Dr. Neem on Daraz
Victory Day

লালনগীতির প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা-৮২


আগামী নিউজ | সাঁঈজি সিরাজ সাঁঈ  প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৩, ২০১৯, ০৮:৪০ এএম
লালনগীতির প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা-৮২

যেখানে সাঁইর বারাম খানা।
শুনিলে প্রাণ চমকে উঠে দেখতে যেমন ভুজঙ্গনা॥
যা ছুইলে প্রাণে মরি
এ জগতে তাইতো করি
বুঝেও তা বুঝতে নারি
কীর্তি কর্মার কী কারখানা॥
আত্ম তত্ত্ব যে জেনেছে
দিব্য জ্ঞানী সেই হয়েছে
কুবৃক্ষে সুফল পেয়েছে
আমার মনের ঘোর গেল না॥
যে ধনে উৎপত্তি প্রাণধন
সেই ধনের হলনা যতন
অকালের ফল পাকায় লালন
দেখে শুনে জ্ঞান হল না॥

প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা: যেখানে মানুষের মধ্যে সাঁই নামক মহাশক্তির অবস্থান সেই স্থানকে সাঁইজী লালন শাহ নির্দেশ করেছেন। মহাশক্তি সাঁইর যে অবস্থান তা পৃথিবীর প্রতিটা অণু-পরমাণুতে বিরাজিত আছে। এই মানব দেহের মধ্যেও সেই শক্তির একটা অবস্থানগত স্থান আছে। আসলে যে শক্তি সর্বত্র বিরাজিত সেই শক্তিকে একটা নির্দিষ্ট স্থানে নির্ণয় করে সীমাবদ্ধ করে রাখা কঠিন কাজ। তবুও সাঁইজী লালন শাহ সেই শক্তিকে মানুষের মধ্যকার যে প্রজ্ঞার অবস্থান সেই স্থানকে নির্দেশ করেছেন। মানুষের মস্তিষ্ক যে রূপরেখা সেটা অনেকটা ভুজঙ্গের ন্যায়। যেখানে সাঁইয়ের বারামখানা।

পৃথিবীতে মানুষের চিন্তাচেতনার মধ্যে বস্তুর যে তৃষ্ণা বা আকর্ষণ তা তার শ্বাশত স্বভাব থেকে আলাদা করে ফেলে। প্রকৃত পক্ষে মানুষ যে মহাশক্তির শক্তিতে শক্তিশালী সে অবস্থা ভুলে গিয়ে সে সর্বদা বস্তুর দ্বারা আক্রান্ত হয়ে বস্তুমুখী অবস্থান করে। সেই কারণে সেই বস্তুর মধ্যেই তার মৃত্যু ঘটে। লালনের ভাষায় যা ছুঁইলে প্রাণে মরি এ জগতে তাইতো করি। আসলে বস্তুর প্রতি মহা তৃষ্ণার কারণে মানুষের প্রকৃত শক্তিমান অবস্থার স্খলন ঘটে। এটাই তার মৃত্যুসম।

তবে মানুষ যখন কোনো একজন প্রজ্ঞাবান ব্যক্তির সংস্পর্শে আসে এবং তার নির্দেশ মোতাবেক সাধনা করে তখন তার মধ্যে এক শক্তিময় প্রজ্ঞার সৃষ্টি হয়। সেই আত্মতত্ত্বের প্রভাবে সে দিব্য জ্ঞানী হয়।

০৬-০৬-২০১৭ 

সকালঃ ৭:৫৪

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে