Dr. Neem on Daraz
Victory Day

লালনগীতির প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা-৮৫


আগামী নিউজ | সাঁঈজি সিরাজ সাঁঈ  প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩১, ২০১৯, ০৮:৫৯ এএম
লালনগীতির প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা-৮৫

শিরনি খাওয়ার লোভ যার আছে।
সে কি চেনে মানুষ রতন দরগা তলায় মন মজেছে॥
সাধুর হাটে সে যদি যায়
আঁট বসে না কোন কথায়
মন থাকে তার দরগা তলায়
বুদ্ধি তার পেঁচোয় পেয়েছে॥
প্রতিমা গড়ে ভাস্করে
মনপ্রাণ প্রতিষ্ঠা করে
আবার গুরু বলে তারে
এমন পাগল কে দেখেছে॥
মাটির পুতুল গড়ে নাচায়
আপনি মারে আপনি বাঁচায়
তাই জেনে স্বয়ং হতে চায়
লালন কয় তার সকল মিছে॥

প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা : মানুষের মন সবসময় বস্তুমুখী। বস্তুই তার জীবনের সকল কিছু। বস্তুময় আকর্ষণের কারণে মানুষের মনে সবসময় বস্তুর প্রতি এক মহা তৃষ্ণা কাজ করে। সেই কারণে সে দরগা তলাতেও বস্তুময় শিরনি পাওয়ার লোভে ব্যস্ত থাকে। 

মানুষের মনে যখন বস্তুর তৃষ্ণা থেকে দুঃখ পেয়ে প্রজ্ঞা পেতে চায় তখন সে প্রকৃত প্রজ্ঞাময় মানুষ রতন খোঁজ করে। বস্তু আকর্ষণ আবার মানুষ রতন তথা প্রজ্ঞাবান ব্যক্তির এক ভালোবাসা একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠা হয় না। যে সাধনার দ্বারা প্রজ্ঞাবান ব্যক্তির সন্ধান করে এবং তার নির্দেশনা মোতাবেক সাধনা করে তখন তার মধ্যে প্রজ্ঞার শক্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। বস্তুময় মন নিয়ে সাধনা করা যায় না। বরং যে বস্তুর দুঃখ থেকে নিজেকে সাধনার প্রতি আস্থাবান হয় তখন সে সাধনার দ্বারা প্রজ্ঞা অর্জন করতে সক্ষম হয়। সেই প্রজ্ঞার শক্তি দ্বারা তখন সে বস্তুর সঙ্গে সহাবস্থান করতে সক্ষম হয়।

ফলে প্রজ্ঞা না থাকার কারণে নিজেই মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরি করে আবার সেই প্রতিমাকেই প্রণাম করে। এই যে অজ্ঞান ভাব মানুষকে দুঃখে ফেলে দেয়, তাই মানুষ যখন প্রজ্ঞাবান জ্ঞানী সত্ত্বার নিকট থেকে নির্দেশ পেয়ে সাধনার শক্তিতে নিজের মধ্যে প্রজ্ঞার সৃষ্টি করে এবং নিজেকে দুঃখ থেকে মুক্ত করতে পারে।

০৭-০৬-২০১৭ 

রাতঃ ৯:১০

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে