Dr. Neem on Daraz
Victory Day

দেশে পৌঁছেছে আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরীর মরদেহ


আগামী নিউজ | আগামী নিউজ প্রতিবেদক প্রকাশিত: মে ২৮, ২০২২, ১১:৫১ এএম
দেশে পৌঁছেছে আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরীর মরদেহ

ঢাকাঃ প্রয়াত সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও গীতিকার আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরীর মরদেহ ঢাকায় পৌঁছেছে। শনিবার (২৮ মে) বেলা ১১টা ৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তার মরদেহ বহনকারী বিমান পৌঁছায়। সেখানে সরকারের পক্ষ থেকে মরদেহ গ্রহণ করেনে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। ঢাকায় নামাজে জানাজাসহ আনুষ্ঠানিকতা শেষে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে স্ত্রীর কবরের পাশে তার মরদেহ চিরশায়িত করা হবে।

গত ১৯ মে ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে লন্ডনের বার্নেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী। তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। তিনি বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন।

জানা গেছে, আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরীর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তার প্রিয় স্বদেশ ভূমিতে স্ত্রীর কবরের পাশে তার মরদেহ দাফনের ব্যবস্থা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এর আগে গত ২০ মে পূর্ব লন্ডনের ব্রিকলেইন মসজিদে আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরীর প্রথম জানাজা হয়। পরে পূর্ব লন্ডনের ঐতিহাসিক শহীদ আলতাব আলী পার্কের শহীদ মিনারে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যসহ সর্বস্তরের মানুষ তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এরপর ২৩ মে সোমবার বাংলাদেশ হাইকমিশন আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরীর স্মরণে পূর্ব লন্ডনে এক মিলাদ মাহফিল ও শোকসভার আয়োজন করে।

শুক্রবার (২৭ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরীর মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সর্বস্তরের জনতার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হবে। সেখানে তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হবে।

বিকেল সাড়ে ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরীর নামাজে জানাজা হবে। সেখান থেকে বিকেল ৪টায় তার মরদেহ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জাতীয় প্রেস ক্লাবে নেওয়া হবে। এরপর বিকেল সাড়ে ৪টায় মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাকে সেখানে স্ত্রীর কবরের পাশে সমাহিত করা হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াসহ যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার সঙ্গে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় প্রেস ক্লাব সার্বিক সহযোগিতা করছে।

১৯৩৪ সালে বরিশালে জন্ম নেওয়া গাফ্‌ফার চৌধুরী ১৯৫৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ অনার্স পাস করে ইত্তেফাক সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার রাজনৈতিক পত্রিকা ‘চাবুক’ এর দায়িত্ব নেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রবাসী সরকারের মুখপাত্র ‘জয়বাংলা’য় কাজ করেন গাফ্‌ফার চৌধুরী। ১৯৭৪ সালে অসুস্থ স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে চলে যান তিনি। এরপর সেখানেই স্থায়ী হন। লন্ডন থেকে দেশের সংবাদপত্রে নিয়মিত কলাম লেখেন তিনি।

১৯৪৬ সালে স্কুলের ছাত্র অবস্থায় কলাম লেখা শুরু করেন আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী। বরিশাল হিতৈষী পত্রিকায় তার প্রথম লেখার শিরোনাম ছিল ‘সমাচার সন্দেশ’। ৬০ বছর ধরে মিঠাকড়া, ভীমরুল, তৃতীয় মত, কাছে দূরে, একুশ শতকের বটতলায়, কালের আয়নায়, দৃষ্টিকোণ ইত্যাদি শিরোনামে কলাম লিখেছেন তিনি। 

কলাম ছাড়াও কবি, নাট্যকার ও ঔপন্যাসিক হিসেবে পরিচিত তিনি। বঙ্গবন্ধু হত্যার ওপর লেখা ‘পলাশী থেকে ধানমণ্ডি’ তার বিখ্যাত নাটক।

১৯৫০-এর দশকে সাংবাদিকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। পেশাগত কাজে সফলতার স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক, স্বাধীনতা পদক, ইউনেস্কো পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু পুরস্কার, মানিক মিয়া পদকসহ দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক পদক ও পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।

এমবুইউ 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে