Dr. Neem on Daraz
Victory Day

খালেদার আবার রক্তক্ষরণ হলে মৃত্যুঝুঁকি বাড়বে: চিকিৎসক


আগামী নিউজ | ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২১, ০৮:২২ এএম
খালেদার আবার রক্তক্ষরণ হলে মৃত্যুঝুঁকি বাড়বে: চিকিৎসক

ছবিঃ সংগৃহীত

ঢাকাঃ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার এরই মধ্যে কয়েকবার রক্তক্ষরণ হয়েছে। সামনে আবার রক্তক্ষরণ হলে খালেদা জিয়ার  মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যাবে বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকরা। 

চিকিৎসকরা জানান, খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস হয়েছে। লিভার সিরোসিসের কারণে তার ব্লিডিং হচ্ছে উল্লেখ করে তারা দ্রুত খালেদা জিয়াকে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র বা জার্মানির বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার সুপারিশ করেছেন।

রোববার (২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসভবন ফিরোজায় খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা তার সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে ব্রিফ করেন। সেখানে তারা এসব কথা বলেন। 

ব্রিফিংয়ে খালেদা জিয়ার রোগ নিয়ে প্রাথমিক একটি বর্ণনা দেন ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ফখরুল মোহাম্মদ সিদ্দিকী (এফ এম সিদ্দিকী।)

‘খালেদা জিয়ার পেট থেকে চাকা চাকা রক্ত যাচ্ছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ইউনাইটেড হাসপাতালে একবার রক্ত দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এ ধরনের রোগীকে বারবার রক্ত দেওয়া সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, ‘আশঙ্কা করছি, আবার যদি ব্লিডিং হয় তাহলে এটা কন্ট্রোল করা সম্ভব হবে না। ব্লিডিং হয়ে মৃত্যুঝুঁকি আরও বেড়ে যাবে।’

ইন্টারভ্যানশনাল গ্যাস্ট্রো অ্যানালিস্ট চিকিৎসক আরেফিন সিদ্দিক লিভারে রক্তক্ষরণ ঠেকাতে চিকিৎসা পদ্ধতি তুলে ধরে বলেন, ‘এটা একটা হাইলি টেকনিক্যাল কাজ। বাংলাদেশে এমন কোনো রোগী আমরা দেখিনি, যার দুই থেকে তিনবার এটা করা হয়েছে।’

কোথায় এর চিকিৎসা করা যায়—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটা আমেরিকা বা ইউরোপবেজড, বিশেষ করে ইউকে, জার্মানি ইউএসএতে কিছু সেন্টার আছে। সেটাও দেশজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে নেই, দু-একটি সেন্টার আছে।’

ডা. এফ এম সিদ্দিকী বলেন, উনার হিমোগ্লোবিন লেভেল প্রথমবার নেমে গিয়েছিল ৫ দশমিক ৫-এ। পরে আমরা সেটাকে চার ব্যাগ রক্ত দিয়ে ৯/১০-এর কাছাকাছি নিয়ে গিয়েছিলাম। সেটা আবার কমে এসেছিল ৭ দশমিক ৮ -এ। ব্লিডিংয়ের একটা ইম্পরট্যান্ট ব্যাপার হচ্ছে, অনেক রক্ত দিয়ে হিমোগ্লোবিন বাড়াতে পারবেন না। তাহলে সেটা আবার রিব্লিট করবে। এ কারণে হিমোগ্লোবিনকে একটা লেভেলের মতো ধরে রাখতে হয়।

তিনি বলেন, আবার যদি রিব্লিডিং হয়, তবে সে বিল্ডিংকে কন্ট্রোল করার মতো বা বন্ধ করার মতো সাপোর্টেড টেকনোলজি আমাদের এখানে নেই। সেক্ষেত্রে ব্লিডিং হয়ে উনার মৃত্যুঝুঁকি অনেকটা বেড়ে যাবে। বিল্ডিংটা এখন বন্ধ হয়ে আছে। যে রিব্লিড করছে, তাতে ধরে নিতে পারেন আবার রিব্লিড করবে। সেই রিব্লিডিং এর চান্স আগামী ছয় সপ্তাহে হওয়ার সম্ভাবনা ৭০ শতাংশের বেশি। তার মানে আপনাকে ধরে নিতে হবে রিব্লিড করবে।

‘আমরা অনেকটা অসহায় ফিল করছি। এটা তৃতীয়বারের মতো উনার ব্লিডিং হইছে। এই ব্লিডিং আমরা যে রক্ত দেখেছি এ রকম ব্লিডিং হলে যার হার্ট ফেইলর, হিমোগ্লোবিন কমে যায়। যার ডায়বেটিস আছে এবং এতো জটিলতার মধ্যে কিডনির ডিজিজ আছে উনার এনাল ফেইলর হয়ে যায়। এটাকে আমরা কীভাবে সাসটেইন করবো, যদি প্রেসারটা টিপস দিয়ে না কমাতে পারি’ যোগ করেন ডা. এফ এম সিদ্দিকী।

তিনি বলেন, ‘আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, উনাদের রিলেটিভদেরকে জানিয়েছি। কারণ এখনো সময় আছে। কিন্তু একটা সময় আছে, যখন শিফট করাও অসম্ভব হয়ে যেতে পারে। চারমাস আগে ম্যাডামকে যদি বিদেশে নেওয়া হতো, তাহলে হয়তো এই ব্লিডিং তাকে ফেস করতে হতো না।’

অধ্যাপক সিদ্দিকী বলেন, ‘মনোবল উনার অনেক দৃঢ়। উনি আমাদের যথেষ্ট বিশ্বাস করেন। এছাড়া আমাদের আর কিছু করার উপায় নেই। আল্লাহর রহমতে আমরা সেখান থেকে বের হয়ে এসেছি। দ্যাট টাইম উই ওয়ার কনফিডেন্ট। কিন্তু দিস টাইম আমরা হেল্পলেস ফিল করছি। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য মিলিয়ে অন্তত ১৭-২৩ জনের মেডিকেল টিম কাজ করছে চিকিৎসা বোর্ডে।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, প্রফেসর ডা. একিউ এম মহসিন, প্রফেসর ডা. নূর উদ্দিন, খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. আল মামুন। 

আগামীনিউজ/বুরহান

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে