1. প্রচ্ছদ
  2. জাতীয়
  3. সারাবাংলা
  4. রাজনীতি
  5. রাজধানী
  6. আন্তর্জাতিক
  7. আদালত
  8. খেলা
  9. বিনোদন
  10. লাইফস্টাইল
  11. শিক্ষা
  12. স্বাস্থ্য
  13. তথ্য-প্রযুক্তি
  14. চাকরির খবর
  15. ভাবনা ও বিশ্লেষণ
  16. সাহিত্য
  17. মিডিয়া
  18. বিশেষ প্রতিবেদন
  19. ফটো গ্যালারি
  20. ভিডিও গ্যালারি

৬ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ মুক্ত দিবস

ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৬, ২০২১, ১২:০০ পিএম ৬ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ মুক্ত দিবস
ডলুরা স্মৃতিসৌধ ও শহীদ মিনার সুনামগঞ্জ। ছবি: সংগৃহীত

‘সুনামগঞ্জ মুক্ত দিবস’ ৬ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এ দিন সুনামগঞ্জ শহর হানাদার বাহিনী মুক্ত হয়। তৎকালীন সুনামগঞ্জ মহকুমা শহর ছেড়ে পিছু হটে পাকবাহিনী। হানাদার মুক্ত হয়ে সুনামগঞ্জ শহর ‘জয় বাংলা- জয় বঙ্গবন্ধু’ শ্লোগানে মুখরিত হয়। 

এ দিন সুনামগঞ্জ শহরের প্রতিটি এলাকার ঘরে ঘরে ওড়ে স্বাধীনতার লাল সবুজের পতাকা। অবশ্য সুনামগঞ্জ মুক্ত দিবসের দিনেই সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের ছাত্রনেতা মুক্তিযোদ্ধা তালেব উদ্দিনসহ ৩ মুক্তিযোদ্ধাদের নির্মমভাবে হত্যা করে পালায় পাক হায়েনারা। এই ঘটনাটি ছিল সুনামগঞ্জের মুক্তিকামী মানুষের জন্য বেদনাদায়ক। 

সুনামগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আবু সুফিয়ান জানান, সুনামগঞ্জকে শত্রুমুক্ত করতে ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর বনগাঁও মুক্তিযোদ্ধাদের কোম্পানি হেডকোয়ার্টারে সুনামগঞ্জ শহরকে শত্রুমুক্ত করার জন্য মুক্তিযোদ্ধারা ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। মেজর মুত্তালিব ছাড়াও মিত্র বাহিনীর ক্যাপ্টেন রঘুনাথ ভাটনগর ও ক্যাপ্টেন যাদব সম্মিলিতভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।

তিনি জানান, মুক্তিযোদ্ধাদের ‘এ’ কোম্পানিকে যোগীরগাঁও এলাকা, ‘বি’ কোম্পানিকে হালুয়াঘাট এলাকা, ‘সি’ কোম্পানিকে হাসননগর এলাকা, ‘ডি’ কোম্পানিকে ভাদেরটেক ও লালপুর এলাকা, ‘ই’ কোম্পানিকে মল্লিকপুর এলাকা (সিলেট-সুনামগঞ্জ রাস্তা বিচ্ছিন্ন করা), ‘ডিইএফ’ কে কোম্পানি বেরীগাঁও ও কৃষ্ণতলা এলাকা (অতিরিক্ত অস্ত্র ও গোলাবারুদ সংরক্ষণ), ‘এডিএম’ কোম্পানিকে : রসদ পরিবহন এবং এক প্লাটুন মুক্তিযোদ্ধাকে বনগাঁওয়ে সদর দফতরে রাখা হয়। সুনামগঞ্জ মুক্ত করার পাসওয়ার্ড দেওয়া হয়েছিল ‘খরগোস’।

১৯৭১ সালের এই দিন সুনামগঞ্জ মহকুমায় মুক্তিযোদ্ধারা সুনামগঞ্জ শহরকে পাকহানাদার মুক্ত করেন। হানাদার বাহিনীর পতনের পর এ এলাকার সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়ে মুক্তির উল্লাস। আনন্দ উদ্বেলিত কণ্ঠে ‘ জয়বাংলা ধ্বনি’ আর হাতে প্রিয় স্বদেশের পতাকা নিয়ে ছোটাছুটি করতে থাকে তরুণ-যুবক সবাই। তিনি আরও জানান, যাদের আত্মত্যাগে দেশ শত্রুমুক্ত হয়েছিল তাদের স্মরণে ‘হানাদার মুক্ত দিবস’ পালনে সরকারি উদ্যোগ ও পৃষ্ঠপোষকতার দাবি সুনামগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধাসহ সুশীল সমাজের। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালো রাতে পাকসেনারা ঝাঁপিয়ে পড়েন বাংলাদেশের মানুষের ওপর। তাদের প্রতিরোধ করতে সারা দেশের মতো সুনামগঞ্জবাসীও গড়ে তুলেছিল দুর্বার আন্দোলন। ৫ নম্বর সেক্টরের অন্তর্ভূক্ত ছিল সুনামগঞ্জ। কমান্ডার ছিলেন মীর শওকত আলী।

