1. প্রচ্ছদ
  2. জাতীয়
  3. সারাবাংলা
  4. রাজনীতি
  5. রাজধানী
  6. আন্তর্জাতিক
  7. আদালত
  8. খেলা
  9. বিনোদন
  10. লাইফস্টাইল
  11. শিক্ষা
  12. স্বাস্থ্য
  13. তথ্য-প্রযুক্তি
  14. চাকরির খবর
  15. ভাবনা ও বিশ্লেষণ
  16. সাহিত্য
  17. মিডিয়া
  18. বিশেষ প্রতিবেদন
  19. ফটো গ্যালারি
  20. ভিডিও গ্যালারি

বড়ই নিরবে পেরিয়ে গেল  বাবু সুশীল কুমার আগরওয়ালার ৬৮তম জন্মদিন

উত্তরাঞ্চল প্রতিনিধি প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৩, ২০২২, ০৭:৪২ পিএম বড়ই নিরবে পেরিয়ে গেল  বাবু সুশীল কুমার আগরওয়ালার ৬৮তম জন্মদিন
সুশিল কুমার আগরওয়ালা

নীলফামারীঃ  বড়ই নিরবে নিভৃতে পেরিয়ে গেল শহীদ পরিবারের সদস্য রাজনীতিক ও দানবীর স্বর্গীয় বাবু সুশিল কুমার আগরওয়ালার ৬৮তম জন্মদিন। ১৯৫৪ সালের ১৩ জানুয়ারি তিনি কোলকাতার অভিজাত হাসপাতাল হলিক্রিসেন্টে জন্ম নেন। তার বাবার নাম রামেশ্বর লাল আগরওয়ালা। নীলফামারীর বাণিজ্যিক শহর সৈয়দপুরের অধিবাসী ছিলেন তিনি। 

নীলফামারীর ডোমার সরকারি কলেজ প্রতিষ্ঠা লগ্নে বাবু সুশিল কুমার আগরওয়ালা ও তার দুই ভাই বিমুল কুমার আগরওয়ালা এবং নারায়ন কুমার আগরওয়ালা মিলে সাড়ে তিন একর জমি দান করেন। ১৯৭৪ সালে সুশিল কুমার আগরওয়ালা নিজ পৈত্রিক ভূমিতে শহরের নতুন বাজার এলাকায় প্রতিষ্ঠা করেন সৈয়দপুর হোমিও প্যাথিক কলেজ ও বাণীচাঁদ হাসপাতাল। একই সঙ্গে তিনি ছিলেন শহীদ তুলশীরাম সরকারি বালিকা বিদ্যালয় ও হোমিওপ্যাথিক কলেজের গভর্ণিং বডির সদস্য। তার দাদা শহীদ তুলশিরাম আগরওয়ালা এই জনপদে নারী শিক্ষা বিস্তারে নিজস্ব সাড়ে চার একর জমিতে নিজ অর্থ ব্যয়ে প্রতিষ্ঠা করেন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়।

বর্তমানে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ হয়েছে শহীদ তুলশীরাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। উত্তর জনপদে বাঙ্গালি সংস্কৃতি চর্চা অব্যাহত রাখতে শিল্প সাহিত্য সংসদ প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন তিনি। সনাতন ধর্মীদের পূজা অর্চনার জন্য প্রতিষ্ঠা করেন রাম সীতা মন্দির। ধর্মশালা প্রতিষ্ঠায় করেন জমি দান। বাবু সুশিল কুমার আগরওয়ালার পরিবার ১৯৭১ সালে মুজিব ফান্ডে এক লাখ টাকা ডোনেশন দেন। ফলে ওই পরিবারের ২৭ জন সদস্যকে পাক বাহিনী ও তাদের দোসর অবাঙালিরা নির্মম ভাবে হত্যা করে। দেশ পরাধীনতার শৃঙ্খল মুক্ত হলে শ্রমজীবী মানুষের রুটি রুজি নিশ্চিত করার প্রত্যয়ে বাবু সুশিল কুমার আগরওয়ালা জাসদের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি অবিভক্ত জাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন। রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হলে তৎকালিন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান রংপুর সার্কিট হাউজে ডেকে তাকে বিএনপিতে যোগদান করান। আমৃত্যু তিনি বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। জিয়ার দল প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে আর্থিক অনুদান উদার হস্তে দেন। দানবীর এই মানুষটি মাত্র ৪৭ বছর বয়সে বড়ই অকালে ২০০১ সালের ৮ আগস্ট পৃথিবী থেকে মহাপ্রস্থান করেন। বাবু সুশিল কুমার আগরওয়ালার পরিবার পাট ব্যবসার গোড়াপত্তন করে সৈয়দপুরে। কাঁচা পাটের বেল পাকা করতে ১৯৫৭ সালে জার্মান থেকে হাইড্রোলিক প্রেস সৈয়দপুরে আনেন। তৎকালিন পূর্ব পাকিস্তানের দায়িত্বরত গভর্ণর ওই প্রেসের উদ্বোধন করেছিলেন। তৎকালিন পাকিস্তানের বড় পাট ব্যবসায়ী হিসেবে ১৯৬৮ সালে রানী এলিজাবেথ তাদের মুরালিধর বাণীচাঁদ কোম্পানিকে লন্ডনের ব্যবসায়ীক অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার জন্য বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। বাবু সুশিল কুমার আগরওয়ালার পারিবারিক পাটের ব্যবসা লন্ডনের সঙ্গেই ছিলো। মৃত্যুকালে বাবু সুশিল কুমার আগরওয়ালা স্ত্রী, দুই ছেলে, দুই পুত্রবধু ও তিন নাতি নাতনী রেখে গেছেন। তার ছোট ছেলের স্ত্রী ডা. অমৃতা আগরওয়ালা স্বনামধন্য একজন গাইনী চিকিৎসক। অত্যন্ত নিরানন্দ পরিবেশে আজ ১৩ জানুয়ারি বাবু সুশিল কুমার আগরওয়ালার জন্মবার্ষিকী পালিত হলো পারিবারিক ভাবে। এ জন্য স্বর্গীয়ের পরিবারের বাসায় গীতা পাঠের আয়োজন করা হয়। ধর্মীয় আচার শেষে গরীবদের মাঝে শীতবস্ত্র ও বিতরণ করা হয় খাবার।

কথা হয় তার বড় ছেলে বিশিষ্ট ব্যবাসয়ী রাজনীতিক ও দানবীর সুমিত কুমার আগরওয়ালা নিক্কির সঙ্গে। তিনি আবেগ তাড়িত হয়ে কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন আমার বাবা একজন পুরোপুরি অসাম্প্রদায়িক মানুষ ছিলেন। তিনি কখনও জাতপাত ধর্ম বর্ণের বিচার করে সমাজে চলেননি। সব ধর্ম বর্ণের মানুষ তার কাছে সমান ভাবে সম্মান পেতেন। তার হাত ধরে এবং আর্থিক সহায়তায় অনেক শিক্ষা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের গোড়াপত্তন হয়েছে। বিএনপির রাজনীতিতে অবিচল ভাবে থেকে প্রতিনিয়ত আর্থিক সহযোগিতা করে গেছেন। সমাজে আমাদের পরিবারের রয়েছে অনেক অবদান। অথচ আমার বাবাকে স্মরণ করতে তার আদর্শের দল বিএনপি কিংবা কোন শিক্ষা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান কোন কর্মসূচি পালন করে না। তিনি আক্ষেপ করে বলেন মানুষ সমাজের জন্য করে যাতে সমাজ তাকে মনে রাখে। আর মনে রাখার বিষয়টিতেও রয়েছে আজকে যারা নেতৃত্বে আছেন এ ক্ষেত্রে তাদের রয়েছে কার্পণ্য। তাই তিনি আগামী দিনে তার বাবাকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে নিদেন পক্ষে হলেও জন্মদিন ও প্রয়ান দিবস যেন পালন করে তার প্রতিষ্ঠিত ও সহযোগিতা প্রাপ্ত সংগঠন এবং প্রতিষ্ঠানগুলো।

আগামীনিউজ/এসএস

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে
Small Banner