Dr. Neem on Daraz
Victory Day

বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় আরেকটি মাইলফলক স্থাপিত হলো: প্রধানমন্ত্রী


আগামী নিউজ | আগামী নিউজ প্রতিবেদক প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৩, ০২:১২ পিএম
বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় আরেকটি মাইলফলক স্থাপিত হলো: প্রধানমন্ত্রী

ঢাকাঃ দেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় আরেকটি মাইলফলক স্থাপিত হলো।

বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রূপগঞ্জের পূর্বাচল সেক্টর ৪-এ নির্মাণকাজের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন শেষে সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় আরেকটি মাইলফলক স্থাপিত হলো। এর আগে মেট্রোরেল উপহার দিয়েছি। সেটি ওপর দিয়ে যাবে। এবার মাটির নিচ দিয়ে যাবে পাতাল রেল। বাংলাদেশে এ ধরনের আয়োজন প্রথম। যারা এসেছেন সবাইকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আমূল বদলে দিয়েছে৷ নিজেদের কাজের মাধ্যমে জনগণের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করে মন জয় করে নিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার৷ গণতন্ত্রের ধারাটা বজায় রয়েছে বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; এতসব উন্নয়ন-অর্জন সম্ভব হচ্ছে৷ দেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা আর কেউ থামাতে পারবে না৷ 

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক, স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি। আমাদের স্বাধীন রাষ্ট্র দিয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা সময় পেয়েছিলেন মাত্র সাড়ে তিন বছর। একটা জাতির জন্য এই সময় কিছুই না। তিনি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন। সাড়ে তিন বছরে আর কতটুকু করা যায়।

তিনি বলেন, পাকিস্তানিরা ২৭৮টি রেল ব্রিজ ধ্বংস করেছিল, ২৭০টি সড়ক ব্রিজ ধ্বংস করে। এক কোটি শরণার্থী, তিন কোটি গৃহহারা, একটা টাকা রিজার্ভ নেই। সেই ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে যাত্রা শুরু করে জাতির পিতা বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত করেন। বাংলাদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তিনি ব্যাপক কর্মসূচি নেন।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য, ৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। আমার মা, ছোট তিন ভাইকে হত্যা করা হলো। আমার চাচাকে হত্যা করা হলো। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি আর আমার ছোট বোন বিদেশে ছিলাম। ছয় বছর রিফিউজি হিসেবে বিদেশে থাকতে হয়েছে। আমি বাংলাদেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আওয়ামী লীগের প্রতি কৃতজ্ঞাতা জানাই আমার অবর্তমানে আমাকে সভাপতি করায়। অনেক বাধা ছিল। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী জিয়া-মোশতাক। জিয়া নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে। কিছুতেই আমাকে দেশে আসতে দিতে চায়নি। শুধু জনগণের ওপর ভরসা করে আমি বাংলাদেশে ফিরে এসেছিলাম। শুধু বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য দেশে ফিরে এসেছিলাম।

তিনি বলেন, গত ১৪ বছরে এ বাংলাদেশের আমূল পরিবর্তন হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছি। এবার বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ করা হবে।

একদিনে ১০০টা সেতু, ১০০টা সড়ক উদ্বোধন আগে কেউ করতে পারেনি উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশের জনগণ ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে, ২০০৮ সালে ভোট দিয়েছে। সেই নির্বাচনে বিএনপি কয়টা সিট পেয়েছিল? ৩০০ সিটের মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট অধিকাংশ সিট পায়। বিএনপি পেয়েছিল ২৯টা সিট, পরে একটা উপ-নির্বাচনে এসেছিল। আমরা যে এতো বছর কাজ করলাম। যার ফলে মানুষ আমাদের ভোট দিচ্ছে। আমাদের কাজের মধ্য দিয়ে জনগণের আস্থা বিশ্বাস আমরা পাচ্ছি। জনগণের মন জয় করেই আমরা ভোট পাচ্ছি।

মেট্রোরেলের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গত ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেল উদ্বোধন করেছি। এই কাজ যখন শুরু করতে যাই, তখন জঙ্গির উত্থান হলো। হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় বিদেশি নাগরিকদের হত্যা করা হয়। ৭ জন জাপানি নাগরিককে হত্যা করা হয়। যারা মেট্রোরেলের কাজে যুক্ত ছিলেন। আমি তাদের স্মরণ করি। এই ঘটনার পরও জাপান সরকার তাদের সহযোগিতার হাত গুটিয়ে নেননি। তাদেরকে আমি ধন্যবাদ জানাই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারায়ণগঞ্জ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জেলা। এখানে অনেকগুলো প্রকল্প কাজ চলমান। পূর্বাচল স্মার্ট সিটি হবে। নারায়ণগঞ্জকে স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।

দুর্নীতির প্রসঙ্গে সরকার প্রধান বলেন, দুর্নীতির প্রশ্নই ওঠে না। যতই আন্দোলন করুক কেউ কিছু করতে পারবে না যতদিন জনগণ আমাদের সাথে আছে।

তিনি আরও বলেন, করোনার সময় বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিয়েছি। কোনো ধনী দেশ বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিতে পারেনি। গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত আছে বলেই উন্নয়নের মহাসড়কে যাত্রা করেছে বাংলাদেশ। আমাদের কেউ থামাতে পারবে না।

কৃষি নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা সাশ্রয়ী হোন। কোনো জায়গা খালি রাখবেন না। যেখানে যা পারেন তা চাষাবাদ করেন। আপনারা আমাদের সহযোগিতা করেন।

এর আগে বেলা ১১টার কিছু পর নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জের পূর্বাচল ৪ নম্বর সেক্টরে ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-১ নির্মাণ কাজের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন শেখ হাসিনা। এতে সভাপতিত্ব করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি, জাইকার বাংলাদেশ অফিসের প্রতিনিধি ইচিগুচি তোমোহাইড।

বুইউ

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে