Dr. Neem on Daraz
Victory Day
ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি

টিকিট অনিশ্চিত, তারপরেও লাইনে


আগামী নিউজ | নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: জুলাই ২, ২০২২, ১১:০৪ এএম
টিকিট অনিশ্চিত, তারপরেও লাইনে

ঢাকাঃ পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রির দ্বিতীয় দিনেও রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে টিকিট প্রত্যাশীদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। আজ (শনিবার) সকাল ৮টা থেকে বিভিন্ন রুটে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়। বরাবরের মতো এবারও কাউন্টারের পাশাপাশি অর্ধেক টিকিট মিলবে অনলাইনে।

শনিবার সকালে কমলাপুর স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, হাজার হাজার মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে তাদের কাঙ্ক্ষিত ‘সোনার টিকিট’ পেতে। প্রতিটি কাউন্টারের সামনেই মানুষের দীর্ঘ লাইন। সকাল ৮টা বাজতেই শুরু হয় শোরগোল। প্রতীক্ষার প্রহর শেষ হচ্ছে, তাই এই শোরগোল। টিকিট হাতে পেয়ে খুশি সবাই। দীর্ঘ অপেক্ষার পর টিকিট পাওয়ার আনন্দকে ফ্রেমবন্দিও করছিলেন অনেকে।

অনেকেই লাইনের পেছনে দাঁড়িয়েও টিকিটের জন্য অপেক্ষা করছেন। তারা জানেন যে টিকিট পাবেন না তারপরেও অপেক্ষা। ১৫ নম্বার কাউন্টারের পেছনে দাঁড়ানো এক টিকিট প্রত্যাশী বলেন, ‘আমার টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনা নাই, তারপরেও লাইনে আছি। আজকে না পেলে কালকের জন্য সিরিয়াল দেব।’

রংপুর এক্সপ্রেসের টিকিট কাটার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. মনিরুজ্জামান। তিনি জানান, গতকাল বিকেল ৫টা থেকে লাইনে আছেন। রংপুরের রুটে তার সিরিয়াল ৩২ নম্বর। সকাল ৯টার সময়ও তিনি টিকিট পাননি।

মনিরুজ্জামান বলেন, অনলাইনে যে ৫০ শতাংশ টিকিট দিয়েছে, সেগুলো দুয়েকজন ছাড়া অন্য কেউই পায় না। এসব টিকিট ব্ল্যাকে বিক্রি হয়। বাকি ৫০ শতাংশ টিকিটের জন্য লাইনে চাপ পড়ে যায়। লাইনে যারা থাকে, তারা যেহেতু চারটা করে টিকিট কাটতে পারে তাই ৬০-৭০ জন টিকিট পায়। বাকিরা লাইন ধরেও পায় না। এজন্য প্রথম ৬০-৭০ জনের মধ্যে থাকতে অনেকেই ২০-২৫ ঘণ্টা আগে লাইনে দাঁড়ায়। এত আগে লাইনে দাঁড়িয়েও যে টিকিট পাবে, তার নিশ্চয়তা নেই।

তিনি বলেন, রেলওয়ের এই সিস্টেম অবশ্যই ভালো নয়। অনলাইনের টিকিটগুলো যদি ব্ল্যাকে না যেতো, তাহলে অনেক মানুষ অনলাইনেই টিকিট কাটতে পারতো। রাত জেগে না ঘুমিয়ে এই কষ্ট অনেকেরই করা লাগতো না। 

এদিকে, টিকিট বিক্রির প্রথমদিন (শুক্রবার) কমলাপুর রেলস্টেশন পরিদর্শন করেন রেল মন্ত্রণালয়ের ঊধ্র্বতন কর্মকর্তারা। আজ বেলা ১১টায় রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন কমলাপুর স্টেশনে আসবেন বলে জানা গেছে। শান্তিপূর্ণভাবে টিকিট বিক্রি নিশ্চিত করতে কাজ করছেন রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও আনসার সদস্যরা। আর কালোবাজারে টিকিট বিক্রি বন্ধে পুলিশের পাশাপাশি রয়েছে র‌্যাবের উপস্থিতি।

শুক্রবার (১ জুলাই) থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। ১ জুলাই দেওয়া হয় রেলের ৫ জুলাইয়ের টিকিট, ২ জুলাই দেওয়া হচ্ছে ৬ জুলাইয়ের টিকিট, ৩ জুলাই দেওয়া হবে ৭ জুলাইয়ের ট্রেনের টিকিট, ৪ জুলাই দেওয়া হবে ৮ জুলাইয়ের ট্রেনের টিকিট এবং ৫ জুলাই দেওয়া হবে ৯ জুলাইয়ের ট্রেনের টিকিট।

এছাড়া ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে ৭ জুলাই থেকে। ওইদিন ১১ জুলাইয়ের টিকিট বিক্রি হবে। ৮ জুলাই ১২ জুলাইয়ের টিকিট, ৯ জুলাই ১৩ জুলাইয়ের টিকিট, ১১ জুলাই ১৪ এবং ১৫ জুলাইয়ের টিকিট বিক্রি হবে। তবে ১১ জুলাই সীমিত কয়েকটি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে। ১২ জুলাই থেকে সব ট্রেন চলাচল করবে।

ঢাকায় ছয়টি স্টেশন এবং গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশনে থেকে ঈদের ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনে সমগ্র উত্তরাঞ্চলগামী আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি হচ্ছে। কমলাপুর শহরতলী প্লাটফরম থেকে রাজশাহী ও খুলনাগামী ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। ঢাকা বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশনে পাওয়া যাচ্ছে ময়মনসিংহ, জামালপুর, দেওয়ানগঞ্জগামী ট্রেনের টিকিট।

এছাড়া ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশনে পাওয়া যাচ্ছে মোহনগঞ্জগামী মোহনগঞ্জ ও হাওর এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট। রাজধানীর ফুলবাড়িয়া রেলস্টেশন থেকে পাওয়া যাচ্ছে সিলেট ও কিশোরগঞ্জগামী ট্রেনের টিকিট। গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে পঞ্চগড়ের ঈদ স্পেশাল ট্রেন ছাড়বে।

এমবুইউ

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে