Dr. Neem on Daraz
Victory Day

শিগগিরই গ্র্যাজুয়েশন পাচ্ছে বাংলাদেশ


আগামী নিউজ | ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: জানুয়ারি ১২, ২০২১, ০৮:৩৫ পিএম শিগগিরই গ্র্যাজুয়েশন পাচ্ছে বাংলাদেশ

ঢাকাঃ আর মাত্র এক মাস, তারপরেই বাংলাদেশ জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে গ্র্যাজুয়েশন পাবে। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার আগে আজ মঙ্গলবার সরকারের সঙ্গে বৈঠকে বসবে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির (সিডিপি) বিশেষজ্ঞ গ্রুপ। এতে সরকার বাংলাদেশের সর্বশেষ পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করবেন।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, আমরা বাংলাদেশের ওপর একটি প্রেজেন্টেশন দেব। সিডিপি যদি কোনো কিছুর ব্যাখ্যা চায় তবে তাদের জানানো হবে। এক ঘণ্টার ওই বৈঠকে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন ১৮ মিনিটের একটি প্রেজেন্টেশন দেবেন এবং জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা তাদের প্রশ্ন বা মন্তব্য করবেন। আশা করছি, যে তথ্য-উপাত্ত আমাদের কাছে আছে সেটি গ্র্যাজুয়েশনে সফল হওয়ার জন্য যথেষ্ট।

উল্লেখ্য, তিনটি সূচকের যে কোনো দুটিতে উত্তীর্ণ হলেই গ্র্যাজুয়েশন পাওয়া যায়। বাংলাদেশ তিনটি সূচকেই অত্যন্ত শক্ত অবস্থানে আছে। তিনটি সূচকে প্রয়োজন- মাথাপিছু আয় ১,২২২ ডলার, মানবসম্পদ সূচকে ৬৬ পয়েন্ট বা বেশি এবং অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত ভঙ্গুর সূচকে ৩২ পয়েন্ট বা কম। এর বিপরীতে সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশের চিত্র হচ্ছে যথাক্রমে- ১,৮২৭ ডলার, ৭২.৪ পয়েন্ট ও ২৭ পয়েন্ট। 

২০১৮ সালে বাংলাদেশ প্রতিটি সূচকেই অত্যন্ত ভালো অবস্থানে ছিল। ওই বছর থেকে পরবর্তী তিন বছর সূচকগুলো পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং বাংলাদেশের অবস্থান অপরিবর্তিত থাকায় এ বছর আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে গ্র্যাজুয়েশন লাভ করব। এরপর ২০২৪ সালে সূচকগুলোর অবস্থান ভালো সাপেক্ষে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে যাবে।

যদিও তালিকা থেকে বের হলে আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। তবে ২০২৪ পর্যন্ত স্বল্পোন্নত দেশগুলোর সব সুবিধা ভোগ করব আমরা। বৈঠকে এটাকে ২০২৬ পর্যন্ত বর্ধিত করার প্রস্তাবও করব। কোভিডের কারণে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে যাওয়ার পথটি মসৃণ হবে না। এটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এর ফলে সবদেশই সমস্যার মধ্যে আছে।

কোভিডের মতো মহামারী দেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটকে প্রভাবিত করতে পারে। আমরা কোভিডের প্রভাব নিয়েও বৈঠকে আলোচনা করব। বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইন ও অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে বাংলাদেশের পক্ষে অন্য বছরের মতো এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না-এটি বাস্তবতা। পয়েন্টগুলো আমরা তুলে ধরব বলেও জানান মাসুদ বিন মোমেন। বলেন, এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন ও রোহিঙ্গা নিয়ে বাংলাদেশ যে সমস্যায় রয়েছে সে কথাও তুলে ধরা হবে।

পাশাপাশি উন্নত বিশ্বের প্রতিশ্রুতির বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য উন্নত বিশ্ব যে পরিমাণ অর্থ প্রদান করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সেটি তারা করছে না। ফলে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর পক্ষে ওই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সমস্যা তৈরি হতে পারে।

বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে এসডিজি সমন্বয়ক জুয়েনা আজিজ, পরিকল্পনা কমিশনের মেম্বার সামশুল আলম, অর্থ, বাণিজ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসচিব, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের প্রতিনিধি, নিউইয়র্ক ও জেনেভাতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধিরাসহ অন্যরা উপস্থিত থাকবেন।

উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ এলডিসি গ্রুপে তালিকাভুক্ত হয়। ২০১১ সালে তুরস্কে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর চতুর্থ শীর্ষ সম্মেলনে সিদ্ধান্ত হয়-২০২০ সালের মধ্যে এ সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনার। এরপর বাংলাদেশ এটি দৃঢ়ভাবে বাস্তবায়নের বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়। ২০১৬ সালে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ওই তালিকা থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা শুরুর জন্য পরিকল্পনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন। দুই বছর আলোচনার পরে ২০১৮ সালে জাতিসংঘ সন্তুষ্ট হয় এবং বাংলাদেশকে তিন বছরের জন্য পর্যবেক্ষণে রাখে, যা আগামী মাসে শেষ হবে।

 

আগামীনিউজ/এএইচ