Dr. Neem on Daraz
Victory Day

চা-চিনি আর তামাক একই!


আগামী নিউজ | ড. নিম হাকিম প্রকাশিত: অক্টোবর ৩, ২০১৯, ১১:৫৯ এএম
চা-চিনি আর তামাক একই!

মিষ্টি খাবার মানেই জিভে জল আর মিষ্টি মানেই চিনি। অথচ এই চিনিই তামাকের মতো ক্ষতিকর! এমন অবিশ্বাস্য তথ্যই দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের ইউনির্ভাসিটি অব লিভারপুলের গবেষক সায়মন ক্যাপওয়েল। চিনিকে নতুন তামাক হিসেবেও আখ্যা দিয়েছেন তিনি।

তার এ গবেষণার ফলাফল জানার পর বিশ্বের বিভিন্ন খাদ্যপণ্য প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্যে চিনির পরিমাণ কমিয়ে আনবে বলে আশা করছেন সায়মন। চিনির ক্ষতিকর দিক নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরির জন্য একটি ক্যাম্পেইন দলের সদস্য হয়ে কাজ করছেন সায়মন।

আমরা চা পান করি। চায়ের উৎস হচ্ছে উদ্ভিদ যার বৈজ্ঞানিক নাম Camellia sinensis.

আমাদের দেশে চায়ের প্রচলন যতদুর যানা যায় ব্রিটিশ আমল থেকে। ব্রিটিশরা পৃথিবী জুড়ে তাদের দখলকৃত রাজ্যে তিনটি জিনিস প্রচলন করেছেন আর তা হলো- চা,চিনি ও তামাক অর্থাৎ Tea, Tobbaco ও Sugar সংক্ষেপে TTS.

চায়ের মধ্যে আছে: L- theanine, theophylline and bound caffeine.

এসব উপাদানের মধ্যে যে ক্যাফেইন আছে তা ব্যাথা নাশকের কাজ করে কিন্তু ব্যাথা নাশকের কাজটি করতে চেয়ে আমাদের স্নায়ুর মারাত্মক ক্ষতি করে। একবার চায়ের অভ্যাস হয়ে গেলে তা ছাড়াও কঠিন। চায়ের মধ্যে ওজন অনুপাতে কফির চেয়ে বেশী ক্যাফেইন আছে (২ থেকে ৪ শতাংশ)পর্যন্ত।

এবার দেখা যাক – চা আমাদের আর কি কি শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি করে:

১. অতিরিক্ত গরম চা পানে খাদ্যনালীতে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।

২.চা হজম হতে ৬ ঘণ্টা সময় লাগে যা পাকস্থলীর জন্য ক্ষতিকর। চা ও কফি ছাড়া কোন তরল পদার্থই হজম হতে ৬ ঘণ্টা সময় লাগে না।

৩.অতিরিক্ত চা পান ঘুম নষ্ট করে। মাথা ব্যাথা ও মানসিক চাপ বা ধকল বাড়ায়।

৪.গরম চা মুখ গহ্বরের ঝিলির ক্ষতি করে এবং খাদ্য ও পানির সঠিক স্বাদ পাওয়া যায় না।

৫. খালি পেটে চা পানে হজম শক্তি নষ্ট হয়। হজমে ব্যবহৃত জারক রস তরলীকৃত ও নিস্তেজ করে।

চা উৎপাদনে রাসায়নিক সার ও মারাত্মক ক্ষতিকর কীটনাশক ব্যবহার হয়। এমন অনেক কীটনাশক ব্যবহার হয় তা ২০০০ সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় ও তার ক্ষতিকর প্রভাব রয়ে যায়। চায়ের সাথে ওইসব মারাত্মক কীটনাশক মানুষের পেটে গিয়ে রক্তে মিশে যায়। ফলে মরণঘাতি ক্যানসারসহ অন্যান্য ভয়াবহ ও মারাত্মক নিরাময়হীন রোগ হতে পারে। অবশ্য জৈব পদ্ধতি বা রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ছাড়া উৎপাদিত ব্লাক বা গ্রিন টি উদ্দীপনা বা উত্তেজনা বৃদ্ধি করে।

যারা চা চাষ করে: চা শ্রমিকদের তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার আসাম রাজ্য থেকে জোড় পূর্বক ধরে নিয়ে এসে চা চাষে বাধ্য করে। তারা আজও সভ্যতার কৃতদাস। সামান্য মুজুরিতে তাদের কঠিন শ্রম দিতে হয়। ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া ও সু-চিকিৎসার তেমন কোন ব্যবস্থা নেই। গর্ভবতী মায়েদের গর্ভকালীন কোন পুষ্টিকর খাবার ব্যবস্থা নেই। গর্ভ ও প্রসূতী কালীন কোন ছুটির ব্যবস্থা নেই। দুগ্ধ-পোষ্য বাচ্চাদের কাপড়ের ঝুলায় রেখে বাগানে কাজ করতে হয়। এসব শিশু ও বাগানের বিচরণরত কুকুর একসাথে ঘুমায়। মারাত্মক  কীটনাশক অতিরিক্ত মাত্রায় ব্যবহারে তার বিষক্রিয়া বাতাসে মিশে এসব শিশু, মা ও শ্রমিকদের নাক দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে ভয়াবহ রোগ-ব্যাধির জন্ম দেয়।

অনেক ক্ষেত্রে তাদের বংশগতিতে বিকলাঙ্গতা দেখা যায়। তারা যাতে সুস্থ্য চিন্তা ভাবনা ও অধিকার আদায়ে সোচ্চার না হয় তার জন্য এখনও আছে সেই ব্রিটিশ প্রচলিত বাংলা মদের রেশন ব্যবস্থা। দিনে কাজ, রাতে মদ খেয়ে বুদ হয়ে ঘুমানো।

অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ে এবং সন্তান পয়দা, যাতে করে যত বেশী সন্তান উৎপাদন ততবেশী শ্রমিক-চা বাগান মালিকদের এতে শুধুই লাভ আর লাভ।

চা পানে এত ভয়ানক ক্ষতি, আর চা-শ্রমিকদের প্রতি বংশ পরম্পরায় মালিকদের এই অমানবিক আচরণ, এতে কি চা পান করা যায় ?

 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে