Dr. Neem on Daraz
Victory Day

‘সন্তানদের ভালো কাজে ব্যস্ত না রাখলে উগ্রবাদে জড়াবে’


আগামী নিউজ | আগামী নিউজ প্রতিবেদক প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১০, ২০১৯, ০৪:১১ পিএম
‘সন্তানদের ভালো কাজে ব্যস্ত না রাখলে উগ্রবাদে জড়াবে’

ঢাকা: সন্তানদের ভালো কাজে ব্যস্ত না রাখলে উগ্রবাদে জড়াবে বলে মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, সন্তানদের সবসময় ভালো কাজে ব্যস্ত রাখতে হবে যাতে তারা উগ্রবাদে জড়িয়ে না পড়ে।

আমাদের সন্তানেরা অদম্য মেধাবী। নিজের সন্তানদের দিকে সর্বদা খেয়াল রাখার আহ্বান জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সন্তানদের সবসময় ভালো কাজে ব্যস্ত রাখতে হবে যাতে তারা উগ্রবাদে জড়িয়ে না পড়ে। তিনি বলেন, অতীতে টার্গেট করে দেশের নানা প্রান্তে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর দেশ হিসেবে পরিচিত করার অপচেষ্টার অংশ হিসেবে বাছাই করে নানা শ্রেণি পেশার মানুষ হত্যা করা হয়।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টার বসুন্ধরায় দুদিন ব্যাপী উগ্রবাদ বিরোধী জাতীয় সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একথা বলেন।

ইসলামে জঙ্গিবাদের কোন স্থান নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের হাজার বছরের ইতিহাসে জঙ্গিবাদের কোন স্থান নেই। এদেশের শান্তিপ্রিয় মানুষ কখনো জঙ্গিবাদ পছন্দ করেনা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সমাজকে বুঝতে হবে কেন তাদের সন্তান জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ছে। জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ার কারন খুঁজে বের করতে হবে। জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বেসরকারি সাহায্য সংস্থা ও বিশেষজ্ঞদের ধন্যবাদ জানান মন্ত্রী।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, আধুনিক বিশ্বে প্রযুক্তির অবাধ ও সহজলভ্য ব্যবহারের ফলে পথভ্রষ্ট, নীতিভ্রষ্ট ও বিকৃতমনা আদর্শ তথা ভয়ঙ্কর বিপদজনক উগ্রবাদও দ্রুত বিস্তৃতি লাভ করেছে পৃথিবীর আনাচে-কানাচে। সেজন্য আজ উগ্রবাদ পরিবার সমাজ রাষ্ট্র ও আঞ্চলিক গণ্ডি পেরিয়ে বৈশ্বিক রূপ লাভ করেছে। অশিক্ষা, দারিদ্র্য, ধর্মের অপব্যবহার ও উগ্র সাম্প্রদায়িকতা সহিংস উগ্রবাদের দিকে নিয়ে যায়। উগ্রবাদ প্রসারে আমরা দেখেছি  ভূরাজনৈতিক ও সাম্রাজ্যবাদী চেতনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

তিনি বলেন, উগ্রবাদের মত একটি বিকৃত ধ্বংসাত্মক আদর্শ ও শক্তিশালী প্রতিপক্ষের মোকাবেলায় প্রয়োজন সম্মিলিত প্রয়াস। সম্মিলিত প্রয়াসের লক্ষ্যে আজ জাতীয় এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। উগ্রবাদের মোকাবেলা করা শুধু আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্তব্য এটা ভাবলে ভুল হবে। এই উগ্রবাদ প্রতিরোধে সমাজের সকল স্তরের সদস্যদের সমন্বিত করার যে প্রচেষ্টা আমরা ইতোমধ্যে গ্রহণ করেছি, যার প্রতিফলন এই সম্মেলন। সকল স্টেইকহোল্ডারদের নিয়ে উগ্রবাদ বিরোধী জাতীয় সম্মেলন করা হয়েছে এটি একটি পজিটিভ বার্তা দিচ্ছে আমাদের সবাইকে। বাংলাদেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গি দমনে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশ আজ জঙ্গি দমনে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে আলোচনার বিষয় হয়েছে। সেই সাথে বাংলাদেশ কিভাবে জঙ্গিবাদ রুখতে সক্ষম হচ্ছে তা আজ পৃথিবী জানতে চায়। জঙ্গি দমনে পৃথিবী জুড়ে একটি রোল মডেল হিসেবে বাংলাদেশ আত্মপ্রকাশ করেছে।

আইজিপি আরো বলেন, জঙ্গিবাদ দমনে বা নিয়ন্ত্রণে এই সাফল্য সহজভাবে আসেনি এর পেছনে রয়েছে অনেকের আত্মোৎসর্গ, সকলের সম্মিলিত প্রয়াস ও বাংলাদেশ পুলিশের অকুতোভয় সদস্যদের লেগে থাকা এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর গৃহীত ‘জিরো টলারেন্স টু টেরোরিজম’ নীতির কারণে এই সাফল্য এসেছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম বলেছেন, যারা বাংলাদেশের উন্নয়ন চান, তারা কখনোই আমাদের দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ডে নিয়োজিত বিদেশী উন্নয়ন সহযোগিদের হত্যা করতে পারেন না।

উগ্রবাদী আচরনের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার জন্য সবার প্রতি আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, শুধু মাদ্রাসার ছাত্ররা জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ে বিষয়টি এমন নয়, বর্তমানে উচ্চশিক্ষিত ও সম্পদশালী পরিবারের সন্তানেরাও জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ছেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার জঙ্গি কার্যক্রমকে একটি বৈশ্বিক সমস্যা আখ্যায়িত করে এটি দমনে সবার অংশগ্রহণের উপর জোর দেন। তিনি বলেন উপযুক্ত ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে এবং সবার অংশগ্রহণে উগ্রবাদ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

তিনি বলেন, সমাজের আলেম শ্রেণি বিশেষ করে আহলে হাদিসে বিশেষজ্ঞদের এই কাজে লাগানো যেতে পারে যারা উগ্রপন্থীদের সঠিক ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে বুঝিয়ে শুনিয়ে ভালো পথে নিয়ে আসবেন।

সম্মেলনের সভাপতি ও ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম অনুষ্ঠানে আগত অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ দেন। বেসরকারি, স্বেচ্ছাসেবী ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতা দূর করে এখন থেকে একযোগে কাজ করে অধিকতর ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা করেন।

জঙ্গি দমনে বিশেষ অবদান রাখা বাংলাদেশ পুলিশের এই চৌকশ কর্মকর্তা আরো বলেন উগ্রবাদের বীজ সমাজ থেকে নির্মূল করতে পারলেই দেশ থেকে সব ধরনের উগ্রবাদী কর্মকাণ্ড দমন করা সম্ভব হবে।

আগামী নিউজ/এমআরএম/এমআর 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে