ন চাষের পাশাপাশি আখের দিক দিয়েও থেমে নেই পাহাড়ের চাষিরা। পার্বত্যঞ্চলে অন্যান্য ফসলের মতো আখ চাষ ছিল স্বল্প পরিসরে। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে বর্তমানে পার্বত্য জেলা বান্দরবানেও প্রচুর জমিতে ও পাহাড়ের পাদদেশে চাষ হচ্ছে আখের। পার্বত্য এলাকায় আখের চাষ ও বাজার ক্রমেই বাড়ছে। ফলে অনেকটা নীরবেই এ অঞ্চলে আখ চাষে বিপ্লব শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশ ইক্ষু সুগারক্রপ ইনস্টিটিউটের তথ্য মতে, গেল ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ২৭৮ হেক্টর, ২০২০-২১ অর্থ বছরে ২৯৫ হেক্টর, ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে ৩৫৫ হেক্টর জমিতে ইক্ষু চাষ করা হয়েছে। ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে বান্দরবানে ৩৫৫ হেক্টর জায়গায় ইক্ষু চাষ করা হচ্ছে। ইক্ষু উৎপাদন খরচ প্রতি হেক্টরে ১ লাখ ৭৩ হাজার, লাভ হয় ৬ লাখ ৭৫ হাজার। সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতি হেক্টরে আয় হয় প্রায় ৫ লাখ টাকা।

এইদিকে পার্বত্যাঞ্চলে পাহাড়ের কিংবা সমতলে আখ চাষে সফলতা পেয়েছে চাষিরা। সে সফলতায় সচল হয়েছে অর্থনৈতিক চাকা। এতে সম্পৃক্ত হচ্ছে তামাক ও জুম চাষিরা। তাই আখ চাষে আগ্রহ বেড়ে নিজ উদ্যোগে আখ বাগান করেছে অনেক জুম ও তামাক চাষিরা। এইবার চলতি মৌসুমে পোকা মাকড়ের আক্রমণ না থাকায় আখ উৎপাদন হয়েছে ভালো। উৎপাদিত আখের আশানুরূপ দাম পেয়েও খুশি চাষিরা। তাদের আর্থিক উন্নতি ছাড়াও ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা পাচ্ছে প্রকৃতি-পরিবেশ।

জানা যায়, অক্টোবর মাস হতে আখের বীজ রোপন করা কাজ শুরু হয়। আবহাওয়া মৌসুম প্রতিকূলে থাকলে আখের বীজ রোপন শুরুতেই সার, কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়। অতঃপর  আখের ক্ষমতা ও পচন হতে রক্ষার্থে জমির মাঝখানে নালা গর্ত করে পানি চলাচলে রাস্তা প্রস্তর করে দেওয়া হয়। যাতে আখের চারা রোপন হতে শুরু থেকে বৃষ্টি পানি তলিয়ে না যায়। আখ পরিপূর্ণ বয়সে ১৫-২০ ফুট লম্বা হয়। বড় বা লম্বা হলে খুঁটি দিয়ে বেঁধে রাখতে হয় যাতে হেলে না পড়ে। একটি খুঁটির দাম ৬০-৭০ টাকা, প্রতি ৪০ শতক জায়গায় প্রায় ১১-১২ হাজার আখ উৎপাদন হয়। সেই হিসেবে প্রতি ৪০ শতক জায়গায় শুধু ২৫-৩০ হাজার টাকার খুঁটি লাগে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রোয়াংছড়ি, জামছড়ি, ক্রেক্ষ্যং পাড়া, মুসলিম পাড়া, মিনঝিরি, সুয়ালকসহ বিভিন্ন স্থানে চাষিরা সমতল জুড়ে রঙ বিলাশ আখ চাষ করেছে। যা আখ আকারে ১২ থেকে ১৫ ফুট লম্বা, মোটা ও সুমিষ্ট। আখকে উপযুক্ত করে তুলতে আখের চারিপাশে বাঁশ দিয়ে রয়েছে বাঁধানো। যাতে আখ গোড়া থেকে মাথা পর্যন্ত বাকা ও ঢলে না পড়ে। একবছর পুরোদমে পরিচর্যা শেষে বিক্রি জন্য উপযুক্ত সময় আসলে ক্রেতারা ঘুরছেন আখ চাষিদের বাগানজুড়ে।

ডুলুপাড়া চাষি মংসিনু মারমা (৪৫) জানান, আমি এই বছরে প্রশিক্ষণ নিয়ে ৮০ শতক জায়গাজুড়ে রঙ বিলাস আখ চাষ শুরু করেছি। সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে আমার ফলন ভালো হয়েছে। 

জামছড়ি এক চাষি চিহ্লামং মারমা (৫৪) জানান, ৫ বছর ধরে রঙ বিলাস আখের চাষ করে আসছি। চাষ করার আগে ইক্ষু সুগারক্রপ হতে প্রশিক্ষণ নিয়ে আখের চাষ শুরু করেছি। তবে চাষের শুরুতেই সার, কীটনাশক ও চারা বিতরণ করেছে ইক্ষু প্রতিষ্ঠান। এখন আখ বিক্রি করে লাভের আশা করা যাচ্ছে।

বালাঘাটা বাজারে আখ খুচরা বিক্রেতা মোঃ সাহেদ (২০) জানান, আমি এই বাজারে দীর্ঘ সময় ধরে আখ বিক্রি করে আসছি। এই সময় এসে আখের মিষ্টি সুস্বাদু। তবে অক্টোবর দিকে গেলে আরো মিষ্টি হয়। বাজারের নিয়মনুযায়ী এক একটি আখের দাম ৩০ হতে ৪০ টাকা বিক্রি করছি। প্রতি আখ থেকে কমপক্ষে ১০-১৫ টাকা লাভ থাকে।

বাংলাদেশ সুগারক্রপ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের কৃষিবিদ ঊধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ক্যচান মারমা বলেন, বান্দরবানসহ তিন পার্বত্য জেলার মাটি ও আবহাওয়া ইক্ষু চাষের জন্য খুবই উপযোগী রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট বান্দরবান এর পক্ষ থেকে ইক্ষু চাষিদেরকে সার্বিক সহায়তা করার কারণে ইক্ষু চাষিরা যথেষ্ট লাভবান হচ্ছেন। 

তিনি আরো বলেন, তবে গেল বছর চেয়ে এই বছরে চাষিদের আখ চাষে আগ্রহ বেড়েছে।  কৃষকদের মাঠ দিবসের প্রশিক্ষণসহ গত এক বছরে ১ হাজার ২০ জন ইক্ষু চাষিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া গেল বছরে সুগারক্রপ ইনস্টিটিউটের পক্ষ হতে ১৬০ জন চাষিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি আগামীতে আখের রস থেকে জুস তৈরির পরিকল্পনা আছে বলে জানান এই কৃষিবিদ।

আকাশ মারমা মংসিং/এমবুইউ

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে
Small Banner