Dr. Neem on Daraz
Victory Day

লালনগীতির প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা-৯৫


আগামী নিউজ | সাঁঈজি সিরাজ সাঁঈ প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২০, ০৮:৫৮ এএম লালনগীতির প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা-৯৫

হা রে মন তোরে আর কী বলি।
পেয়ে ধন সে ধন হারালি॥
মহাজনের ধন এনে
ছড়ালি রে উলুবনে
ও তোর কী হবে নিকাশের দিনে
সে ভাবনা কই ভাবিলি॥
সই করিয়ে পুঁজি তখন
আনলি রে তিন রতি এক মন
তোর ব্যাপার করা যেমন তেমন
আসলে হাত লাগালি॥
করলি ভাল বেচাকেনা
চিনলে নে রে রাঙ কি সোনা
অধীন লালন বলে মন-রসনা
কেন সাধুর হাটে এলি॥

প্রজ্ঞাময় ব্যাখ্যা: মন মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু। মানুষ তার মনের কারণে সবসময় বস্তুমূখী থাকে। বস্তু দিয়েই তার মন সৃষ্টি হয়। তাই বস্তুর প্রতিই তার সহজাত প্রবণতা। বস্তুর উপর সে ভর করে নিজেকে অবগাহন করে। তাই মন যা করে তা সবই মানবের জন্য অকল্যাণকর। তাই সাঁইজী আফসোস করে বলছেন-
“তুই পেয়ে ধন সবই তোর অজ্ঞানতার কারণে সবই হারালি”

তোর কাছে যে সব সম্পদ ছিল তা নিকাশের দিনে কিভাবে বুঝিয়ে দিবি। আসলে অনেক বেঁচাকেনা করেছ বলে মনে কর কিন্তু তোমার কর্মের আসল পুঁজিই খোঁয়া গেছে।

জীবনের প্রকৃত লক্ষ্য নির্ধারণ করা মানব জীবনের একান্ত প্রয়োজন। সে যদি তার লক্ষ্য নির্ধারণে ব্যর্থ হয় তাহলে কিভাবে সেই লক্ষ্য অর্জন করতে পারে। তাই জীবনের সফলতা আনার জন্য প্রজ্ঞাবান গুরুর নির্দেশ মোতাবেক সাধনা করতে হয় এবং সেই সাধনার কারণে নিজের মধ্যে এক প্রজ্ঞার সৃষ্টি হয়। এই প্রজ্ঞার দ্বারা নিজেকে সার্বক্ষণিক সতর্ক অবস্থায় রাখা যায়। এই সতর্ক থাকার কারণে নিজের মধ্যে বস্তুর প্রতি আকর্ষণ কার্যকরী হতে পারে না। তখন নিজের মধ্যকার যে মহামূল্যবান সম্পদ আছে তা সংরক্ষিত থাকে এবং এই সংরক্ষিত সম্পদ দ্বারা নিজেকে এই পৃথিবীতে আসাকে সাফল্য মন্ডিত করে তোলে।

১০-০৬-২০১৭

সকাল ৮:৪৩