Dr. Neem on Daraz
Victory Day

জনপ্রিয় কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী 


আগামী নিউজ | নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: জুলাই ১৯, ২০২০, ১২:৩৫ পিএম আপডেট: জুলাই ১৯, ২০২০, ১২:৫৯ পিএম জনপ্রিয় কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী 

ঢাকা : কিছু কিছু মানুষ ভাগ্যকে নিজের হাতে গড়ে, আবার কারো কারো কাছে ভাগ্য আপনি এসে ধরা দেয়! এটি জনপ্রিয় লেখকের অনেকগুলো উক্তির মধ্যে একটি। আজ নন্দিত এই কথাশিল্পী ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১২ সালের ১৯ জুলাই না ফেরার দেশে পাড়ি জমান হিমু কিংবা মিসির আলির জনপ্রিয় স্রষ্টা।

গল্প, সমকালিন উপন্যাস, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ও রাজনৈতিক উপন্যাস, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী, আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা, ভ্রমণ কাহিনী, নাটক, সিনেমা, ইংরেজি অনুবাদ, কবিতা, সঙ্গীত, শিশুতোষ ও কিশোর উপন্যাস এবং অসংখ্য চিত্রকর্মের মতো জনপ্রিয় সৃষ্টিকর্মে হুমায়ূন আহমেদ বেঁচে থাকবেন যুগ যুগ ধরে। 

১৯৭২ সালে ‘নন্দিত নরকে’ উপন্যাস থেকে শুরু করে এই লেখকের জনপ্রিয়তা পাঠক সমাজের কাছে আজও জনপ্রিয়তার শীর্ষে। বিশেষ করে কিশোর সমাজকে বইমুখো করতে তার অবদান অতুলনীয়। বই বিমুখ মানুষকে বইয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়িয়েছে তার গল্প উপন্যাসের তীব্র আকর্ষণে। শঙ্খনীল কারাগার, আমার আছে জল, প্রিয়তমেষু, এইসব দিনরাত্রি, বহুব্রিহি, পাখি আমার একলা পাখি, কৃষ্ণপক্ষ, উড়ালপঙ্খী, মধ্যাহ্ন, অনিল বাগচির একদিন, শ্যামল ছায়া, দেয়াল, মিসির আরি, হিমু পরিবহনের মতো তিন শতাধিক গ্রন্থ, নাটক সিনেমার প্রায় সবই সাড়া ফেলেছে দেশ-বিদেশের পাঠকমহলে।
শিল্প-সাহিত্যের বেশিরভাগ শাখায় কীর্তি রেখে গেছেন হুমায়ূন আহমেদ। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ দেশে-বিদেশে বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন হুমায়ূন আহমেদ।

এ দিনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী বড় পরিসরে পরিবার ও ভক্তদের নানা মহল থেকে শ্রদ্ধা ও দোয়ার আয়োজন করে কিন্তু এবারে আয়োজনের প্রেক্ষাপট ভিন্ন।
জানা যায়, করোনা মহামারীর কারণে সীমিত আকারে দোয়ার আয়োজন থাকছে হুমায়ূন আহমেদের জন্মস্থান নেত্রকোনা এবং লেখকের সবচেয়ে প্রিয় স্থান গাজীপুরের নুহাশপল্লীতে। টিভি চ্যানেলগুলোতেও থাকছে তার নাটক, চলচ্চিত্র, গান ও সাহিত্য নিয়ে দিনভর বিশেষ অনুষ্ঠানমালা।

হুমায়ূন আহমেদ একদিকে সাহিত্য দিয়ে মন্ত্রমুগ্ধ করেছেন পাঠককে, অন্যদিকে নির্মাণ করেছেন অনন্য সব নাটক, চলচ্চিত্র ও গান। তার হাত ধরেই তারকার সম্মান পেয়েছেন এ দেশের অনেক শিল্পী। তার সৃষ্টিতে উঠে এসেছে নৈসর্গিক দৃশ্য, জোছনা, বৃষ্টিসহ বাংলার চিরচেনা প্রকৃতির ব্যঞ্জনা।

টেলিভিশনের জন্য একের পর এক দর্শকনন্দিত নাটক রচনা ও পরিচালনার পাশাপাশি হুমায়ূন আহমেদ ১৯৯০-এর গোড়ার দিকে চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করেন। তার পরিচালনায় প্রথম চলচ্চিত্র ‘আগুনের পরশমণি’ মুক্তি পায় ১৯৯৪ সালে। ২০০০ সালে ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ ও ২০০১ সালে ‘দুই দুয়ারী’ দর্শকদের দারুণ গ্রহণযোগ্যতা পায়। ২০০৩-এ নির্মাণ করেন ‘চন্দ্রকথা’।

১৯৭১-এ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ২০০৪ সালে হুমায়ূন আহমেদ নির্মাণ করেন ‘শ্যামল ছায়া’। এটি ২০০৬ সালে অস্কারের সেরা বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে বাংলাদেশ থেকে অংশ নিয়েছিল। এছাড়া এটি প্রদর্শিত হয় কয়েকটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে। ২০০৮-এ ‘আমার আছে জল’ পরিচালনা করেন তিনি। তার সব চলচ্চিত্রের বেশিরভাগ গান রচনা করেছেন তিনি নিজেই।

১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কুতুবপুরে জন্মেছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে শহীদ হন। হুমায়ূনের মায়ের নাম আয়েশা ফয়েজ। তার দুই ভায়ের একজন জনপ্রিয় লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও আহসান হাবীব। এদিকে হুমায়ূন আহমেদের সূত্র ধরে এরমধ্যে নির্মাণে প্রশংসা কুড়াচ্ছেন তার যোগ্য উত্তরসূরি নুহাশ।

 

আগামীনিউজ/এসপি