Dr. Neem on Daraz
Victory Day
করোনা পরবর্তী অর্থনীতি

বড় শিল্পের পাশাপাশি কৃষি ও এসএমইতে নজর দেয়া তাগিদ বিশেষজ্ঞদের


আগামী নিউজ | সাইফুল হক মিঠু প্রকাশিত: এপ্রিল ৩, ২০২০, ১২:৪৫ পিএম
বড় শিল্পের পাশাপাশি কৃষি ও এসএমইতে নজর দেয়া তাগিদ বিশেষজ্ঞদের

ঢাকা: মহামারি করোনাভাইরাসে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে করোনাভাইরাসের বড় ধরণের নেতিবাচক প্রভাব এরই মধ্যে পড়তে শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলেছে, সারক বিশ্ব চরম আর্থিক মন্দার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
বৈশ্বিক অর্থনীতির পাশাপাশি দেশীয় অর্থনীতিও পড়বে বড় বিপর্যের মুখে।

তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) জানিয়েছে করোনার প্রভাবে ক্রেতারা ২৯১ কোটি মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় দাঁড়ায় ২৪ হাজার ৭৩৫ কোটি টাকা, বিনিময় হার ৮৫ টাকা ধরে) তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্রয়াদেশ বাতিল করেছে। একই সঙ্গে কমেছে চীন, ইউরোপ ও আমেরিকানির্ভর আমদানি-রপ্তানি। এছাড়া প্রবাসী শ্রমিকরা দেশে ফেরত আসায় কমছে রেমিট্যান্স।

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বলছে করোনার ভয়াল গ্রাসে চাকুরি হারাতে পারেন দেশের কয়েক লাখ মানুষ।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন করোনার প্রভাবে দেশের অর্থনীতির ক্ষতি মোট দেশজ আয়ের (জিডিপি) ৫ শতাংশ হতে পারে। যা টাকার অংকে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার কম বেশী হতে পারে। বিশ্লেষকরা বলছেন,অর্থনীতির এই ক্ষতি পোষাতে বড় ও শিল্পের পাশাপাশি
কৃষি ও এসএমইতে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

করোনা মোকাবেলা ও সম্ভাব্য অর্থনৈতিক প্রভাব থেকে উত্তরণের পরিকল্পনা অর্থমন্ত্রী আগামী নিউজ ডটকমকে বলেন আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি, আর্থিক সহায়তার প্যাকেজ প্রণয়ন, সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি ও মুদ্রার সরবরাহ বৃদ্ধি করনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক এ বিরূপ প্রভাব উত্তরণে বেশ কিছু অবিলম্বে, স্বল্পমেয়াদী ও মধ্যমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার একটি প্রণোদনা প্যাকেজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য বিনামূল্যে ঘর, ৬ মাসের খাদ্য এবং নগদ অর্থ প্রদান করা হবে। বিনামূল্যে ভিজিডি, ভিজিএফ এবং ১০ টাকা কেজি দরে চাল সরবরাহ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। শিল্প উৎপাদন এবং রপ্তানি বাণিজ্যের আঘাত মোকাবিলায় কিছু আপৎকালীন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের ( পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ আগামী নিউজ ডটকমকে বলেন,  দূর্যোগের ফসলের সাপ্লাই চেইন ঠিক রাখতে হবে। আর তা করতে হলে কৃষকের স্বাস্থ্য সুরুক্ষার বিষয়টা নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে বড় শিল্পের মতন কৃষককে প্রণোদনা দিতে হবে। কৃষককে বীজ সহ সহজ শর্তে ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

খলীকুজ্জমান বলেন, এই মাস থেকে আগাম বোরো মাঠে আসেবে। আর মে ও  জুন মাসে সারা দেশজুড়ে বোরো ধান কাটা হবে। দেশে চালের ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ আসে বোরো থেকে।  কিন্তু সেই সময়ে আবহাওয়া কৃষকের অনুকূলে থাকেনা। গত বছর ও বজ্রপাতে অনেক কৃষক মারা গেছেন। এবার করোনা আছে। এই বার কৃষককে বেশি সুরুক্ষা দিতে হবে।

তিনি আরো বলেন, করোনার কারণে ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তারা বেশি ঝুকির মধ্যে পড়বে। এসব উদ্যোক্তাদের ঋণ নিয়েই ব্যবসা শুরু করে। তাদের ঋণ আদায় পিছিয়ে দিতে হবে। আরও ঋণ লাগলে সেটা তাকে সহজ শর্তে দিতে হবে। প্রয়োজনে তাদের অনুদান দিতে হবে।

করোনা পরবর্তী সময়ে দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে করনীয় কি এ প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, অর্থনীতির ক্ষতি মোকাবেলায় এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী রফতানিমুখী খাতের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। তবে অনান্য খাতেও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এসএমই, কৃষি, পর্যটন, হোটেল-রেস্ট্রুরেন্ট সহ স্বল্প পুঁজির ব্যবসায় সরকারের বিশেষ নজর দিতে হবে।

তিনি আরো বলেন, সব খাতকেই বিভিন্নভাবে ক্ষতিপূরণ প্রনোদনা দিয়ে সরকারের সাহায্য করা উচিৎ। সেটা ব্যাংকের ঋণ মওকুফ করেই হোক কিংবা শ্রমিকদের বেতন দিয়েই হোক। দুইয়ের সমন্বয়েও সেটা করতে পারে সরকার। সেটা করা গেলেই করোনার ধাক্কা সামাল দেওয়া সম্ভব হবে।


আগমিী নিউজ/মিঠু /ডলি/নাঈম

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে