Dr. Neem on Daraz
Victory Day

করোনা:প্রধানমন্ত্রীর আশঙ্কাই তাহলে সত্যি হতে চললো!


আগামী নিউজ | কামরুল হাসান শিশির প্রকাশিত: এপ্রিল ৯, ২০২০, ০১:৪০ পিএম
করোনা:প্রধানমন্ত্রীর আশঙ্কাই তাহলে সত্যি হতে চললো!

ঢাকা: প্রাণঘাতী এ করোনার ভাইরাসের ভয়াবহতা আগেই অনুধাবন করতে পেরেছিলেন সরকার প্রধান শেখ হাসিনা। দেশের আগামী দিনের ভবিষ্যৎ কারিগরদের বাঁচাতে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেন গত মার্চের ১৭ তারিখ। একে একে সব কিছু আনুষ্ঠানিক বন্ধ ঘোষণা করেন গত মার্চের ২৬ তারিখ থেকে।

তিনি আশঙ্কা করেছিলেন এ রোগের বিস্তার লাভ করলে তা দেশে মহামারী আকার ধারণ করবে। তাই আগে থেকেই সবাইকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার নির্দেশ দেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে মোতায়েন করেন সেনাবাহিনী। জেলা প্রশাসনের সাথে দু দফা (চলমান) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দিয়েছেন দিক নির্দেশনা। রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি উচ্চারণ করেছেন হুশিয়ারী। দরিদ্র মানুষের জন্য উন্মুক্ত করলেন ১০ টাকা কেজি চাল, টিসিবির ট্রাক সেল, বাড়ি বাড়ি খারার সহায়তা পৌঁছানোর মতো নির্দেশনাও দিলেন যাতে সবাই ঘরে থাকে।

গার্মেন্টস খোলা থাকলে রাজধানী ঢাকাসহ চারপাশের এলাকার করোনা পরিস্থিতি আরো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব ধরণের শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশনা দেয়ার পরও গার্মেন্টস বন্ধ না করা ও শ্রমিকদের বন্ধের মধ্যে ঢাকায় আনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার ৬ এপ্রিল মন্ত্রীসভা বৈঠকে গার্মেন্টস কাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, এ সকল শ্রমিকদের মাধ্যমে সারা দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিস্তার লাভ করবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই পরিস্থিতিতে সমন্বয় ছাড়া গার্মেন্ট খোলা এবং শ্রমিকদের ঢাকায় নিয়ে আসার ফলে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঘটছে।  তিনি বলেন, প্রথমে গার্মেন্টসগুলো কারখানা ছুটি দেওয়া হলে শ্রমিকরা বাড়ি চলে যায়। সরকার সাধারণ ছুটির সময়সীমা বাড়ানো হলো কিন্তু মালিকরা সেটি না দেখে ৫ এপ্রিল কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত নিয়ে শ্রমিকদের ঢাকায় নিয়ে আসেন।

বাস্তব চিত্রেও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাংলাদেশ এ পর্যন্ত যে ২১৮ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে তার মধ্যে ১২২ জনই ঢাকার বাসিন্দা। এবং এদের বেশির ভাগই রাজধানীর মিরপুর, বাসাবো,রামপুরার মতো গার্মেন্টস অঞ্চল খ্যাত এলাকার বাসিন্দা। এর পরেই আছে শিল্পাঞ্চল খ্যাত জেলা নারায়নগঞ্জ।

বাংলাদেশের ও আন্তর্জাতিক মিডিয়া করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা তুলে ধরে সকলকে ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছেন। সরকার বিভিন্ন সচেতনতামূলক প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন। অথচ কারো মধ্যে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। কি শহর, কি গ্রাম! রাস্তাঘাট, বাজার, দোকান, পাড়া-মহল্লা সর্বত্রই যেনো মানুষের উৎসব। কারো মধ্যে বিন্দু মাত্র আতঙ্ক বা ভয়ের ছাপ লক্ষ্য করা যায় না।

কিছু দিন আগে ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের (হু) এক প্রতিবেদনে বলেছিলো, করোনাভাইরাসের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। তারা দাবি করেছে বাংলাদেশে প্রায় ২০ লাখ লোক আক্রান্ত হতে পারে এ ভাইরাসে। সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান ওই প্রতিবেদনে।

গত ৬ এপ্রিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদ হতাশার সুরে বলেছিলেন, দেশে এ ভাইরাস ব্যপক ভাবে ছড়িয়ে পড়লে তা সামাল দেয়ার সক্ষমতা আমাদের নাই। তিনিও তখন সবাইকে ঘরে থাকার জোড় অনুরোধ জানান।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের সাবেক প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যাক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ বি এম আব্দুলাহ বলেন, জণগণ যাদি নিজে থেকে সচেতন না হয় তাহলে প্রশাসনকে জোড় প্রয়োগ করতে হবে। প্রয়োজনে এলাকা নির্ধারণ করে কারফিউ জারি করতে হবে। মূলকথা নিরাপদ দুরত্বের জন্য যা যা করা দরকার সবই করতে হবে জনগণের ভালোর জন্য।

এখন প্রশ্ন আসে সরকার প্রধান যাদের জন্য এতো কিছু করলেন সেই জনগণ কতোটুকু সচেতন? তাহলে কি বলা যায়, প্রধানমন্ত্রীর আশঙ্কাই সত্যি হতে চললো!

আগামী নিউজ/কামরুল/ডলি/নাঈম

 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে