1. প্রচ্ছদ
  2. জাতীয়
  3. সারাবাংলা
  4. রাজনীতি
  5. রাজধানী
  6. আন্তর্জাতিক
  7. আদালত
  8. খেলা
  9. বিনোদন
  10. লাইফস্টাইল
  11. শিক্ষা
  12. স্বাস্থ্য
  13. তথ্য-প্রযুক্তি
  14. চাকরির খবর
  15. ভাবনা ও বিশ্লেষণ
  16. সাহিত্য
  17. মিডিয়া
  18. বিশেষ প্রতিবেদন
  19. ফটো গ্যালারি
  20. ভিডিও গ্যালারি

বরগুনা- বেতাগী-ঢাকা নৌরুটে সিন্ডিকেটের দাপট, অসহায় যাত্রীরা

সাইদুল ইসলাম মন্টু, বেতাগী (বরগুনা) প্রতিনিধি প্রকাশিত: জানুয়ারি ৭, ২০২২, ১০:১৭ পিএম বরগুনা- বেতাগী-ঢাকা নৌরুটে সিন্ডিকেটের দাপট, অসহায় যাত্রীরা
ছবিঃ আগামী নিউজ

বরগুনা- বেতাগী-ঢাকা নৌরুটে সিন্ডিকেটের দাপটে দিন দিন অসহায় হয়ে পড়ছে যাত্রীরা। এ পথে ছয়টি লঞ্চের রুট পারমিট (সার্ভিস)‘র মধ্যে চারটিই এমকে শিপিং লাইনস কোম্পানির। 

অবশ্য সিন্ডিকেটের হাতে যাত্রীদের জিম্মি হওয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তবে এমকে শিপিং লাইনসের মালিক মাসুম খান দাবি করেন, ‘চারটি নয়, এ রুটে একটি লঞ্চের মালিকানা তার। বাকি তিনটি লঞ্চ মিলেমিশে পরিচালনা করা হয়।’

জানা গেছে, বরগুনা-ঢাকা নৌপথে ছয়টি লঞ্চ চলাচলের অনুমতি থাকলেও এর মধ্যে রাজারহাট-বি, পূবালী-১, শাহরুখ-২, রাজহংস-৮ এ চারটি এমকে শিপিং লাইনসের নিয়ন্ত্রণে এমনটাই জানান এমকে শিপিং লাইনসের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা। এর মধ্যে রাজারহাট-বি, পূবালী-১ তাঁদের নিজস্ব। রাজহংস-৮–এর মালিক বিআইডব্লিউটি‘র একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।  এমকে শিপিংয়ের কাছে ঐ মালিক লঞ্চটি ছয় লাখ টাকায় মাসিক চুক্তিতে ভাড়া দেন। আর শাহরুখ-২ মাসিক ১০ লাখ টাকা ভাড়ায় চালাচ্ছে একই প্রতিষ্ঠান। শাহরুখ-২–‘র মালিক জানান, ১০ লাখ টাকায় তাঁরা এমকে শিপিংয়ের মাসুম খানের কাছে লঞ্চটি মাসিক ভাড়া দেওয়া হয়েছে। এ নৌপথের বাকি দুটি লঞ্চের মধ্যে এমভি ফারহান-৮–‘র মালিক এমপি গোলাম কিবরিয়া এবং অগ্নিদুর্ঘটনাকবলিত এমভি অভিযান-১০–‘র মালিক হামজামাল শেখসহ চারব্যক্তি।

এ রুটে নিয়মিত চলাচলকারী বেতাগী পৌরশহরের বাসিন্দা কাজী শহীদুল ইসলাম সহ একাধিক যাত্রী অভিযোগ করেন, আগের তুলনায় লঞ্চগুলোর মান ও গতি বৃদ্ধি পেলেও গত ছয় বছর ধরে একচেটিয়া ব্যবসা চলছে এ নৌপথে। এখানে প্রতিদিন দুটি লঞ্চ চলার কথা থাকলেও প্রায়শই একটি লঞ্চ চলাচল করে। অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করা লঞ্চে গাদাগাদি-ঠাসাঠাসি করে গন্তবে পৌছতে বাধ্য হন যাত্রীরা। 

বরগুনা পাবলিক পলিসি ফোরামের আহ্বায়ক হাসান ঝন্টু বলেন, এক কোম্পানীর দাপটে অন্য কোনো মালিক এ পথে লঞ্চ চালাতে এসে টিকতে পারছেন না। ফলে একাধিক লঞ্চ না থাকায় যাত্রীরা জিম্মি হয়ে পড়েছে। এক মালিকের পাঁচটি লঞ্চ থাকুক, তাতে অসুবিধা নেই। সে ক্ষেত্রে অন্য মালিক যাঁরা আছেন, তাঁদেরও সুযোগ দেওয়া উচিত। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকেই অনিয়ম করে তাঁরা বিশেষ সুবিধা নিয়ে নৌপথটি এমন করে ফেলেছেন। 

বরগুনা-ঢাকা নৌপথে এমকে শিপিংয়ের দাপটে অন্য কোনো মালিক এ পথে লঞ্চ চালাতে এসে টিকতে পারছেন না। ফলে অবস্থাটা এমন দাঁড়িয়েছে, ভাড়া দেওয়া, নয় তো বিক্রি করে ফেলা ছাড়া উপায় থাকেনা। ঘেটে দেখাগেছে বিগত কয়েক বছর ধরে এমনই অবস্থা চলে আসছে।

২০১৫ সালের দিকে বরগুনা-ঢাকা নৌপথে চারটি লঞ্চ চলাচল করত। এগুলো ছিল এমভি যুবরাজ-২, যুবরাজ-৪, কিং সম্রাট ও মৌসুমী-২। এর মধ্যে যুবরাজ–২, ৪ ও কিং সম্রাট লঞ্চের মালিক ছিলেন ঢাকার আওলাদ হোসেন। এমভি টিপু-৩–‘র মালিকানা ছিল এমভি গোলাম কিবরিয়ার। ২০১৫ সালের শেষ দিকে এমভি টিপু-৩ লঞ্চটি কিনে নেন এমকে শিপিং কোম্পানির মালিক মাসুম খান। পরে সেটির নাম বদলে হয় মৌসুমী-২। ঐ লঞ্চ দিয়েই এমকে শিপিং বরগুনা নৌপথে লঞ্চ ব্যবসায় নামে। পরে আওলাদ হোসেন তাঁর মালিকানাধীন যুবরাজ-২ ও ৪ বিক্রি করে দেন। লঞ্চ দুটি কিনে নেন এমকে শিপিংয়ের মাসুম খান। সুন্দরবন-২ নামের একটি লঞ্চের মালিক প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে ২০১৮ সালে এমকে শিপিংয়ের মাসুম খানের কাছে লঞ্চটি বিক্রি করে দেন। এভাবেই এ নৌপথের লঞ্চ ব্যবসায় এমকে শিপিংয়ের এক নায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়। 

সুন্দরবন-২ লঞ্চের মালিক পান্না মিয়া গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, কিছই করার নেই, মান–সম্মানের ভয়ে বাধ্য হয়ে লঞ্চটি বিক্রি করে দিয়েছি।

২০২১ সালের ফ্রেরুয়ারি মাসে এমভি অভিযান-১০ ও মার্চের দিকে ফারহান-৮ নামের দুটি লঞ্চ বরগুনা থেকে বেলা তিনটা ও ঢাকা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা আগের সেই সময়সূচি নিয়ে পুনরায় সার্ভিস চালু করে। এতে এমকে শিপিংয়ের লঞ্চগুলো প্রতিযোগিতার মুখে পড়ে। শুরু হয় গতির লড়াই, কার আগে কে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে।

এমকে শিপিং লাইনসের মালিক মাসুম খান গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিশেষ ব্যক্তিরা নতুন লঞ্চ দিয়ে আয়ের জন্য অনেক চেষ্টা চালিয়েছে। এখন ব্যর্থ হয়ে আমার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। এক সময় এ রুটে তেমন যাত্রী চলাচল করতোনা। আমরাই এ রুটকে জনপ্রিয় করতে পরিশ্রম করেছি। আমার লঞ্চের সেবা ও মান ভালো, তাই যাত্রীও যাতায়াত করে অধিক। আগে লঞ্চ থেকে চাঁদা তোলা হতো, এখন স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও সংবাদকর্মীদের  কারণে তা বন্ধ হয়েগেছে।

আগামী নিউজ/এসএস

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে
Small Banner