Dr. Neem on Daraz
Victory Day

মানুষ আল্লাহ নন


আগামী নিউজ | এস এ চৌধুরী প্রকাশিত: এপ্রিল ২২, ২০২০, ০৯:১২ পিএম
মানুষ আল্লাহ নন

ছবি সংগৃহীত

মানুষ আল্লাহ নন: “হাপড়ে লোহা দিলে লাল হয়ে যেমন কয়লা, লোহা, আগুন এক আগুনের রং ধারণ করে,আবার আগুন থেকে লোহা বের করে আনলে লোহা পূর্বের রূপ ধারণ করে অথবা লোহা লোহাই থাকে, আগুন হয় না। তদ্রুপ মানুষ সাধনার বলে আল্লাহর ছেফাতি গুণে গুণান্বিত হয় বটে, কিন্তু তাতে আল্লাহর গুণের কোন কমতি হয় না এবং ঐ গুণ আল্লাহর গুণেরও অংশ নয়। অনুরূপভাবে মুরীদ পীর সাহেব থেকে যতই ফায়েজ পাক পীরের মওজুদের কোন কমতি হয় না”।

এরপর পরস্পরের কিছু হালের কথা আলাপ হলো। প্রসঙ্গছিল আল্লাহর অস্তিত্ব সম্বন্ধে । তাঁর পীর সাহেব আল্লাহরঅস্তিত্ব সম্পর্কে যা বলেছেন হুজুর তা হুবহু বললেন-“আল্লাহ আকারও নন, নিরাকারও নন। আসলে, আল্লাহ আল্লাহরই মতন, তার কোন তুলনা নেই। বুঝলে তো বাবা? আল্লাহ ছাড়া কিছুই নেই। সমস্ত সৃষ্টিই আল্লাহর প্রকাশ। সমস্ত সৃষ্টি আল্লাহর ছায়া। গাছের ছায়া যেমনগাছ নয় তেমনি মানুষ এবং অন্যান্য সৃষ্টিও আল্লাহ নয়।
তবে মানুষ, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ), গাছপালা কোন কিছুই আল্লাহ থেকে আলাদা নয়”। হুজুর তখন ভীষণ হালে ছিলেন। প্রথমে আস্তাগফের পড়ে পরে বললেন- “বাবা মানুষ সাধনা বলেই আল্লাহর গুণাবলী অর্জন করে, তখন সে আল্লাহতেই বিলীন হয়ে যায়, তখন আল্লাহ থেকে নিজেকে তার কোন পার্থক্য করতে পারে না।

এ অবস্থায়ই মানুষ বলে ফেলে ‘আনাল হক’ আসলে এটা মানুষের কথা নয়, আল্লাহরই কথা, শুধু বের হয় মানুষের মুখ দিয়ে। কোরআন আল্লাহর বাণী বটে। কিন্তু বের হয়েছে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর মুখ দিয়ে। কোরআন, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আর আল্লাহ এবং সব কিছুই সম্পর্কহীন তবে আলাদা নয়”। এটা বলেই হুজুর তওবা করলেন। আল্লাহর কথা কি আল্লাহর থেকে আলাদা? ”সমস্ত সৃষ্টি জগত হচ্ছে একটা নাটক আর এ নাটকের নায়ক হচ্ছে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) নিজে। অন্যান্য নবী (আ:) গণ হচ্ছেন তারই প্রকাশের কিছু অংশ। তিনিই সব সৃষ্টির কেন্দ্রবিন্দু”। মিলাদের কেয়াম সম্পর্কে বললেন- “আমার জানামতে, মোজাদ্দেদ আলফেসানী (র:) কোনদিন কেয়াম করেন নাই। সেজদার অর্থই তাজিম করা, কেয়াম মানেই তাজিম।

এখানে সেজদা যদি আল্লাহর তাজিমের জন্য হয় তবে কিয়াম করা শিরকের পর্যায়ে পড়ে নয় কি? আমার কিন্তু কেয়াম করতে খুশীই লাগে। কার কি হাল বুঝার উপায় নেই। মানুষের আসল পরিচয় বা আইডেন্টিফিকেশন তার নিয়তে । যখন মানুষ আল্লাহর রঙ্গে রঞ্জিত হয় তখন ঐ মানুষকে দেখা আর আল্লাহকে দেখার মত হওয়া সমান কথা। যারা আল্লাহকে স্বপ্নে দেখেছেন তারা মানুষের আকৃতিতেই দেখেছেন। এর কারণ হলো ঐ মানুষের মুখে তখন আর মানুষের মুখ থাকে না, আল্লাহর গুণাবলী ধারণ করে"। হায় আল্লাহ, তুমি অন্তরের খবর জান, হুজুর তো বলেছেন, “বাবা আসল জিনিস হলো মানুষের ক্বালব,এটা পরিস্কার করতে পারলেই হলো। মানুষের সাথে
চলা-ফেরায় বিভিন্ন কথা বাড়িয়ে এটা ময়লা হয়ে অন্ধকার হয়ে যায়।

দুনিয়ার অনেক সমস্যাই আমার ঘাড়ে, আমি নিরূপায়, হায় আল্লাহ, আমি আপনার সাহায্য চাই”। হুজুর তো সব সময়ই বলেন-“লাহাওলা ওয়ালাকুয়াতা ইল্লাবিল্লাহিল আলিয়্যিল আজিম”। অর্থাৎ “আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কারও কোন কাজ করার ক্ষমতা নাই" । শুধু তাই নয়, “আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া মানুষের কোন ইচ্ছাও মনে উদয় হয় না। মানুষকে আল্লাহ স্বাধীনতা দিয়েছেন। যে স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া যায় তার নাম কি স্বাধীনতা? আসলে স্বাধীনতা কাউকে দেয়া যায় না। মানুষ মোটেই স্বাধীন নয়, তার নিজস্ব কোন অস্তিত্ব নেই, তার কোন ইচ্ছা করারও ক্ষমতা নেই”।“আল্লাহর প্রোগ্রামের মধ্যেই সবকিছু থাকে, সে কারণেকোন কিছু ঘটলে তা নিয়ে কোন মন্তব্য করা ঠিক নয়।


কারণ আল্লাহর প্রোগ্রাম ছাড়া কোন কিছুই হয় না।মিমের পর্দা সম্পর্কে হুজুর বললেন- “রসুল (সাঃ)-এর চরিত্র আল্লাহর চরিত্রের উপর প্রতিষ্ঠিত। আল্লাহ তাঁর সমস্ত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য দিয়ে রসুলকে পাঠিয়েছেন তাঁর সমস্ত চরিত্র রূপায়নের জন্য। পার্থক্য শুধু এই যে,দুনিয়াতে আল্লাহ আদি ও অনন্ত এবং স্রষ্টা, রাসুল (সাঃ) সৃষ্ট। আর সবই এক।”


১৯৯০ সালের ২৩ ডিসেম্বর, রোজগার সম্পর্কে হুজুর বললেন-“মানুষ হলো আবেদ বা গোলাম। আপনি পরিশ্রম করে যা রোজগার করবেন তার মালিক আপনি নন। যেমন ক্রীতদাস। আল্লাহ বেহেস্তের বিনিময়ে মমিন বান্দার
জানমাল সব খরিদ করে নিয়েছেন।১৯৯১ সালের জানুয়ারি মাসের পহেলা তারিখ। মসীহী জামাতের গানের ক্যাসেট নিয়ে এবং তার সাথে তাদের কিছু বই-পুস্তক নিয়ে হুজুরকে দেখাতে গেলাম। প্রসঙ্গ উঠল আদম (আঃ) এ গন্দম খাওয়া ও পরবর্তীতে দুনিয়ায় অবতরণ সম্পর্কে। তারপর আলোচনা উঠল আল্লাহর সম্পর্কে। হুজুর বললেন- “সমস্ত সৃষ্টি আল্লাহর আকস বা
ছায়া এবং তার প্রকাশ। আল্লাহ বলতে আমি যা বুঝি তা যদি বলি তবে আমার অবস্থা হবে মুনসুর হেল্ল্যাজের মত।


আমি বুঝি তবে বলতে পারব না। আল্লাহ তার ভালোবাসায় কোন অংশীদার চান না, যেখানে আল্লাহর ভালোবাসা সেখানে কোন কিছুর স্থান নাই। তাই আল্লাহর সাথে কোন শরীক করা যাবে না। এখানেই শিরকের প্রশ্ন। লা’র তরবারী দিয়ে আল্লাহর অস্তিত্ব ছাড়া সব কিছুই ধ্বংস করে দিতে হবে।  

সংকলনঃ ড. নিম হাকিম

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে