Dr. Neem on Daraz
Victory Day

রিজিকের হ্রাস-বৃদ্ধি আল্লাহর পরীক্ষা


আগামী নিউজ | ধর্ম ডেস্ক প্রকাশিত: জানুয়ারি ১১, ২০২১, ১০:৫৮ এএম
রিজিকের হ্রাস-বৃদ্ধি আল্লাহর পরীক্ষা

প্রতীকী ছবি

ঢাকাঃ মহান আল্লাহ কিছ মানুষকে ধনী বানিয়েছেন, আবার কিছু মানুষকে দরিদ্র। রিজিকের এই হ্রাস-বৃদ্ধি আল্লাহর পরীক্ষা। ধনীর জন্য আল্লাহর নির্দেশ পালন ও মানুষের অধিকার আদায়ের পরীক্ষা আর গরিবের জন্য ধৈর্যের পরীক্ষা। ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি তাদের বিভিন্ন শ্রেণিকে পরীক্ষা করার জন্য পার্থিব জীবনের সৌন্দর্য-স্বরূপ ভোগ-বিলাসের যে উপকরণ দিয়েছি, তার প্রতি কখনো আপনি দৃষ্টি প্রসারিত করবেন না। আপনার পালনকর্তার দেওয়া জীবিকাই উৎকৃষ্টতর ও স্থায়ী। (সুরা : তহা, আয়াত : ১৩১)

সবাইকে ধন-ঐশ্বর্যের মালিক বানানো আল্লাহর রীতি-বিরুদ্ধ। কারণ এতে মানুষ অহংকার-ঔদ্ধত্যে সীমালঙ্ঘন করত এবং পৃথিবীর ধ্বংস অনিবার্য হয়ে পড়ত। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আল্লাহ তার সব বান্দাকে জীবনোপকরণে প্রাচুর্য দিলে তারা পৃথিবীতে অবশ্যই বিপর্যয় সৃষ্টি করত। কিন্তু তিনি তার ইচ্ছামতো যথাযথ পরিমাণে রিজিক অবতীর্ণ করেন। তিনি তার বান্দাদের ভালোভাবেই জানেন ও দেখেন।’ (সুরা : শুরা, আয়াত : ২৭)

তাই যারা অভাব-অনটনে দিনাতিপাত করে, সমাজের অভিজাত শ্রেণির কাছে অবহেলিত ও উপেক্ষিত থাকে, তাদের ধৈর্য ধারণ করতে হবে এবং অল্পে তুষ্ট হতে হবে। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করে, মোটামুটি প্রয়োজন মতো রিজিক পায় এবং আল্লাহ যা দিয়েছেন তাতে সন্তুষ্ট থাকে, সে সফল।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১০৫৪)

ধনীরা দান-সদকা করে নেকির পাহাড় গড়তে পারে, কিন্তু দরিদ্ররা কী করবে, তারা কি সেই মর্যাদা থেকে বঞ্চিত হবে? এই প্রশ্নও রাসুলের কাছে উত্থাপন করেছেন সাহাবায়ে কেরাম। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, দরিদ্র লোকেরা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বলল, সম্পদশালী ও ধনী ব্যক্তিরা তাদের সম্পদের দ্বারা উচ্চ মর্যাদা ও স্থায়ী আবাস লাভ করছেন, তারা আমাদের মতো সালাত আদায় করছেন, আমাদের মতো রোজা রাখছেন এবং অর্থের বিনিময়ে হজ, ওমরাহ, জিহাদ ও সদকা করার গৌরবও লাভ করছেন। এ কথা শুনে তিনি বললেন, আমি কি তোমাদের এমন কিছু আমলের কথা বলব, যা তোমরা পালন করলে নেক কাজে তোমাদের চেয়ে যারা অগ্রগামী তাদের পর্যায়ে পৌঁছতে পারবে?... তোমরা প্রত্যেক সালাতের পর ৩৩ বার করে ‘সুবহানাল্লাহ’, ‘আলহামদুলিল্লাহ’ এবং ‘আল্লাহু আকবার’ পাঠ করবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮৪৩, সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৫৯৫)

রাসুল (সা.) কখনোই আল্লাহর কাছে অঢেল ধন-সম্পদ চাননি। বরং তিনি দারিদ্র্যই কামনা করেছেন। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, হে আল্লাহ, আমাকে দরিদ্র অবস্থায় বাঁচিয়ে রাখো, দরিদ্র থাকা অবস্থায় মৃত্যু দিয়ো এবং কেয়ামতের দিন দরিদ্রদের দলভুক্ত করে হাশর করো। (এ কথা শুনে) আয়েশা (রা.) বলেন, হে আল্লাহর রাসুল, কেন এমন কথা বলছেন? তিনি বলেন, হে আয়েশা, তারা তাদের সম্পদশালীদের তুলনায় ৪০ বছর আগে জান্নাতে প্রবেশ করবে। হে আয়েশা, ভিখারীকে কখনো ফিরিয়ে দিয়ো না। দেওয়ার মতো কিছু না থাকলে একটি খেজুরের টুকরো হলেও দিয়ো। হে আয়েশা, তুমি দরিদ্রদের ভালোবাসবে এবং তাদের তোমার সান্নিধ্যে রাখবে, তাহলে কেয়ামতের দিন আল্লাহতায়ালা তোমাকে তার সান্নিধ্যে রাখবেন।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৩৫২)

দরিদ্র-অসহায় ও অবহেলিত মানুষের সেবা করা এবং তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য প্রিয়নবী (সা.) নির্দেশ দিয়েছেন। আবুজর (রা.) বলেন, আমার প্রিয়তম মুহাম্মদ (সা.) আমাকে সাত কাজের আদেশ দিয়েছেন। এক. আমি যেন গরিব-মিসকিনকে ভালোবাসি এবং তাদের পাশে থাকি।...’ (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৪৪৯)

তবে মনে রাখতে হবে, যে দারিদ্র্য ইমাম-আমল নষ্ট করে এবং ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে দেয়, তা কখনোই কাম্য নয়। তাই সামর্থ্যবান মানুষকে হালাল উপায়ে জীবিকা উপার্জনের পথ বেছে নিতে হবে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘অনেক দারিদ্র্য কুফরির দিকে নিয়ে যায়।’ (ইসলাহুল মাল লি ইবনে আবিদ্দুনয়া, পৃষ্ঠা ৪৪০)

আগামীনিউজ/সোহেল 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে