Dr. Neem on Daraz
Victory Day

মনমোহন দত্তের মরমী সঙ্গীতের প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা-৯


আগামী নিউজ | সাঁঈজি সিরাজ সাঁঈ প্রকাশিত: মার্চ ৫, ২০২১, ০৩:০৪ পিএম
মনমোহন দত্তের মরমী সঙ্গীতের প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা-৯

মলয়া সংগীতের জনক, মরমী সাধক, কবি, বাউল ও সমাজ সংস্কারক মনমোহন দত্ত। ছবিঃ সংগৃহীত

আজ একটি রঙ্গের কথা বলতে এলেম,
শুনতে যদি ভালো লাগে।
গাঙ্গ পার হয়ে বলব আমি
ভয় আমি আমার বুক ঠুকে।
পড়ছি আমি এ,বি,সি,ডি, হাতি দিছি সোনার আংটি
চেহারাখান পরিপাটি, চেইন ঘড়ি ঝুলছে বুকে।
চোঁখ থুয়ে হয়েছি কানা, চশমা চোঁখে বাবুয়ানা,
স্ত্রীর গায়ে সোনার গয়ণা, ছেড়া তেনা দেই মাকে।
মনে মনে করি বিচার জ্ঞান ছিলনা বাপ-দাদার
শব্দ শুনলে শঙ্খ ঘন্টার, অমনি ফেলি কান ঢেকে।
দেখলে পরে বাউলের দল, হেট মুখ করি বাকি কেবল
সাহেব বিবির চরণ কমল, পাই যদি হায় রাখি বুকে।
বেদ বেদান্ত চাষার গান, অলীক সাহেব দেয় প্রমাণ,
হায় বিবিজান, হায় মেহেরজান, রায় বাহাদুর কয় লোকে।
হেয়ালি প্রবন্ধে কই, বলো দেখি আমি কে হই,
মনোমোহন কয় হবে ঠিকই, অসুরের মতো লাগে।

প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যাঃ
মানুষ প্রজ্ঞাবান না হলে কেবলমাত্র বাইরের পোষাক আসাকের মাধ্যমে নিজেকে জাহির করতে চায়। তার নিজের মধ্যে যে প্রজ্ঞাবান সত্ত্বা আছে তা কোন অবস্থাতেই বুঝতে পারে না। সে তখন নিজেকে সমাজের বস্তুগত দিকে বাবুয়ানা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। ভালো পোষাক পরিধান করে এবং হাতে আংটি ঘড়ি এবং চশমা ব্যরহারের মাধ্যমে বুঝাতে চায় সে সমাজের মধ্যে একজন গন্যমান্য ব্যক্তি। স্ত্রীর গায়ে সোনার গয়না দেই অথচ মাকে অবমূল্যায়ন করে। এমনকি কোন ধর্মীয় কার্যকলাপকে অগ্রাহ্য করে। যে সমস্ত প্রজ্ঞাবান সত্ত্বা নিজেকে মুক্তির পথে ধাবিত করে তাদের সে উপেক্ষা করে। মানুষের মধ্যে সাধনার মাধ্যমে যখন প্রজ্ঞার সৃষ্টি হয় তখন সে প্রকৃত পক্ষে মানুষ হিসেবে নিজেকে আখ্যায়িত করতে সক্ষম হয়। এই প্রজ্ঞাবান সত্ত্বা নিজের ও জগতের জন্য এক মূল্যবান সম্পদ। জগতে এইসব প্রজ্ঞাবান সত্ত্বার দ্বারা প্রশান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। তারা যেমন নিজের মধ্যে প্রশান্তি সৃষ্টি করে তেমনিভাবে সমাজের তথা বিশ্বের মধ্যেও প্রশান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তার নির্দেশিত বাণী প্রদান করে।

ভাগ্যক্রমে সমাজের যেসব সত্ত্বা এইসব প্রজ্ঞাবান ব্যক্তির শরণাপন্ন হয় তারাও সাধনার মাধ্যমে নিজের মধ্যে প্রজ্ঞার উন্মেষ ঘটায় এবং সকলের নিকট অনুকরণীয় হয়ে উঠে। আর যেসব ব্যক্তি প্রজ্ঞাবান সত্ত্বার আদেশ নিষেধকে উপেক্ষা করে তারা দেহধারী মানুষ হলেও মনোজগতে তারা এক একজন অসুর বা রাক্ষস রূপে বিরাজ করে।
 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে