দিনাজপুরের পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর বরখাস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০২২, ১১:১৯ এএম

দিনাজপুরঃ আর্থিক অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহার করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের পৌর-১ শাখার উপসচিব মোহাম্মদ ফারুক হোসেনের সই করা প্রজ্ঞাপনে বুধবার সন্ধ্যায় এ আদেশ দেয়া হয়।

মেয়রের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদকে) চিঠি দেয়া হয়েছে।

মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম বিএনপির রংপুর বিভাগের সহসাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে ৬৪ লাখ টাকা বরাদ্দ থাকলেও স্থানীয় সরকার বিভাগের নির্দেশনা ছাড়াই ২ কোটি ৪৭ লাখ ৫৯ হাজার ৬০৫ টাকার টেন্ডার করা এবং পরবর্তী সময়ে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে পরবর্তী ৩ বছরের বরাদ্দ থেকে তা সমন্বয়ের কারণে কোনো টেন্ডার করা হয়নি, যা বিধিসম্মত হয়নি বলে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।

২০২০-২০২১ অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটে পৌরসভার গরিব, দুস্থ ও অসহায় ব্যক্তিদের সহায়তার জন্য ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। এর মধ্যে ১৪ লাখ ৩২ হাজার ৭৯০ টাকা দুস্থদের কাছে বিতরণ প্রক্রিয়ায় কোনো প্রচলিত বিধিবিধান প্রতিপালিত হয়নি। বর্তমান মেয়র দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে তার কর্মকালীন ১৯৩ জন মাস্টাররোলে কর্মচারী নিয়োগে কোনো বিধিবিধান অনুসরণ করেননি এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিয়োগ দিয়েছেন।

ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের ধার্য করা নিবন্ধন ও নবায়ন ফি থেকে আয় দিনাজপুরের প্রাক্তন জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় চালকদের প্রশিক্ষণ, ইজিবাইক হলুদ, নীল রং দ্বারা চিহ্নিতকরণ, ডাটাবেজ তৈরি করার সিদ্ধান্ত ছিল। এর কিছুই করা হয়নি।

আদায় করা অর্থ সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বেতন-ভাতা সম্মানি খাতে ব্যয় করা হয়েছে। দিনাজপুর পৌরসভার দাখিল করা ৬১টি বিলবোর্ডের ভাড়া বাবদ বর্তমানে ১১ লাখ ৬২ হাজার ১৫০ টাকা দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া রয়েছে। টাকাগুলো আদায়ে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, দিনাজপুর বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে পৌরসভার জমি ভাড়ার টাকা দাবি করে ২৪ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করায় অব্যবস্থাপনা তৈরি হয়েছে। এ কারণে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এনে উন্নয়ন বরাদ্দ প্রাপ্তি থেকে পৌরসভা বঞ্চিত হয়েছে।

২০১০ সালের ৩০ মে স্থানীয় সরকার বিভাগের ৭৯৮ নম্বর স্মারকে পৌরভবন নির্মাণের জন্য বরাদ্দ করা ৩৮ লাখ টাকা ভবন নির্মাণ না করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন, বোনাস, মেয়র ও কাউন্সিলরদের সম্মানিভাতা প্রদান করেছেন। এসব কারণে মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমকে অসদাচরণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে তাকে মেয়রের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।

পৌর মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বরখাস্তের বিষয়ে কিছু জানি না। আমার বিরুদ্ধে ২০১২ সালে ২০১৫ সালে দুদক তদন্ত করে আমাকে অব্যাহতি দিয়েছে। এবারও আমি অব্যাহতি পাব।’

এসএস