Dr. Neem on Daraz
Victory Day

সাপের অভয়ারণ্য ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়!


আগামী নিউজ | এম.বি রিয়াদ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ১, ২০২১, ০৭:৩০ পিএম সাপের অভয়ারণ্য ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়!
কুষ্টিয়াঃ করোনায় দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)। বেড়েছে ঝোপ-ঝাড়। ফলে পরিচ্ছন্নতার অভাবে সাপের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে গোটা ক্যাম্পাস।
 
আবাসিক হল, রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে বিষাক্ত সাপ। বিভিন্ন প্রয়োজনে ক্যাম্পাসে আসা শিক্ষার্থীরা ও ক্যাম্পাসের আবাসিক শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে বিরাজ করছে সাপ আতঙ্ক।
 
সরেজমিনে দেখা যায়, ক্যাম্পাসের রাস্তাগুলোর দু’ধার দিয়ে আশঙ্কাজনকহারে বেড়েছে ঝোপ-ঝাড়। বিভিন্ন স্থানে রয়েছে আবর্জনার স্তুপ। এছাড়াও আবাসিক হলসমূহে, মফিজ লেক, ক্রিকেট মাঠ, ফুটবল মাঠ, টিএসসিসি, কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন এলাকা, একাডেমিক ভবনগুলোর আশেপাশে ও শিক্ষকদের আবাসিক এলাকাসহ সর্বত্র ভরে উঠেছে লতাপাতা, আগাছা আর ঝোঁপঝাড়ে। সর্বত্র ঝোঁপঝাড়ে পূর্ণ থাকায় বিষাক্ত সাপ ঝোঁপঝাড় থেকে বেরিয়ে আসছে প্রতিনিয়ত। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে এসব বিষাক্ত সাপ। বিভিন্ন হলের আনাচে কানাচে ও সিড়িতে সাপের খোলস পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এমনকি রুমের মধ্যেও দেখা মিলছে সাপের খোলস। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ২০টিরও অধিক সাপ মারা পড়েছে।
 
ক্যাম্পাস নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত আনসার সদস্যরা রাতদিন দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তারাও প্রতিনিয়ত আতঙ্কে থাকেন। এদিকে আবাসিক হলসমূহ বন্ধ থাকলেও প্রতিদিনই শিক্ষার্থীরা হলে আসেন বই-পুস্তকসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিতে। কিন্তু দীর্ঘদিন রুমগুলো বন্ধ থাকায় ও হলের ভিতর-বাইরে ঝোঁপঝাড়ে পূর্ণ থাকায় সাপ আতঙ্কে রুমে প্রবেশ করতে ভয় পাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদ্দাম হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মনিরুজ্জামান আগামী নিউজকে বলেন, 'কয়েকদিন আগে হল থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিতে ক্যাম্পাসে যাই। আগের তুলনায় হলের চারিদিকে ঝোপঝাড় অনেক বেড়েছে। হলের ভিতরে বিভিন্ন স্থানে ও  সিড়িতে অসংখ্য সাপের খোলস পড়ে থাকতে দেখা যায়। এটা রীতিমতো ভয়ের কারণ। আশঙ্কা জাগে না জানি কখন হুট করে সাপ বেরিয়ে আসে।'
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী শফিউল্লাহ বলেন, 'ক্যাম্পাসে পা বাড়ালেই সাপের আতঙ্ক। যেখানে সেখানে দেখা মিলছে গোখরো, কেউটে ও কালাচ সহ নানা বিষধর সাপ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে যেকোন সময় সাপের দংশনে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে।' 
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সোহান আগামী নিউজকে বলেন, 'দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের অবাধ বিচরণ নেই। ক্যাম্পাসের আশে পাশে ঝোপঝাড়ে ভরে গেছে। অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে সাপের বংশবৃদ্ধি ঘটেছে। অনুকূল পরিবেশে সেগুলো সহজে বেড়ে উঠছে, যেটার ফলাফল প্রত্যেকের জন্য ভয়াবহ। সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া জরুরী।'
 
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন আগামী নিউজকে বলেন, 'কাউকে সাপে দংশন করুক এটা আমরা চাইনা। সাপের উপদ্রব রোধে দ্রুত ঝোপ-ঝাড় অপসারণ করা হবে। নিরাপত্তার স্বার্থে ক্যাম্পাসের লাইটিং সিস্টেম মেরামত করা হবে। সাপে কাটার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।'
 
সাপে কাটার পর প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে ইঞ্জেকশন রয়েছে বলে আগামী নিউজকে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের ভারপ্রাপ্ত প্রধান চিকিৎসক ডা. এস এম নজরুল ইসলাম।
 
আগামীনিউজ/এএস