Dr. Neem on Daraz
Victory Day

লালনগীতির প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা-৯৬


আগামী নিউজ | সাঁঈজি সিরাজ সাঁঈ  প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৯, ২০২০, ০৮:৩৬ এএম আপডেট: জানুয়ারি ১৯, ২০২০, ১০:২৭ এএম লালনগীতির প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা-৯৬

হায় চিরদিন পুষলাম এক অচিন পাখি।
ভেদ-পরিচয় দেয় না আমার ওই খেদে ঝরে আঁখি॥
পাখি বুলি বলে শুনতে পাই
রূপ কেমন দেখি নে ভাই
বিষম ঘোর দেখি;
চিনাল পেলে চিনে নিতাম
যেত মনের ধুকধুকি॥
পোষা পাখি চিনলাম না
এ লজ্জা তো যাবে না
উপায় কি করি;
পাখি কখন যেন যাবে উড়ে
ধূলো দিয়ে দুই চোখে॥
আছে নয় দরজা খাঁচাতে
যায় আসে পাখি কোন পথে
চোখে দিয়ে রে ভেল্কি;
সিরাজ সাঁই কয় লালন বয়
ফাঁদ পেতে ওই সিঁদমুখী॥

প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা : মানুষ প্রজ্ঞার অভাবে নিজেকে চিনতে পারে না। নিজেকে চেনার মধ্যেই মানবের সকল সফলতা নির্ভর করে। যে নিজেকে চিনতে পারে না তার সাধন-ভজন কোনো অবস্থাতেই সিদ্ধি লাভ করে না। নিজের মধ্যে তার নিজ খোদা রয়েছে সেই নিকটতম নিজেকে চিনতে না পারলে দূরের খোদাকে চেনা যাবে না। কাছ থেকে চেনার অভ্যাস করলে দূরের সকল জিনিস চেনা সম্ভব হবে।

নিজেকে চেনার জন্য যে প্রজ্ঞা লাগে তা সহজে আসে না। সেই প্রজ্ঞা অর্জন করতে হলে সাধনার শক্তি লাগে। সাঁইজী বলেছেন, যদি তিনি চিনাল পেতেন তাহলে তার দিক-নির্দেশনা মোতাবেক সেই আপন ঘরের পাখিকে চিনে নিতেন। আসলে প্রজ্ঞাবান গুরুর নির্দেশনা মোতাবেক সাধনা করলে এক জাতীয় প্রজ্ঞার অর্জন হয় তখন সেই দেহ মনের মধ্যে যে আপনজন থাকে তাকে চেনা যায়। সেই আপনজন বা অচিন পাখিকে চিনতে দেশ-দেশান্তরে ঘোরাঘুরি করলে তাকে পাওয়া যায় না। সেই ক্ষেত্রে লালন সাঁইজী বলছেন, তাকে পেতে সাধনার শক্তির দ্বারা যে পথে সেই হাওয়া বাতাস বয় সেই পথের সিঁদমুখে বসলেই তাকে পাওয়া যায়।

১০-০৬-২০১৭

সকালঃ ৮:২০