সুনামগঞ্জ মহকুমায় চারটি সাব সেক্টরে ভাগ করা হয়। সেক্টরগুলো হলো-চেলা সাব-সেক্টর, টেকেরঘাট সাব-সেক্টর, বালাট সাব-সেক্টর, ভোলাগঞ্জ সাব-সেক্টর। চেলা সাব-সেক্টরে কমান্ডার ছিলেন ক্যাপ্টেন সৈয়দ হেলাল উদ্দিন, টেকেরঘাট সাব-সেক্টরের দায়িত্ব নেন মেজর মোসলেহ উদ্দিন, বালাট সাব-সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন, মেজর এম এ মোতালেব ও ভোলাগঞ্জ সাব-সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন নাজিম কয়েছ চৌধুরী।

সুনামগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার হাজী নূরুল মোমেন জানান, ১৩ অক্টোবর উল্লেখযোগ্য যুদ্ধ হয় ছাতক সিমেন্ট কোম্পানিতে একটানা ৩৬ ঘণ্টা। এ যুদ্ধে প্রায় ৪০ জন পাকসেনা নিহত ও অর্ধশত পাকসেনা আহত হন। এ যুদ্ধে ১৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। তিনি আরও ২১ অক্টোবর সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার বর্তমান সুরমা ইউনিয়নের বেরীগাঁও-এ যুদ্ধ হয় বেরীগাঁও-এ পাকসেনাদের কেম্পানি হেডকোয়াটার ছিল। এ যুদ্ধের পর পাকসেনারা পিছু হটে। এরপর ছাতক উপজেলা গোবিন্দগঞ্জ যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে বেশির ভাগ ফলাফল মুক্তি বাহিনীর অনুকুলে আসে।

৫ ডিসেম্বর ক্যাপ্টেন রঘুনাথ ভাটনগর ও ক্যাপ্টেন যাদব বনগাও থেকে আমবাড়ি আসেন। বালাটস্থ রিজার্ভ ও গেরিলা গ্রুপগুলোর মধ্য থেকে বাছাইকৃত মুক্তিযোদ্ধার সমন্বয়ে গঠিত একটি বিশেষ কোম্পানি (বালাট কোম্পানি) স্বাধীনতার প্রায় মাস খানেক আগেই বিশ্বাম্ভরপুরে অবস্থান করছিল। যৌথ কমান্ডের নির্দেশে এটি গৌরারং হয়ে অগ্রসর হতে থাকে।

সুনামগঞ্জ পৌঁছে কোম্পানিটির অর্ধেক বুলচান্দ হাইস্কুলে এবং অপর অর্ধেক জয়কলস হাইস্কুলে অবস্থান নেয়। জয়কলসে অবস্থানরত প্লাটুন ভারত থেকে দেশে প্রত্যাগমনকারী বিপুল সংখ্যক শরণার্থীর নিরাপদ চলাচলে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। মেজর মুত্তালিব যোগীরগাঁও থেকে রওয়ানা দিয়ে সুনামগঞ্জ শহরে পৌঁছলেও দখলদার বাহিনী তার আগের (৫ ডিসেম্বর) রাতেই সুনামগঞ্জ শহর ছেড়ে পালায়। ৬ ডিসেম্বর সকালে বিজয়ীর বেশে সুনামগঞ্জে প্রবেশ করে মুক্তিযোদ্ধারা স্থানীয় জনগণ মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে আনন্দ উল্লাস করতে থাকেন।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, দিবসটি উপলক্ষে আজ সোমবার সকালে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধারা জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে এসে জড়ো হবেন। পরে সুনামগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে জেলা প্রশাসক ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের প্রশাসকের নেতৃত্বে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের হয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে গিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। র‌্যালিতে সুনামগঞ্জের জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূরুল হুদাসহ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেবেন।

জেলা প্রশাসক আরও জানান, আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেবেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখবেন, সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক ও সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ।

আগামীনিউজ/নাসির 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে
Small Banner