Dr. Neem on Daraz
Victory Day

নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করতে হবে:  পরিবেশ ও বন মন্ত্রী


আগামী নিউজ প্রকাশিত: মে ২২, ২০২০, ০৯:০৯ পিএম নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করতে হবে:  পরিবেশ ও বন মন্ত্রী

ঢাকা: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন বলেছেন, বন ও জীববৈচিত্র্য প্রতিবেশ ব্যবস্থার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বন ও বন্যপ্রাণী ক্ষতিগ্রস্ত হলে পরিবেশ, প্রতিবেশ ব্যবস্থা ও জীববৈচিত্র্যের ওপর নেমে আসে বিপর্যয়। আর জীববৈচিত্রের স্বাভাবিক ভারসাম্য নষ্ট হলে মানুষের অস্তিত্বের ওপর আসে আঘাত। তাই, সমবেত প্রচেষ্টায় সুরক্ষিত রাখতে হবে দেশের বন ও জীববৈচিত্র্য।

পরিবেশ মন্ত্রী শুক্রবার (২২ মে) বন অধিদপ্তরের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস-২০২০ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনলাইন আলোচনা সভায় সরকারি বাসভবন থেকে যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন। 

 বন মন্ত্রী বলেন, প্রতি বছর ২২ মে আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস পালন করা হয়। জীববৈচিত্রের টেকসই উন্নয়ন মানবকল্যাণের জন্য অপরহার্য। জীববৈচিত্র্য হচ্ছে খাদ্য নিরাপত্তার একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি। বিশ্ব অর্থনীতির ৪০ শতাংশ এবং দরিদ্র্য জনগোষ্ঠীর চাহিদার ৮০ শতাংশ আসে জৈবসম্পদ থেকে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার প্রয়োজনে ধ্বংস হচ্ছে বন-বনানী। সেই সাথে হারিয়ে যাচ্ছে প্রাচুর্যময় স্থলজ ও জলজ জীববৈচিত্র্যের ভাণ্ডার। তাই এখনই উপযুক্ত সময় এই প্রাচুর্য হারিয়ে ফেলার আগেই তা রক্ষায় একযোগে কাজ করার। এবারের আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস-২০২০ এর প্রতিপাদ্য- “Our solutions are in nature”, - “প্রকৃতিতেই রয়েছে আমাদের সমাধান” তাই যথার্থ ও সময়োপযোগী হয়েছে।

পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের বনাঞ্চলসমূহ, অভ্যন্তরীণ জলাভূমিসমূহ এবং বঙ্গোপসাগরে রয়েছে বিপুল জীববৈচিত্র্যের সমাহার। বাংলাদেশে প্রাণীবৈচিত্র্যের মধ্যে আছে ১৩০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৭১১ প্রজাতির পাখি, ১৬৪ প্রজাতির সরীসৃপ, ৫৬ প্রজাতির উভচর, ৬৫৩ প্রজাতির মাছ যার মধ্যে ২৫১ প্রজাতির মিঠাপানির মাছ এবং ৪০২ প্রজাতির লোনা পানির মাছ।

এছাড়াও রয়েছে বৈচিত্র্যময় হাঙর, রে সহ নানা প্রজাতির অমেরুদন্ডী প্রাণী। উদ্ভিদ প্রজাতির মধ্যে বাংলাদেশে ১৯৮৮ প্রজাতির শৈবাল, ২৭৫ প্রজাতির ছত্রাক, ২৪৮ প্রজাতির মস জাতীয় উদ্ভিদ, ১৯৫ প্রজাতির ফার্ন জাতীয় উদ্ভিদ, ৭ প্রজাতির নগ্নবীজি এবং ৩ হাজার ৬১১ প্রজাতির গুপ্তবীজি উদ্ভিদ। অত্যধিক জনসংখ্যার চাপ, প্রাকৃতিক সম্পদের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার, বন উজাড়, বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল ধ্বংস, দূষণ, বন্যপ্রাণী শিকার ও হত্যার ফলে পরিবেশ ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য হুমকির মুখে। একসময় বাংলাদেশের প্রায় ১৭টি জেলায় বাঘ ছিল। কিন্তু বর্তমানে শুধুমাত্র সুন্দরবনে বাঘ সীমাবদ্ধ রয়েছে। ইতোমধ্যে হারিয়ে গেছে এক শিংওয়ালা গন্ডার, ময়ূর, বুনো গরু, বুনো মহিষ মিঠা পানির কুমিরসহ ৩১ প্রজাতির প্রাণী।

পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমানার বিরোধ নিষ্পত্তি করেছে। এখন এই সুনির্দিষ্ট সমুদ্রসীমানার মধ্যে আমাদের জীববৈচিত্র্য ও অন্যান্য সমুদ্র সম্পদের বিষয়ে জ্ঞান, অনুসন্ধান, সংরক্ষণ ও আহরণ সবই বাড়ানো হবে। আর এ জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।

বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মোঃ আমির হোসাইন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনলাইন আলোচনা অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসান এনডিসি, অতিরিক্ত সচিব ড. মোঃ বিল্লাল হোসেন; পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. এ, কে, এম, রফিক আহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর মোঃ জসীম উদ্দিন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর মনিরুল এইচ খান এবং প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।


আগামী নিউজ/ তরিকুল