Dr. Neem on Daraz
Victory Day

হাজার মানুষের বিপরীতে ১ জন পুলিশ!


আগামী নিউজ | নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১১, ২০১৯, ১০:১০ পিএম
হাজার মানুষের বিপরীতে ১ জন পুলিশ!

ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম নগরীতে ৭০ লাখ জনগণের জন্য মাত্র ৭ হাজার পুলিশ সদস্য কাজ করছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। তিনি বলেন, ৪১ বছর আগে যখন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উদ্ভব হলো, তখন থেকে চট্টগ্রাম কতটুকু বদলেছে আর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কতটুকু বদলেছে- এটা আপনারা নিজেরাই বুঝতে পারছেন। ৭০ লাখ বসবাসকারীর বিপরীতে সাত হাজার পুলিশ! অর্থাৎ এক হাজার মানুষের বিপরীতে একজন পুলিশ। একজন পুলিশ দিয়ে এক হাজার নাগরিকের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা কীভাবে সম্ভব?

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম পুলিশ লাইন্সে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য এসব কথা বলেন আইজিপি।

আইজিপি বলেন, আমরা যদি আমাদের আশপাশের দেশগুলোর দিকে তাকাই, সেখানে দেখবেন আড়াইশ জনের জন্য একজন পুলিশ, তিনশ জনের জন্য একজন পুলিশ। আন্তর্জাতিক যে স্ট্যান্ডার্ড, সেখানে চারশ জনের জন্য একজন পুলিশের কথা বলা হয়েছে। সেই মাইলফলক ছুঁতে আমাদের এখনও অনেক দূর যেতে হবে।

জনগণই পুলিশের শক্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, সার্বিকভাবে বাংলাদেশে পুলিশ ও মানুষের যে অনুপাত, সেটা ৮০০ থেকে ৯০০ জনের জন্য একজন পুলিশ। আমরা মনে করি, এটি কোনোভাবেই যথেষ্ট নয়। এজন্যই আমরা সবসময় আপনাদের কাছেই ফিরে আসি। জনগণই আমাদের শক্তি। এজন্যই আমরা কমিউনিটি পুলিশিং বলি, বিট পুলিশিং বলি। পুলিশিংয়ের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমরা আপনাদের কাছে আসি। কারণ আমরা মনে করি, আপনারাই আমাদের বড় শক্তি।

সাধারণ পুলিশ সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, এ নগরকে শান্তিময় রাখতে অহর্নিশ পরিশ্রম করে যাচ্ছে তারা। আমি তাদের জানাই আজকের এই দিনে মোবারকবাদ, ধন্যবাদ। তারা তাদের সর্বোচ্চ দিয়ে এ নগরকে নিরাপদ ও শান্তিময় করে তোলার জন্য তাদের এই যে প্রচেষ্টা, সেই প্রচেষ্টার কারণেই এ নগর বড় হচ্ছে, বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি হচ্ছে। নিশ্চয়ই নগরে সেই পরিবেশ আছে বলেই নগরায়ন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্টের জন্য সাসটেইনেবল পিস-এর ওপর গুরুত্বারোপ করে আইজিপি বলেন, আমরা জানি, সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্টের জন্য প্রয়োজন হয় সাসটেইনেবল পিসফুলনেস। নগরে সাসটেইনেবল পিসের জন্য প্রয়োজন হয় সাসটেইনেবল সিকিউরিটি। সেই সাসটেইনেবল সিকিউরিটি যাদের দেয়ার কথা, আমরা অহর্নিশ সাসটেইনেবল পিস দিয়ে যাচ্ছি।

বিভিন্ন সময়ে পুলিশের আত্মত্যাগের কথা তুলে ধরে আইজিপি বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার প্রাক্কালে আমাদের পূর্বসূরিরা ২৬ মার্চ রাতে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে সর্বপ্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করে অকাতরে নিজেদের বিলিয়ে দেন। আমাদের রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল অতীত। ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে আপনারা দেখেছেন অগ্নিসন্ত্রাস রুখে দিয়েছিল এই বাংলাদেশের পুলিশ। নিজের বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে। আমরা আমাদের ১৭ জন সহকর্মীকে হারিয়েছি। প্রায় এক হাজারের বেশি সহকর্মী পঙ্গু অবস্থায় এখনও বিছানায়।

মাদক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০১৬-তে জঙ্গি দমন করতে গিয়ে আমাদের অনেক সাহসী পুলিশ অফিসার মৃত্যুবরণ করেছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। আমরা হার মানিনি। এখন আমরা যুদ্ধ করছি মাদকের বিরুদ্ধে। আমরা আশাবাদী, জনগণ যেভাবে আমাদের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছে, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের মতো মাদককেও এ দেশ ছাড়া করব ইনশাআল্লাহ।

‘ভিশন ২০৪১’ বাস্তবায়নে পুলিশকে অন্যতম সহযাত্রী দাবি করে আইজিপি বলেন, আসুন, সেই নিরাপদ বাংলাদেশে, যেখানে থাকবে না কোনো মাদক, থাকবে না কোনো সন্ত্রাস, থাকবে না কোনো জঙ্গিবাদ। সেদিনের আশায় আমরা আজকের বাংলাদেশকে নিয়ে যাই ২০৪১-এ। যে ভিশন ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আমরা তার অন্যতম সহযাত্রী।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, জাতীয় সংসদের হুইপ শামসুল হক চৌধুরী, সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, ওয়াসিকা আয়শা খান, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. অনুপম সেন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রশাসক এম এ সালাম, নগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হাসিনা মহিউদ্দিন, চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহাবুবুল আলম, সিএমপির সাবেক কমিশনার আবদুল জলিল মণ্ডল, সাবেক কমিশনার ও অতিরিক্ত আইজিপি ইকবাল বাহার, চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি খোন্দকার গোলাম ফারুকসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

আগামী নিউজ/এমআরএস/এআর

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে