Dr. Neem on Daraz
Victory Day

করোনার বিধিনিষেধে রিক্সা চালকদের করুণ অবস্থা!


আগামী নিউজ | প্রভাত আহমেদ প্রকাশিত: এপ্রিল ১৫, ২০২১, ০৪:৫৯ পিএম
করোনার বিধিনিষেধে রিক্সা চালকদের করুণ অবস্থা!

ঢাকাঃ রাজধানীর শান্তিনগর মোড়। সারি সারি রাখা ১৫-২০টি রিকশা। পেছনের দুই চাকা নিচে, সামনের চাকা ওপরে। একটু দূরে রিকশাচালকরা ৫-৭ জন করে দাঁড়িয়ে আছেন। মুখে মাস্ক থাকলেও চেহারার উদ্বেগ বোঝা যাচ্ছে। নিচু স্বরে নিজেদের মধ্যে কথা বলছেন।

এমন চিত্র বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) সকালের। এসব চালকরা করোনায় আক্রান্ত নয়। তবে চলমান সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। 

সরেজমিনে দেখা যায়, রিকশা নিয়ে বের হওয়ার পর এগুলো আটক করা হয়। পরে রিকশাগুলো উল্টো করে রাখে পুলিশ। একবার ধরলে ঘণ্টাখানেকও আটকে রাখা হচ্ছে। এরপর রিকশা বের না করার শর্তে ছেড়ে দেওয়া হয়।

জয়নাল মিয়া নামের এক রিকশাচালক জানান বলেন, বাজার, ব্যাংকসহ অনেক অফিস খোলা। তাদের জন্য তো রিকশা লাগবে। কিন্তু পুলিশ আমাদের কোনোভাবেই বের হতে দিচ্ছে না। মোড়ে মোড়ে রিকশা আটকে রাখা হচ্ছে। রিকশার সিট নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমরা দিন আনি দিন খাই। রিকশা না চালালে কীভাবে সংসার চলবে?

উল্টে থাকা রিকশার পাশে কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন লিটন মিয়া নামের আরেক চালক। তিনি জানান, পুলিশ আজ রিকশা চালাতেই দিচ্ছে না। তারা নিজেরা গাড়িতে চলাফেরা করেন। গাড়ি না থাকলে তারাও রিকশায় যাতায়াত করেন। আমাদের মানবিক দিক বিবেচনা করে অন্তত সারাদিন রিকশা চালানোর অনুমতি দেওয়া হোক।

শান্তিনগরের অগ্রণী ব্যাংকের সামনে চোখ মুছছিলেন কাজল নামের আরেক চালক। তিনি বললেন, সারাদিন বাড়িতেও থাকতে পারি না। আবার টাকা ছাড়া বাড়িতেও যেতে পারি না। দিনের টাকায় দিন চলে। এভাবে জুলুম না করে আমাদের চলতে দেওয়া হোক।

করোনার সংক্রমণ রুখতে সরকার দেশে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে। ১৪ এপ্রিল থেকে এই বিধিনিষেধ কার্যকর হয়েছে। এর আগে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে গত ৫ এপ্রিল থেকে সাতদিনের জন্য গণপরিবহন বন্ধসহ মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণে ১১ দফা কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল সরকার। দুদিন পরে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে সকাল-সন্ধ্যা গণপরিবহন চলার অনুমতি দেওয়া হয়। এর একদিন পর খুলে দেওয়া হয় শপিংমলও। এতে সরকারের সিদ্ধান্তহীনতা নিয়ে সমালোচনা করেন বিশেষজ্ঞরা।

এরই মধ্যে করোনায় সংক্রমণ ও মৃত্যু দুটোই বাড়তে থাকে। প্রতিদিন মৃত্যু ও সংক্রমণের নতুন রেকর্ড হচ্ছে দেশে। এ পরিস্থিতিতে জাতীয় সংসদে দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন ‘প্রয়োজনে আরও কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারে সরকার’।

এরপর গত ৯ এপ্রিল সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ১৪ এপ্রিল থেকে ‘কঠোর ও সর্বাত্মক লকডাউন’ দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেন। পরে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীও একই ইঙ্গিত দেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১২ এপ্রিল ১৩ দফা নির্দেশনা দিয়ে ১৪ এপ্রিল থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার।

আগামীনিউজ/প্রভাত

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে