Dr. Neem on Daraz
Victory Day

ক্যান্সার রোধে স্কোয়াস খান


আগামী নিউজ | লাইফস্টাইল ডেস্ক প্রকাশিত: জুন ২৭, ২০২০, ১০:২৯ এএম ক্যান্সার রোধে স্কোয়াস খান

জুকিনি বা স্কোয়াস, এই নামটার সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত হলেও এর স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে আমরা অনেকেই অবগত নই। কিন্তু, স্কোয়াস এমন একটি উদ্ভিদ যা সারা বছরই পাওয়া যায়। এটি উদ্ভিদগতভাবে একটি ফল হিসেবে বিবেচিত হলেও, মসৃণ ত্বক, ছোট বীজ এবং মাংসল শাঁস এর জন্য এটিকে সবজি হিসেবে গণ্য করা হয়।  জুকিনি, কোর্জেট (Courgette) স্কোয়াস নামেও পরিচিত।

এটি দক্ষিণ আমেরিকার জনপ্রিয় একটি খাদ্য। বর্তমানে জাপান, চীন, রোমানিয়া, ইতালি, তুরস্ক, মিশর এবং আর্জেন্টিনার বাসিন্দারা চাষের মাধ্যমে এটির উৎপাদন করেন। গবেষকদের মতে, স্কোয়াসের ত্বকেই থাকে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ পুষ্টি। এটি পানি, ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ফোলেট এবং বিটা ক্যারোটিনের একটি দুর্দান্ত উৎস।

পুষ্টির মান পুষ্টির মান প্রতি ১০০ গ্রাম স্কোয়াসের পুষ্টিগত মান হল - পানি - ৯৪.৭৯ গ্রাম শক্তি - ১৭ কিলোক্যালরি প্রোটিন -১.২১ গ্রাম ডায়েটারি ফাইবার - ১ গ্রাম ক্যালসিয়াম- ১৬ মিলিগ্রাম আয়রন - ০.৩৭ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম - ১৮ মিলিগ্রাম ফসফরাস - ৩৮ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম - ২৬১ মিলিগ্রাম সোডিয়াম - ৮ মিলিগ্রাম সেলেনিয়াম - ০.২ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন সি - ১৭.৯ মিলিগ্রাম ফোলেট - ২৪ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন বি ৬ - ০.১৬৩ মিলিগ্রাম বিটা ক্যারোটিন - ১২০ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন কে - ৪.৩ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন এ - ২০০ আইইউ


স্বাস্থ্য উপকারিতা

১) হজম ক্ষমতাকে উন্নত করে: এটি ডায়েটারি ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় পেটের নানাবিধ সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্য ঠিক করে এবং হজম ক্ষমতাকে উন্নত করতে সহায়তা করে। পাশাপাশি অন্ত্রের স্বাস্থ্যকেও ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

২) হার্ট ভালো রাখতে: স্কোয়াসে ক্যালরির পরিমাণ অনেক কম থাকে এবং ফোলেট, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকে, যা হার্টের ভালো রাখতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে থাকা ফাইবার স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়তা করে।

৩) দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে: স্কোয়াসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং বিটা ক্যারোটিন থাকে, যা চোখের দৃষ্টি উন্নত করতে সাহায্য করে। এছাড়াও, এতে থাকা লুটেইন এবং জেক্সানথিন-এর মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বয়সজনিত চোখের সমস্যাগুলো হ্রাস করতে সহায়তা করে।

৫) ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: এতে স্টার্চ ও কার্বোহাইড্রেট কম থাকে এবং ফাইবার ও পানির পরিমাণ বেশি থাকে। তাই এটি স্বল্প ফ্যাটযুক্ত খাবার হিসেবে বিবেচিত হয়। এর ফলে স্কোয়াস অল্প সময়ের মধ্যেই শরীরের ওজনকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

৬) ক্যান্সার প্রতিরোধে: স্কোয়াসে থাকে প্রচুর পরিমাণে বিটা-ক্যারোটিন এবং ভিটামিন সি, যা ক্যান্সারের জীবাণু থেকে শরীরকে রক্ষা করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।

৭) হাড় ও দাঁতকে শক্তিশালী করে: স্কোয়াসে থাকা লুটেইন এবং জেক্সানথিন নামক দুটি ক্যারোটিনয়েড হাড় এবং দাঁত শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এতে থাকা ভিটামিন কে, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফোলেট হাড়ের বৃদ্ধিতে খুবই উপকারী।

৮) তারুণ্যকে ধরে রাখে: স্কোয়াসে বিটা ক্যারোটিন এর মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা ত্বকের কোষকে শক্তিশালী করে এবং ইউভি রশ্মির হাত থেকে ত্বককে রক্ষা করে। পাশাপাশি, ত্বককে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে এবং তারুণ্যকে ধরে রাখতে সাহায্য করে।

৯) মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে: একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, স্কোয়াসে থাকা শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি প্রাপ্ত বয়স্কদের স্মৃতিশক্তিকে উন্নত করতে সাহায্য করে। একইসাথে, এটি মানসিক স্বাস্থ্যকেও উন্নত করে।

১০) মাথার চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে: স্কোয়াসে থাকা ভিটামিন-বি ২, ভিটামিন-সি এবং জিঙ্ক মাথার চুলের বৃদ্ধিতে ও চুল-কে আরো শক্তিশালী করতে সহায়তা করে। শুষ্ক, রুক্ষ চুল ও খুশকি দূর করতেও এটি সহায়ক।

এছাড়াও, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করতে, কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে, হাঁপানির চিকিৎসা করতে, রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে স্কোয়াস খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

আগামীনিউজ/বোল্ডস্কাই/জেএফএস