Dr. Neem on Daraz
Victory Day

এক উপজেলাতেই ১২ মাসে ১০৯ বাল্যববিাহ


আগামী নিউজ | নজরুল ইসলাম, রূপগঞ্জ (নারায়নগঞ্জ) প্রতিনিধি প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২১, ১২:৪০ পিএম এক উপজেলাতেই ১২ মাসে ১০৯ বাল্যববিাহ

নারায়নগঞ্জঃ জেলার রূপগঞ্জে বিয়ে যেন পুতুল খেলায় পরিনত হয়েছে। যখন যার মনে হচ্ছে নাবালক সন্তানদের বিয়ে দিচ্ছেন। আবার যখন মনে হচ্ছে সংসার ভেঙ্গে দিচ্ছেন। যৌতুক, নারী ও শিশু নির্যাতন বেড়ে যাচ্ছে। সহিংসতা হচ্ছে। মামলা হামলা হচ্ছে। সর্বশেষ থানা পুলিশ এমনকি আদালতেও গড়াচ্ছে। গত ১২ মাসে রূপগঞ্জে প্রায় ১০৯টির মতো বাল্যবিবাহের ঘটনা ঘটেছে। রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী র্কমর্কতা, থানা-পুলিশ ও সাংবাদিকরা আরো র্অধশতাধিক বাল্যবিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন।

তবু বন্ধ হচ্ছে না বাল্যবিয়ে। অভিভাবকরা বিভিন্ন কৌশলে কিশোরী মেয়েদের বিয়ে দিতে বাধ্য করছেন। অনেক কিশোরী বিয়ে করতে অসম্মতি জানিয়ে পিতা-মাতাসহ আত্মীয়স্বজনদের নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঘটনাও ঘটছে অহরহ। স্থানীয় বিভিন্ন কারখানায় অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের চাকরি না দেওয়ায় বাধ্য হয়ে মা-বাবা পুরুষ শ্রমিকদের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে বিবাহিত বলে র্গামেন্টসে চাকরি করাচ্ছেন। এসব কারণইে রূপগঞ্জে বাড়ছে বাল্যবিয়ে। কাবিন ও বিয়ের সময় বয়স প্রমাণের জন্য জন্মনিবন্ধন সনদ দেখানোর নিয়ম থাকলেও এখানেও হচ্ছে জালিয়াতি। কম্পিউটারের দোকানগুলো থেকে নকল জন্মনিবন্ধনের সনদ বানিয়ে এনে চেয়ারম্যান-মেম্বারদের ভুয়া সিল দিয়ে প্রাপ্তবয়স্ক বানানো হচ্ছে।

বাল্যবিয়ের সবচেয়ে বেশি শিকার হচ্ছেন চনপাড়া পুর্নবাসন কেন্দ্রের (বস্তি) কিশোরীরা। গত এক বছরে শুধু এ পুর্নবাসন কেন্দ্রেই র্অধ শতাধকি বাল্যবিয়ে হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। চনপাড়া পুর্নবাসন কেন্দ্রের কয়েকটি ওর্য়াডের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কায়তেপাড়া ইউনিয়নের মধ্যে শুধু চনপাড়া পুর্নবাসন কেন্দ্রেরই বাস করছেন প্রায় ৫০ হাজার লোক। আর এই কেন্দ্রের বিয়েগুলো পড়ান স্থানীয় মসজিদের ইমাম, দুটি মাদ্রাসার শিক্ষক ও কায়েতপাড়া ইউনিয়নের কাজী মনির হোসেন। মোটা অঙ্কের র্অথের বিনিময়ে স্থানীয় দু-একজন মেম্বারের সঙ্গে আঁতাত করে জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরি করে ১৩-১৪ বছরের কিশোরীদের ১৮ বছরে রূপান্তর করে করা হচ্ছে বিয়ের কাবিননামা।

গত এক বছরে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলা নির্বাহী র্কমর্কতাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় রূপগঞ্জের জনতা উচ্চবদ্যিালয়রে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী সামসুল হক ভূঁইয়ার মেয়ে রোকেয়া আক্তার, বেলদী দাখিল মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী পলখান গ্রামরে রফিক মিয়ার মেয়ে আমেনা খাতুন, খাদুন উচ্চবদ্যিালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী বরাব গ্রামের আমির হোসেনের ভাড়াটিয়া নজরুলের মেয়ে কাকলী আক্তার, র্পূবগ্রামের হাসেন আলীর মেয়ে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী মনিরা বেগমসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় র্অধশতাধিক বাল্যবিয়ে বন্ধ করছেনে। চনপাড়া পুর্নবাসন কেন্দ্রের শারমিন আক্তার, রুমা, শিউলী, পুতুল, নাজমা বেগমসহ অর্ধশতাধিক কিশোরী বাল্যবিয়ের শিকার হয়ে সংসার করছনে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মাহমুদা আক্তার বলেন, রূপগঞ্জে বিভিন্নভাবে যতগুলো শিশুমৃত্যু হচ্ছে তার বেশির ভাগই কিশোরী মায়েদের সন্তান। অপুষ্টি ও শারীরিক গঠন অসর্ম্পূণ থাকার কারণেই ওই সব কিশোরী মায়েরা সন্তান ধারণের পর বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যায় ভোগেন। ফলে মা এবং শিশু দুজনই পড়নে মৃত্যুঝুঁকিতে।  উপজেলা নির্বাহী র্কমর্কতা শাহ নুসরাত জাহান বলনে, রূপগঞ্জে বাল্যবিয়ে অনেক বেড়ে গেছে। বেশ কয়েকটি বাল্যবিয়ে ইতোমধ্যে বন্ধ করা হয়েছে। আবার অনেক বিয়ের খবরই পাওয়া যায় না। তারপরও বাল্যবিয়ের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

আগামীনিউজ/এএস