Dr. Neem on Daraz
Victory Day

নেক নিয়তে দান খয়রাত করার বিনিময়


আগামী নিউজ | এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুনশী |  প্রকাশিত: এপ্রিল ২৬, ২০২০, ০৯:৪০ এএম
নেক নিয়তে দান খয়রাত করার বিনিময়

নেক নিয়তে দান খয়রাত করার বিনিময় অপরিসীম। মহান আল্লাহপাক নির্মলচিত্তে দানকারীদের উপমা আল কোরআনে এভাবে উপস্থাপন করেছেন। ইরশাদ হয়েছে : ‘আর যারা তাদের ধন-সম্পদ আল্লাহর রেজামন্দি লাভের আশায় এবং তাদের অন্তরকে সুপ্রতিষ্ঠিত ও বলিষ্ঠ করার লক্ষে দান করে, তাদের উপমা হলো যেমন- কোন উঁচুস্থানে অবস্থিত বাগান, যাতে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের ফলে দ্বিগুণ ফসল উৎপাদিত হয়, যদি পরিমিত বৃষ্টিপাত নাও হয়, তথাপি সাধারণ বৃষ্টিপাতও সেখানে যথেষ্ট।

অবশ্যই আল্লাহ তোমাদের কৃতকর্ম অবলোকন করেন।’ (সূরা বাকারাহ : আয়াত ২৫৫)। এই আয়াতে কারীমায় আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে সৎ নিয়তে দান খয়রাতকারীদের উচ্চস্থানে অবস্থিত বাগানের সাথে এ জন্য তুলনা করা হয়েছে যে, কোনো ফল ও ফুলের গাছ নিম্ন বা জলাভূমিতে উদগত হলে মৃত্তিকার অত্যাধিক আর্দ্রতা হেতু গাছের শিকড়গুলো বাড়তে পারে না। এমন কি অধিকাংশ সময় সেগুলো পচে যায়। এমতাবস্থায়, গাছটি বৃদ্ধি পেতে পারে না বা পুষ্প পল্লবে সুশোভিত হতে পারে না।

এরূপ বৃক্ষের যেমন কোনোই স্বার্থকতা থাকে না, ঠিক তদ্রুপই যে দান খয়রাতের মধ্যে আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে নিহিত নেই এবং যে দান খয়রতের মধ্যে দান খয়রাতকারীর নেক নিয়ত নিবদ্ধ নেই, তা সেই নিম্নজলাভূমিতে অবস্থিত নিস্তেজ ফল-ফুলবিহীন বৃক্ষের ন্যায় অপদার্থ মাত্র। পক্ষান্তরে, আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে সৎনিয়তে দান খয়রাতকারী ব্যক্তিগণ উচ্চভূমিতে অবস্থিত ফল-ফুল ও পত্র পল্লবে সুশোভিত বৃক্ষরাজিরই অনুরূপ। তাদের সদুউদ্দেশ্য ও সৎ নিয়তের দান খয়রাত উত্তরোত্তর তাদেরকে ইহলোকের শোভা সৌন্দর্য ও আদর যতেœর অধিকারী করে এবং পরলোকে তাদের মুক্তি ও নিষ্কৃতির পথ সুভাস করে তোলে।

বস্তুত: আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত আল্লাহর রাস্তায় দান খয়রাতকারীদের দানকে একটি বীজের সাথে তুলনা করে এর পরিবৃদ্ধির হারকে সুন্দরভাবে আল কোরআনে বিবৃত করেছেন। ইরশাদ হয়েছে : ‘যারা আল্লাহর রাস্তায় আপন সম্পদ খরচ করে তাদের উপমা যেমন একটি বীজের মতো, যা হতে সাতটি শীষ জন্মায় এবং প্রত্যেকটি শীষে একশত দানা থাকে। অবশ্যই আল্লাহপাক যাকে ইচ্ছা বাড়িয়ে দেন, আল্লাহ প্রস্তুতকারী সর্বজ্ঞ। যারা নিজেদের ধন-সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে এবং পরে ব্যয়কৃত বস্তু সম্পর্কে জনসমক্ষে প্রচার করে না (কাউকে) কষ্টও দেয় না।

তাদের পুরস্কার ও পারিশ্রমিক স্বীয় প্রতিপালকের নিকট গচ্ছিত আছে, সুতরাং তাদের কোনো ভয় নেই এবং তারা চিন্তান্বিতও হবে না।’ (সূরা বাকারাহ : আয়াত ১৬১-১৬২)। অন্য এক আয়াতে আল্লাহপাক ইরশাদ করেন : ‘যে ব্যক্তি (একটি) পুণ্য কর্ম করবে, সে তার দশ গুণ পুণ্য লাভ করবে, আর যে ব্যক্তি (একটি) পাপ কাজ করবে, সে কেবল সে পরিমাণ শাস্তিই ভোগ করবে এবং তাদের ওপর জুলুম করা হবে না।’ (সূরা আনয়াম : আয়াত ১৬০)।

এই দুটি আয়াতে কারীমার অর্থ ও মর্মের প্রতি লক্ষ্য করে আমার তাজেদের উস্তাদ আলহাজ মাওলানা মুফতী সাইয়্যেদ মোহাম্মদ আমীমুল ইহসান (রাহ:) বলেন : নেক আমল বা নেক কাজ তিন প্রকার (ক) লোক দেখানো নেক কাজের কোনোই সওয়াব নেই। (খ) সাধারণ নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে সম্পাদিত নেক কাজের সওয়াব দশ গুণ পর্যন্ত বর্ধিত করা হবে। (গ) অধিক নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে আদায়কৃত নেক কাজের সাওয়াব দশগুণ হতে সাত শত গুণ পর্যন্ত বর্ধিত হবে।

এই পরিবর্ধন ইসলামের স্তর ও পর্যায় অনুসারে হবে। (ঘ) আল্লাহপাক যদি কোনো নেক আমলকারীকে পছন্দ করেন, তবে তাকে সাত শত গুণ হতে দ্বিগুণ, তিনগুণ এমনকি তারও বেশি সওয়াব দান করতে পারেন। কারণ, আল্লাহপাক ‘ওয়াছিউন আলীম’। তার জ্ঞানও এলেমের কোনো সীমা পরিসীমা নেই। তিনি অত্যন্ত সহজভাবে ঘোষণা করেছেন: ‘এভাবেই আল্লাহপাক তোমাদের জন্য নিদর্শনাবলী বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা চিন্তা গবেষণা কর’। (সূরা বাকারাহ : আয়াত ২৬৬)। তাই, আমাদের সকলেরই উচিৎ মাহে রমজানে পূর্ণ আন্তরিকতার সাথে দান-খয়রাত করা এবং দুস্থদের সাহায্যেও এগিয়ে আসা। আমীন!
সূত্র: ইনকিলাব।

আগামীনিউজ/বিজয়

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে