Dr. Neem on Daraz
Victory Day

আল্লাহর অসন্তুষ্টি থেকে বেঁচে থাকার নাম রোজা


আগামী নিউজ | মাওলানা সেলিম হোসাইন আজাদী প্রকাশিত: এপ্রিল ২৬, ২০২০, ১০:৩৫ এএম
আল্লাহর অসন্তুষ্টি থেকে বেঁচে থাকার নাম রোজা

ছবি: সংগৃহীত

হে আল্লাহ! তোমার শাহি দরবারে লাখো কোটি শোকরিয়া আদায় করছি, যখন পৃথিবী মরণঘাতক করোনাভাইরাসের ভয়ে স্তব্ধ, মানুষ ইয়া নফসি ইয়া নফসি করছে, বাবা সন্তানকে ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে, স্বামী স্ত্রীকে ফেলে পালিয়ে যাচ্ছে, এমন এক কঠিন সময়ে তোমার একান্ত করুণায় আমাদেরকে মাহে রমজানের প্রথম  রোজা শেষ করে দ্বিতীয় রোজা পালন করার তাওফিক দিয়েছ। তোমার কুদরতি কদমে সেজদায় বিগলিত হয়ে শোকরিয়া আদায় করছি, আলহামদুলিল্লাহ। হে আল্লাহ! তুমি তাওফিক না দিলে আমরা না বাঁচতে পারতাম, না তোমার বিধান সালাত-সিয়াম পালন করতে পারতাম।

হে আল্লাহ! তুমিই তো বলেছ, ওয়া ইন তাউদ্দু নিমাতাল্লাহি লা তুহসুহা। ওরে আমার বান্দারা! আমার অনুগ্রহরাজি যদি গুনতে বসো, তাহলে তোমাদের সব ক্যালকুলেটর, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ইন্টারনেট এক কথায় তোমাদের সব প্রযুক্তি হ্যাং হয়ে যাবে কিন্তু আমার নেয়ামত গুণে শেষ করতে পারবে না। হে আল্লাহ! আমাদের প্রতি তোমার অনুগ্রহের সীমা নেই। আমাদের প্রতি তোমার ক্ষমার শেষ নেই। যখনই তোমার রহমতের সুইচটি বন্ধ হয়ে যাবে তখনই তো বিশ্বব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাবে। ধ্বংস হয়ে যাব আমরাও। হে আল্লাহ! আমাদের পাপের কারণে তুমি আমাদের ধ্বংস করে দিও না। বরং তুমি আমাদের হেদায়েতের পথে অবিচল রাখ। হাদিস শরিফে রসুল (সা.) বলেছেন, আসসাওমু জুন্নাহ। অর্থ : রোজা হলো ঢাল তথা সেলফপ্রটেক্ট। অর্থাৎ নিজেকে বাঁচানো অস্ত্র। এ হাদিসের ব্যাখ্যায় মুহাদ্দিসরা বলেন, প্রথমত, রোজা আপনাকে আল্লাহর অসন্তুষ্টি থেকে বেঁচে থাকার যোগ্য করে তোলো।

দ্বিতীয়ত, রোজা রোজাদারকে জাহান্নাম থেকে বাঁচার নিশ্চয়তা দেয়। এ সম্পর্কে রসুল (সা.) বলেছেন, রোজা এবং কোরআন বান্দার জন্য আল্লাহর কাছে শাফায়াত করবে। রোজা বলবে, হে আল্লাহ! আমি তাকে খাওয়া এবং কামনা থেকে বেঁচে থাকতে বলেছি, সে আমার কথা শুনেছে। তাই তার ব্যাপারে আমার শাফায়াত কবুল কর। কোরআন বলবে, হে আল্লাহ! সারা দিনের ক্লান্তি শেষে তোমার বান্দা রাতে আমাকে তেলাওয়াত করেছে। আমাকে নিয়ে গবেষণা করেছে। দিনের প্রতিটি মুহূর্তে আমার বলে দেওয়া পথে সে নিজেকে চালিয়েছে। তার ব্যাপারে আমার শাফায়াত কবুল কর। রসুল (সা.) বলেন, রোজা এবং কোরআন দুজনের সুপারিশই কবুল করা হবে।

তৃতীয়ত, রোজা বান্দাকে সব ধরনের পাপকাজ থেকে বাঁচিয়ে রাখে। এ সম্পর্কে রসুল (সা.) বলেছেন, রোজাদার অবশ্যই মিথ্যা-গিবত, ঝগড়া থেকে বেঁচে থাকবে। তার সঙ্গে কেউ ঝগড়া করতে চাইলেও সে এ বলে পাশ কাটিয়ে যাবে- ভাই! আমি রোজাদার। রোজা আমাকে সব ধরনের গোনাহ থেকে বেঁচে থাকতে বলেছে। তাই তুমি যতই চেষ্টা করো, আমাকে ঝগড়ায় জড়াতে পারবে না। আরেকটি হাদিসে রসুল (সা.) বলেছেন, যে রোজাদার ঝগড়া-ফ্যাসাদ, মিথ্যা-গিবত থেকে বেঁচে থাকতে পারল না, তার না খেয়ে থাকায় আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।

হে আল্লাহ! যেভাবে রোজা রাখলে রোজার পূর্ণ হক আদায় হবে, আমার আত্মা পরিশুদ্ধ হবে, যেভাবে রোজা রাখলে রোজার প্রতিদান হিসেবে তোমাকেই পেয়ে যাব, যেভাবে রোজা রাখলে তোমার হাবিব খুশি হবেন- সেভাবে সিয়াম সাধনা করার তাওফিক আপনি আমাদের দিন। সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন।

লেখক : বিশিষ্ট মুফাসসিরে কোরআন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, চেয়ারম্যান : বাংলাদেশ মুফাসসির সোসাইটি।

আগামীনিউজ/বিজয়

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে