Dr. Neem on Daraz
Victory Day

মনমোহন দত্তের মরমী সঙ্গীতের প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা-২৬


আগামী নিউজ | সাঁঈজি সিরাজ সাঁঈ প্রকাশিত: মার্চ ৩১, ২০২১, ০২:৩৫ পিএম
মনমোহন দত্তের মরমী সঙ্গীতের প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা-২৬

মলয়া সংগীতের জনক, মরমী সাধক, কবি, বাউল ও সমাজ সংস্কারক মনমোহন দত্ত। ছবিঃ সংগৃহীত

এ পার থেকে জানতে চায় মন, ও পারের খবর,
কি ছিলাম কি হবে শেষে, মরনের পর।
যাদেরে আদর্শ মানে, বাইবেলে বেদে কোরানে,
যার যার ভাবে তারা টানে, না মানে একে অপর।
পুরানে কয় জন্ম মৃত্যু, কর্মই তাহার হেতু,
কর্মফলে সঙ্গে চলে, নাহি পায় অবসর।
বাইবেলে কোরানে তার একদিনে করে বিচার।
বেহেস্ত দোজখে যেতে হবে, কেয়ামতের পর।
কৃষ্ণ ভক্ত বজ্র বাসি, শিব ভক্ত কৈলাস কাশী,
হরিনামে বৈকুন্ঠধাম, বৌদ্ধ পরৎপর।
যোগী কয় যোবেতে বসি, তারি সঙ্গে যাব মিশি,
দ্বৈত বাদী বলে হাসি, হব তারি অনুচর।
কেহবা ভাবে গোলক, চন্দ্র সূর্য গ্রহ লোক,
দেবলোক ভেবে শোক, নিবারে কার অন্তর।
কেহকয় জন্ম একবার, কেহ লক্ষ কোটি কয় বার।
আসা যাওয়া এ্যমিতে হয়, নানা যোনী নিরন্তর
লিঙ্গদেহ মুক্তি তরে, কেহ পিন্ড দান করে,
মনোমোহন কয় ভেবে দেখো, নহে অগোচর।
এক যদি সবার গোড়ে, সবাই যদি স্বীকার করে,
আদি অন্ত একই তবে, নাহি হবে স্বতস্তর।
মাটি দিয়ে কুম্ভকারে, ঘট আদি যত গড়ে,
এক হয়ে যায় ভাঙ্গলে পরে, নয়ন গোচর।
অখন্ড মন্ডলাকারে, যে নিত্য সে লীলা করে,
লীলা নিত্য এক করে, সাধক হয় অমর।


প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যাঃ
মানুষ মৃত্যুর পর কি হবে এ প্রশ্ন আজীবনের। জন্ম ও মৃত্যুর মধ্যকার সেতু বন্ধন না থাকার কারণে মানুষ ধর্মীয় গ্রন্থের বাণীতেই বিশ্বাস করতে বাধ্য হয়। সে কারণে বেদ বা ত্রিপিটক গ্রন্থে বলা হয়েছে মানুষের কর্মফল অনুযায়ী মৃত্যুর পর পুনরায় জন্ম ঘটবে। যখন কর্মফলকে রোধ করা যায় তখন তার আর জন্ম ঘটে না। তখন সেই শক্তি আদি শক্তির সাথে পুনরায় মিশে যায়।

কোরান বা বাইবেলে মানুষের মৃত্যুর পর কিয়ামতের দিন বিচার করে সে বেহেস্ত বা দোযখে যাবে। এটাই মুসলিম বা খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস। এই বিশ্বাস বা অবিশ্বাসের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য বিরাজ করে। যে যে ধর্মে বিশ্বাসী সে সে ধর্মের দিকে টানাটানি করে। কিন্তু বিভিন্ন জাতীয় মাটির বাসন যেমন আলাদা-আলাদাভাবে গড়লেও যেমন ভাঙার পর এক হয়ে যায়। তেমনি মৌলিক ক্ষেত্রে এক হওয়া বাস্তব সম্মত। সে কারণে প্রজ্ঞাবান সত্ত্বারা নিজে সাধনার মাধ্যমে অন্তরের শক্তির দ্বারা নিজের দেহমনের উপর ধ্যান করলে নিজের সকল প্রশ্নের সমাধান হয়। নিজে চিনি না খেলে যেমন কোন ব্যাখ্যাতেই চিনির প্রকৃত স্বাধ জানা সম্ভব নয় । তাই সাধক যিনি তিনি সাধনার শক্তিতে সব বুঝতে পারেন এবং নিজে অমর হন। তার জীবনের কোন সমস্যা সমাধানের জন্য কোন ধর্ম গ্রন্থের প্রযোজন হয় না। কারণ নিজের মধ্যেই তিনি সব কিছু পান।

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে