Dr. Neem on Daraz
Victory Day

জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশের দৃষ্টান্ত


আগামী নিউজ | নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: জানুয়ারি ২১, ২০২১, ১২:২৯ এএম
জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশের দৃষ্টান্ত

ফাইল ছবি

ঢাকাঃ সমাজের বৃহত্তর অংশকে উপেক্ষা করে যারা বিভিন্ন কারণে সহিংসতা প্রচার করে বা সহিংস আক্রমণ চালায়, তারাই জঙ্গি। ধর্মের নামে, ধর্মের অপব্যবহার করে জঙ্গিরা বিশ্বব্যাপী নিরীহ মানুষের ওপর যে বর্বরতা চালাচ্ছে তা চরম নিন্দনীয়।

বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার একটি হচ্ছে এই  “জঙ্গিবাদ”। গোটা দুনিয়া জুড়ে এটি আজ মহামারী আকার ধারণ করেছে। একের পর এক সন্ত্রাসী হামলায় ধরণী যেন কেঁপে উঠছে থেমে থেমেই! বহির্বিশ্বে জঙ্গিবাদ ব্যাপারটি বেশ আগে থেকে চলতে থাকলেও বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের সূচনা হয় ২০০১ সালের একটি বিশেষ গোষ্ঠী জোট ক্ষমতায় আসার পরপরই। সে কি এক ভয়ঙ্কর অধ্যায়ের সূচনা!

বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা যেন হঠাৎ করেই পরিণত হয় মৃত্যুপুরীতে! সেই বিশেষ গোষ্ঠীর মদদে উত্থান হয় বাংলা ভাইয়ের। গঠিত হয় জেএমবি। তারপর একে একে চলে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা, উদীচী হামলা, তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ সহ অন্যান্য দলের নেতা কর্মীদের উপর জঙ্গি হামলা সহ প্রতিটি জেলায় এক সাথে এবং প্রায় একই সময়ে ভয়াবহ বোমা বিস্ফোরণের মত বীভৎস জঙ্গি হামলা।

এরপর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম শুরু হওয়ার পরপরই দেশের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয় এবং নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। ২০১৪ সালে জাতীয় নির্বাচনের আগে ও পরে বিএনপি-জামায়াতচক্র জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ধর্মীয় সংখ্যালঘুসহ আপামর জনগণের ওপর চালিয়েছে নির্মম আক্রমণ, পুড়িয়েছে মানুষ-যানবাহন। 

ধর্মীয় উন্মাদনায়  ব্লগার-লেখক-প্রকাশকদের ওপর আক্রমণ হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং ধর্মযাজকদের ওপর হয়েছে আক্রমণ। বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়েছে অসংখ্য জঙ্গি এবং জব্দ হয়েছে প্রচুর গোলাবারুদ।

দেশের ইতিহাসে স্বরণকালের ভয়াবহ জঙ্গি হামলা হয় হলি আর্টিজানে। এই জঙ্গি হামলার সময় অনেকেই মনে করেছিল বাংলাদেশ এককভাবে এর সমাধান করতে পারবে না। কিন্তু আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেখান থেকে জঙ্গি নির্মূল করতে সক্ষম হয়। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’ 

আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বদ্ধপরিকর। সন্ত্রাস দমনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে সন্ত্রাস দমন আইন প্রণয়ন করে। বিশ্বায়নের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সন্ত্রাস মোকাবিলার জন্য ২০১২ এবং ২০১৩ সালে এই আইনটির সংশোধন করা হয়। জননেত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে জঙ্গি অর্থায়ন বন্ধের জন্য প্রণয়ন করা হয় অর্থপাচার আইন ২০১২। এছাড়া অন্যান্য দেশের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রণয়ন করা হয় পারস্পরিক ফৌজদারি সহায়তা আইন বা Mutual Legal Assistance in Criminal Matters Act ২০১২। জননেত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বেই সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে সব ধর্মের সমান মর্যাদা নিশ্চিত করা হয়েছে এবং লাখো অনগ্রসর কওমি মাদ্রাসার ছাত্রদের সমাজের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করার জন্য কওমি শিক্ষা ব্যবস্থাকে দেওয়া হয়েছে স্বীকৃতি।

সন্ত্রাসীদের কোনও ধর্ম নেই। ইসলাম শান্তির ধর্ম, ইসলাম জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বা হত্যাকাণ্ড সমর্থন করে না।

ইসলাম ধর্মে ধর্ম নিয়ে জোর জবরদস্তি না করার কথা বলা হয়েছে, অন্য ধর্মকে সম্মান প্রদর্শন করতে বলা হয়েছে। একজন প্রকৃত মুসলিম, প্রকৃত ধার্মিক কখনো নিরীহ মানুষদের হত্যা করতে পারে না। কিন্তু আমরা দেখছি, সমগ্র বিশ্বে এমনকি আমাদের দেশের কিছুসংখ্যক ব্যক্তি এবং গোষ্ঠী তাদের হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য ইসলামের অপব্যাখ্যা দিয়ে সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদকে উসকে দিচ্ছে, যা কেড়ে নিচ্ছে অসংখ্য প্রাণ। ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে যুব সমাজকে বিপথে নিয়ে যাওয়ার ষড়যন্ত্র আমাদের সমৃদ্ধি ও শান্তির পথে অন্তরায়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যোগ্যতা, দূরদর্শিতা আর সঠিক নেতৃত্বগুণের জন্য আজ বিশ্বব্যাপী সমাদৃত একজন রাজনীতিবিদ। দেশ পরিচালনায় তিনি সাহস ও কর্মদক্ষতায় অনন্য। আর দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূলের মাধ্যমে তিনি বর্তমানে বিশ্বশান্তির দূত ও মানবপ্রেমী হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছেন। বর্তমান সরকারের প্রথম মেয়াদে(২০০৯-২০২১) জঙ্গিবাদ দমনে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সকল ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁরই গৃহীত কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আজ জঙ্গিমুক্ত রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।

আগামীনিউজ/এএইচ 

 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে