Dr. Neem on Daraz
Victory Day

সবজি চাষে স্বাবলম্বী জাহাঙ্গীর


আগামী নিউজ | নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২০, ০৪:৩৪ পিএম
সবজি চাষে স্বাবলম্বী জাহাঙ্গীর

কিশোরগঞ্জঃ প্রতিদিন ভোরে উঠে সবজি তোলে জাহাঙ্গীর। কখনো সাইকেল কখনো আবার অটো রিক্সায় বোঝাই করে তা বিক্রি করছে শহরের বাজারে। সবজির বাজার উঠানামা করে প্রতিদিনই। তাই সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হয় তাকে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী এমএ জাহাঙ্গীর। করোনাকালীন পিতার কৃষি কাজেই সময় দিচ্ছিলেন তিনি। পরে নিজেই বিভিন্ন ধরনের কৃষি কেন্দ্রীক উদ্যোগ নিয়েছে নিজ গ্রামে। বিশাল জায়গা জুড়ে শসা, টমেটো, চিচিঙ্গা, ধুন্দলসহ বিভিন্ন ধরনের সব্জির চাষ এখন দৃশ্যমান। এখান থেকে পরিবারের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বেশিরভাগ অংশ বিক্রি হচ্ছে শহর ও গ্রামের বাজারে। এই চাষ থেকে লাখ টাকার উপরে ব্যবসা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার সুখিয়া ইউনিয়নের আবির হাজী বাড়ী গ্রামে এ দৃশ্য দেখা যায়। করোনা মহামারিতে অবসর সময়কে কাজে লাগিয়ে 'সমন্বিত কৃষি উদ্যোগ' নিয়ে কৃষিকাজ করছেন এমএ জাহাঙ্গীর নামের এই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী। এতে একদিকে তো পরিবারের চাহিদা মিটছেই, অন্যদিকে উৎপন্ন ফসল বিক্রি করে মিলছে আর্থিক সচ্ছলতাও।

জানতে চাইলে এমএ জাহাঙ্গীর বলেন, করোনা সংক্রমণের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হওয়ায় মার্চ মাসেই বাড়ি চলে আসি। মাস খানেক সময় অপেক্ষা করার পর যখন বুঝতে পারি যে ক্যাম্পাস খোলার কোনো সম্ভাবনা দেখছি না তখন কোনো একটা উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা করি। ঠিক তখন পিতার কৃষি কাজে সহযোগিতা করার পাশাপাশি নিজেই বিভিন্ন ধরনের সব্জি চাষ শুরু করি এবং এখনো তা অব্যাহত রয়েছে। এই কাজে আমার ছোট দুই ভাই সময় দিয়ে আমারে সহযোগিতা করছে। এই মৌসুমে সব্জির বাজার তুলনামূলক ভালো থাকায় এখান থেকে সাফল্য পেয়েছি অনেকটাই এবং আরও বড় সাফল্য পাওয়ার সম্ভাবনাও দেখছি।

জাহাঙ্গীর বলেন, বর্তমানে শীতকালীন তিনটি সবজির দিকে মনোযোগ দিচ্ছি। শসা, ফুলকপি, টমেটো এ তিনটি নিয়ে কাজ করছি। মানুষের কাছ থেকে জমি চুক্তিতে নিয়েছি। কিছু জমিতে শসা চাষ করেছি। একটাতে ফুলকপি এবং বাকিগুলোতে টমেটোর চাষ শুরু করেছি। তবে মূল মনোযোগ শসা চাষের দিকেই। কারণ আমার কাছে সময় খুব কম, অন্যদিকে শসার ফলনও দ্রুত হয়। পাশাপাশি অন্যান্য জমিতে চিচিঙ্গা, লাউ, পাটশাক, লালশাকের আবাদও আছে। এখান থেকেও বড় সফলতার সম্ভাবনা রয়েছে।

তার পরিকল্পনা জানিয়েছেন জাহাঙ্গীর। তিনি বলেন, বড় আকারের মুরগি ও গরুর ফার্ম দেয়ার চিন্তা করেছি। যেখানে কয়েকজন শ্রমিকও কাজ করতে পারবে। সাথে মাছের চাষও থাকবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী অনেক অর্থের প্রয়োজন। তাই এই অর্থ হাতে আসলেই পরিকল্পনা মোতাবেক কাজ শুরু করব। ভালো একজন উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন সবসময়ই দেখি। শিক্ষা আর অভিজ্ঞতাকে একসাথে কাজে লাগাতে পারলে সফল হওয়া সম্ভব, ইনশাআল্লাহ।

সম্প্রতি জাহাঙ্গীরের সবজি চাষের জমি পরিদর্শন করেছেন সুখিয়া ইউনিয়নের কৃষি অফিসার মো. আফাজ উদ্দীন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, জাহাঙ্গীরের পরিবার আমার পরিচিত। তার পিতা একজন সফল কৃষক। করোনাকালে জাহাঙ্গীরের বিশ্ববিদ্যলয় বন্ধ থাকায় সে অবসর সময় বিভিন্ন ধরনের কৃষি কেন্দ্রীক উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছে। এটি প্রসংশনীয় একটি উদ্যোগ। আমি তার কৃষি জমি পরিদর্শন করেছি এবং আবারও দেখে আসবো। সরকারিভাবে একজন কৃষককে যে সকল সুযোগ-সুবিধা দেওয়া সম্ভব, আমরা জাহাঙ্গীরকে সেটা দেওয়ার চেষ্টা করব।

আগামীনিউজ/এএইচ

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে