Dr. Neem on Daraz
Victory Day

লালনগীতির প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা-৯৭


আগামী নিউজ | সাঁঈজি সিরাজ সাঁঈ  প্রকাশিত: জানুয়ারি ২০, ২০২০, ০৮:৪৬ এএম আপডেট: মার্চ ৯, ২০২০, ০৩:১৫ এএম লালনগীতির প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা-৯৭

হীরে লালমতির দোকানে গেলে না।
সদাই কিনলি রে মন পিতলদানা॥
চটকে ভুলে রে মন
হারালি অমূল্য রতন
হেরে বাজি কাঁদলে তখন
আর সারে না॥
পিছের কথা আগে ভেবে
উচিৎ বটে তাই জানিবে
গত কাজের বিধি ফিরে
মন-রসনা॥
ব্যাপারে লাভ করলে ভাল
সে গুণাগুণ জানা গেল
লালন বলে মিছে হলো
আওনা-যাওনা॥

প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা : মন সবসময় বস্তুতে বিরাজ করে। মন অজ্ঞানতার কারণে প্রকৃত সম্পদ চেনে না। সে তার অমূল্য সম্পদ হীরে-লালমতির পরিবর্তে প্রজ্ঞাবান না হয়ে পিতলের ন্যায় জিনিসে আকৃষ্ট থাকে। এ পৃথিবীতে সমস্ত কিছুই চটকে মেতে আছে। তাই বস্তুময় মন তার নিজের মধ্যে থাকা মহামূল্যবান আত্মদর্শন না করে জগতের বস্তুর মোহে সর্বদা ব্যস্ত থাকে। একবার বস্তুমুখী হয়ে গেলে তাকে প্রজ্ঞার প্রতি যত্নবান করা কঠিন হয়। মানুষ কর্ম করার সময়ই সচেতন হওয়া প্রয়োজন। তা না হলে কর্মের চক্রে জড়িয়ে গেলে আর কোনো উপায় থাকে না।

যে প্রজ্ঞার মাধ্যমে সর্বদা নিজেকে পরিচালিত করে সে কর্মের পরবর্তী কর্মফল সম্বন্ধে অবগত থাকে। ফলে কোনো কর্ম করার সাথে সাথে তার কর্ম গুণের ওপরও সজাগ দৃষ্টি থাকে ফলে তার দ্বারা অজ্ঞান কর্ম পরিচালিত হয় না। কর্মই মানুষকে দুঃখ বা প্রশান্তিতে ফেলে দেয়। তাই কর্মই মানব জীবনের প্রকৃত ধর্ম।

মানুষের শ্রেষ্ঠ কর্ম তার সাধনার শক্তির মাধ্যমে নিজের মধ্যে প্রজ্ঞার সৃষ্টি করা। সেই প্রজ্ঞার শক্তিতে নিজেকে সবসময় প্রজ্ঞাবান রাখা এবং প্রতিটা মুহূর্তে সতর্কতার সাথে কর্ম করা। এভাবে সর্বদা সতর্ক না থাকতে পারলে এ পৃথিবীতে শুধু আসা-যাওয়া সার হবে।

১১-০৬-২০১৭ 

সকালঃ ৭:৪৫