1. প্রচ্ছদ
  2. জাতীয়
  3. সারাবাংলা
  4. রাজনীতি
  5. রাজধানী
  6. আন্তর্জাতিক
  7. আদালত
  8. খেলা
  9. বিনোদন
  10. লাইফস্টাইল
  11. শিক্ষা
  12. স্বাস্থ্য
  13. তথ্য-প্রযুক্তি
  14. চাকরির খবর
  15. ভাবনা ও বিশ্লেষণ
  16. সাহিত্য
  17. মিডিয়া
  18. বিশেষ প্রতিবেদন
  19. ফটো গ্যালারি
  20. ভিডিও গ্যালারি

বোয়ালমারীতে ১০ বছর ধরে শিকলবন্দী যুবক

সুমন ইসলাম, ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০২১, ০৫:৩৮ পিএম বোয়ালমারীতে ১০ বছর ধরে শিকলবন্দী যুবক
ছবি: সংগৃহীত
ফরিদপুরঃ জেলার বোয়ালমারীতে শাহিন ফকির (২৬) নামক এক যুবক শিকলে বাঁধা অবস্থায় জীবনযাপন করছেন। মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে বিনাচিকিৎসায় ধুঁকে ধুঁকে কষ্ট আর যন্ত্রনায় অমানবিকভাবে কাটছে তার জীবন। 
 
আর এ ভাবে এক এক করে দীর্ঘ দশটি বছর পার করেছে ১৫ পারা কোরআনের হাফেজ শাহিন ফকির। দিন দিন শারীরিক অবস্থা চরম অবনতির দিকে যাচ্ছে তার। 
 
বোয়ালমারী উপজেলার রুপাপাত ইউনিয়নের কলিমাঝি গ্রামের আমিন ফকিরের দুই ছেলে ও পাঁচ মেয়ের মধ্যে মানসিক ভারসাম্যহীন শাহিন বড়। 
 
পরিবার ও স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, ছোটবেলায় এক দুর্ঘটনায় রেললাইনে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান। পরে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা করা হয়। এরপর পাবনার একটি মাদ্রাসায় আরবী পড়তে গিয়ে সেখান থেকে ১৫ পারা কোরআনে হাফেজ পাশের পর হঠাৎ তার শারিরীক অসুস্থ্যতা দেখা দেয় এর পর সে ১১ বছর আগে বাড়িতে চলে আসেন। 
 
শাহিনের মাতা সাজেদা বেগম জানান, বড় আশা নিয়ে মাদ্রাসায় ছেলেকে ভর্তি করেছিলাম। সে বড় একজন আলেম হবে। কিন্তু বিধাতার নির্মম পরিহাস তাকে আজ আমরা ঘরের বারান্দায় শিকলে বেঁধে রেখেছি। তাকে ছেড়ে দিলে সে বাড়ির সবাইকে মারধর করে। বাড়ি ঘর ভাংচুর করে। আগে শরীরে জামা কাপড় রাখলেও এখন রাখতে চায় না। বোয়ালমারী থানার বিভিন্ন জায়গা থেকে ফকিরের তেল পড়া,পানি পড়া,যে যেখান থেকে যা যা বলেছে ছেলের আরোগ্যর জন্য তাই করা হয়েছে। তার চিকিৎসা করতে গিয়ে আমাদের সব সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃশ্ব। থাকার এই জায়গায়টুকু ছাড়া আর কিছুই নেই।
 
শাহিনের পিতা আমিন ফকির বলেন,আমি একজন দিনমজুর। এখন বয়স হয়েছে। কাজকর্ম করতে পারিনা। আমার ৩০ শতাংশ জায়গা বিক্রয় করে ছেলের চিকিৎসা করেছি।এখন আর কিছু নাই। তাই বিনাচিকিৎসায় শিকল দিয়ে বেঁধে ফেলে রেখেছি। সবকিছু বিক্রয় করে সহয়সম্বল সবটুকু দিয়ে এই ছেলেকে চিকিৎসা করে এখন আমি নিরুপায়। আর কিছুই করার নাই। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একটি প্রতিবন্ধী ভাতা পাই। এছাড়া কারো কোন সাহায্য পাই নাই। 
 
দুঃখে কষ্টে থাকা মানসিক ভারসাম্যহীন শিকলে বাঁধা শাহিনের মা বাবা আক্ষেপ করে দুইজনই আরও বলেন, আল্লাহ এই কোরআনের পাখিকে নিয়ে গেলে কাইন্দে কাইটে মাটি দিয়ে থুইতাম। আল্লাহ তায়ালার কাছে বলতাম হে প্রভু আমি গরীব মানুষ আমার সংসারের বড় ছেলের কি অপরাধ ছিলো ? তুমি আমাদের এত কষ্ট দিচ্ছো ? সম্ভব হলে সমাজের বৃত্তবান,প্রশাসন সহ সকলের সাহায্য,সহযোগীতা কামনা করেছে শাহিনের পরিবার।
 
স্থানীয় বাসিন্দা ও সমাজকর্মী সৈয়দ তারেক মোঃ আব্দুল্লাহ জানান, সত্যিই মানসিক ভারসাম্যহীন শাহিন ও তার পরিবারের বর্তমান অবস্থা খুবই খারাপ। অমানবিক জীবন যাপন করছে শাহিন। পরিবারটির পাশে স্থানীয় প্রশাসন ও বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।
 
এ ব্যাপারে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা প্রকাশ কুমার বিশ্বাস বলেন, সরেজমিনে শাহিন ও তার পরিবারের খোঁজ খবর নিয়ে অবশ্যই সাহায্য সহযোগিতা ও প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
 
এ প্রসঙ্গে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ্র বলেন, তথ্য পেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে ও সহযোগিতা নেয়া হবে।
আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে
Small Banner