Dr. Neem on Daraz
Victory Day

ছাত্রলীগের প্রতি ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীর আবেগঘন স্ট্যাটাস


আগামী নিউজ | ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২১, ০৩:৪৭ পিএম
ছাত্রলীগের প্রতি ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীর আবেগঘন স্ট্যাটাস

ছাত্রলীগের প্রতি ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীর আবেগঘন স্ট্যাটাস: ফেসবুকে ভাইরাল -

ঢাকঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ৭ কলেজের শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে হামলা না করার আহ্বান জানিয়ে করা আবেগঘন স্ট্যাটাস ভাইরাল হয়েছে ফেসবুকে। এবারের আন্দোলনে কোনো ছাত্র-ছাত্রীদের গায়ে যেন একটি ফুলের টোকাও না পড়ে সেই আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মারুফ।

আব্দুল্লাহ আল মারুফের স্ট্যাটাসটা হুবহু তুলে ধরা হলো...
প্রিয় ছাত্রলীগের ভাই বন্ধুরা,
এবার অন্তত আমাদের ৭ কলেজের ভাই-বোনদের লাঞ্চিত করো না। অনেক যাতনা নিয়ে তারা পরীক্ষা গুলো দিচ্ছে। প্রতিবারই ছাত্রদের এমন যৌক্তিক আন্দোলন গুলোতে ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দেয়া হয়। আসলে যারা ছাত্রলীগ করে তারাও তো নিশ্চয়ই আমাদের সাথেই ক্লাস করে, পরীক্ষা দেয়, হলে থাকে। তাও কেন বার বার মিথ্যা আর উল্টো পাল্টা অভিযোগ এনে অযথাই ছাত্রছাত্রীদের মারধর করে ?
আন্দোলনে যাওয়ার অভিযোগে কেন পত্রিকা আর ফুটেজ খুজে খুজে বের করে হলে নির্মম নির্যাতন চালায় ?

কেন হলের ছাদ থেকে কিংবা তিন চার তলা থেকে ফেলে দিয়ে আহত করে ড্রেনে ফেলে দেয় ? কেন পুলিশকে দিয়ে থানায় নিয়ে রিমান্ডের নামে আব্বা থেকে টাকা খোজে ? আব্বার চাকরি নেই সেই কবে থেকে। এখন তো উনিই আমার কাছে প্রত্যাশা করে বসে আছে। অথচ আজো রিমান্ড বাচাতে বড় ভাইকে দিয়ে গরু বেচার ৪০ হাজার টাকা নিয়ে আব্বা পুত্র সমান ছাত্র নেতাদের পিছে পিছে ঘুরে ঘুরে বলছে আমার মানিককে পুলিশ ছেড়ে দিবে তো বাবা? অথচ বাবার এই মানিককে পুলিশ না এসব নামধারী ছাত্রনেতারা ই ধরেছে।

আচ্ছা তারা কি বুঝে না, পরীক্ষা হলে তো যে নেতার অনার্স কিংবা মাস্টার্স শেষ হচ্ছে না সেও চাকরী পাবে, বড় বড় টেন্ডারের সুযোগ পাবে। তাও কেন বার বার তারা আমাদের মত সাধারণ ছাত্রদের মারে....!! তাও কেন বারবার খুব নগন্য দামে তারা বিক্রি হয়ে যায় !! প্লিজ এবার আর আমার ভাই বোনদের একটা ফুলের টোকাও তোমরা দিও না।

হে ছাত্রলীগের নেতা, তুমি কি জানো বাবা হারা সন্তানদের জন্য ৪ বছরের স্নাতক ৭ বছর লাগা একটা অভিশাপ। তুমি কি জানো প্রতিদিন মা আল্লাহকে ডেকে বলে হে আল্লাহ, আমার সন্তানকে তুমি রিজিকের ব্যবস্থা করে দাও। তুমি কি জানো দীর্ঘ ৩০ বছর বাবা চাকুরী করলেও, বাবাকে ৫০০ টাকা দিয়ে ডাক্তারের ভিজিটে আমি এখনো নিয়ে যেতে পারিনি। বোনটা তাকিয়ে থাকলেও আমি বারবার তাকে দেখে মুখ লুকাই। গতমাসে ছেলে পক্ষ এসেছিল সব ঠিকঠাক। তাদের একটাই চাওয়া ছেলে এত বড় চাকরি করে শ্বশুরবাড়ীতে ১০০ লোক খাওয়াতে চায়। আমি হু হু ব্যাপার না বলে যখন পাত্র পক্ষকে সায় দিচ্ছিলাম বাবা আমার দিকে তাকিয়ে। আমি জানিনা এই তাকানো ভরসার নাকি অভিশাপের !!

প্রিয় ছাত্রলীগের ভাই বন্ধুরা, এবার অন্তত আমাদের মেরো না। বিশ্বাস কর, কথা দিচ্ছি অর্নাস কিংবা মাস্টার্স শেষ হোক আমাদের পিঠ তোমাদেরকে বিছিয়ে দিবো। তোমার চাবুকের আঘাতে আমার পিঠকে ক্ষত বিক্ষত করে দিও। ইংরেজদের পিটুনির ক্ষত আমার দাদার এখনো শুকায়নি। পাকিস্তানীদের পিটুনির ক্ষত এখনো আমার বাবার পিঠে।

আমি না হয় তোমার পিটুনিই খেলাম। আমার কোন দুঃখ নেই, কস্ট নেই। তুমি তো মুজিবের সৈনিক তোমার চাবুক কিংবা চাকুর আঘাত আমি মুজিবের আশীর্বাদ হিসেবেই মেনে নিবো। প্লিজ এবার অন্তত আমাকে মেরো না।

 

আগামীনিউজ/এএইচ   

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে